Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ১২ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, আই নিউজ

প্রকাশিত: ১৬:০৫, ১২ আগস্ট ২০২৩

কুলাউড়ায় জঙ্গি আস্তানা: যেভাবে অভিযান শেষ হলো 

ঘটনাস্থলে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি) সদস্যরা। ছবি- আই নিউজ

ঘটনাস্থলে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি) সদস্যরা। ছবি- আই নিউজ

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িটিতে অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সন্দেহে ১০ জনকে আটক করেছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। দশ জন ছাড়াও তাদের সঙ্গে আরও তিনটি শিশুও ছিলেন। শুক্রবার রাত থেকে শুরু করে আজ শনিবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শ্বাসরুদ্ধকর এক কর্মযজ্ঞ শেষে তাদেরকে আটক করতে সক্ষম হয় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। 

পুলিশ জানায়, জঙ্গি আস্তানা শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টা থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়। শনিবার ভোরে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটে অতিরিক্ত কমিশনার মো. আশরাফুজ্জামান ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এদিন ভোরেই ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি) সদস্যরা। 

ভোররাত থেকে শুরু হয় অভিযান। ‘অপারেশন হিল সাইড’ নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ অভিযান চলে প্রায় ৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কোনও ধরনের জোর-জবরদস্তি ছাড়াই সন্দেহজনক জঙ্গিদের আটক করতে সক্ষম হয় সিটিটিসি। 

অভিযান শেষে পুলিশের এই বিশেষায়িত ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, কুলাউড়ার জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে আটক ১০ জনের বাড়ি দেশের বিভিন্ন এলাকায়।

আগে থেকেই তথ্য ছিল সিটিটিসির কাছে 
সিটিটিসি প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, 'আমাদের কাছে তথ্য ছিল নতুন একটি উগ্রবাদী সংগঠন ব্যাপক সংখ্যক লোকদের উগ্রবাদের দীক্ষা দিয়েছে। সেসব লোকজন হিজরতের জন্য ঘর থেকে বের হয়েছেন। শুরুতে আমাদের কাছে তথ্য ছিল মৌলভীবাজারের যে কোনো একটি পাহাড়ে তারা তাদের আস্তানাটি তৈরি করেছে। গতকাল আমরা চূড়ান্ত তথ্য পাই।'

তিনি বলেন, 'ঢাকায় আমরা একজনকে গ্রেপ্তার করেছি, যিনি এই জঙ্গি আস্তানা থেকে তার পরিবারকে আনার জন্য গিয়েছিলেন,' 

জঙ্গি আস্তান থেকে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ ও ৬ জন নারী। এছাড়া ৩ শিশুও ছিল।

আটক 'জঙ্গি'দের নাম-পরিচয়: 
১) শরীফুল ইসলাম (৪০), পিতা-ওমর আলী, মাতা-ছমিরুন, গ্রাম-দক্ষিন নলতা, থানা ও জেলা-সাতক্ষীরা। ২) হাফিজ উল্লাহ (২৫), পিতা-আবুল কাশেম, মাতা-জহুরা খাতুন, সাং-কানলা, থানা-ইটনা, জেলা-কিশোরগঞ্জ। ৩) খায়রুল ইসলাম (২২), পিতা-নজরুল ইসলাম, মাতা-সানোয়ারা বেগম, গ্রাম-রসুলপুর, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়নগঞ্জ। ৪) রাফিউল ইসলাম (২২), পিতা-সাইফুল ইসলাম, মাতা-রেবা সুলতানা, গ্রাম-মাইজবাড়ী, থানা-কাজীপুর, জেলা-সিরাজগঞ্জ। ৫) মেঘনা (১৭), স্বামী-খায়রুল ইসলাম, পিতা-মানিক মিয়া, মাতা-আলেয়া বেগম, গ্রাম-রসুলপুর, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়নগঞ্জ। ৬) আবিদা (১২ মাস), পিতা-খায়রুল ইসলাম, মাতা-মেঘনা, গ্রাম-রসুলপুর, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়নগঞ্জ।

 

৭) শাপলা বেগম (২২), পিতা-মজনু মল্লিক, স্বামী-আঃ ছত্তার, মাতা-আলেয়া বেগম, গ্রাম-শ্রীপুর, থানা-আটঘরিয়া, জেলা-পাবনা। ৮) জুবেদা (১৮ মাস), পিতা-আঃছত্তার, মাতা-শাপলা বেগম, গ্রাম-শ্রীপুর, থানা-আটঘরিয়া, জেলা-পাবনা। ৯) হুজাইফা (০৬), পিতা-আঃছত্তার, মাতা-শাপলা বেগম, গ্রাম-শ্রীপুর, থানা-আটঘরিয়া, জেলা-পাবনা। ১০) মাইশা ইসলাম (২০), পিতা-সাইদুল ইসলাম, স্বামী-সোহেল তানজীম রানা, গ্রাম-চাদপুর (পিতার বাড়ী), থানা ও জেলা-নাটোর। ১১) মোছাঃ সানজিদা খাতুন (১৮), পিতা-আব্দুল জলিল, স্বামী-সুমন মিয়া, গ্রাম-নিজবলাই, থানা-শরিয়াকান্দি, জেলা-বগুড়া। ১২) আমিনা বেগম(৪০), পিতা-জলমত খা, স্বামী-শফিকুল ইসলাম, গ্রাম-দক্ষিন নলতা, থানা-তালা, জেলা-সাতক্ষীরা। ১৩) মোছাঃ হাবিবা বিনতে শফিকুল (২০), পিতা-শফিকুল, মাতা-আমিনা বেগম, গ্রাম-দক্ষিন নলতা, থানা-তালা, জেলা-সাতক্ষীরা।

যা যা পাওয়া গেল কুলাউড়ায় জঙ্গি আস্তানায় 
সিটিটিসি প্রধান বলেন, 'বিনা বলপ্রয়োগে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। তাদের হেফাজতে নেওয়ার পরে আমরা জঙ্গি আস্তানায় ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৩ কেজি বিস্ফোরক ও ৫০টির মতো ডেটোনেটর উদ্ধার করি। যা দিয়ে গ্রেনেডসহ হাই এক্সপ্লোসিভ তৈরি করা হয়।'

আই নিউজ/এইচএ 

আরও পড়ুন
Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়