Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৬ ১৪৩২

আই নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:০০, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

চা শিল্প রক্ষায় ১২ সুপারিশ বাগান মালিকদের 

শ্রীমঙ্গলের একটি চা বাগান। ছবি- সংগৃহীত

শ্রীমঙ্গলের একটি চা বাগান। ছবি- সংগৃহীত

দেশে এখন চা শিল্পের অবস্থা অন্যান্য যেকোনো সময়ের চেয়ে ভালো। চা উৎপাদনে ১৭০ বছরের রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েছে চায়ের উৎপাদন। তবে, দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এই চা শিল্পের পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্কটও দেখছেন চা বাগান মালিক ও চা সংশ্লিষ্টরা।

তাই দেশের অর্থকরী এই কৃষিপণ্য রক্ষায় সরকারের কাছে তারা ১২ সুপারিশ পেশ করেছেন বাগান মালিকরা। এগুলো বাস্তবায়ন করা না গেলে সম্ভাবনার চা শিল্প এক সময় অস্তিত্ব হারাবে, দাবি তাদের।

গত রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ২৫টি বাগান মালিক চা শিল্পের চলমান সমস্যা তুলে ধরেন।

চা বাগান মালিকরা জানান, রপ্তানীমুখী কৃষি পণ্য হিসেবে চা দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। দিন দিন অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ায় কমেছে রফতানির পরিমাণ। দেশে চায়ের উৎপাদন না বাড়লে প্রতিবছর বৈদেশিক মূদ্রা দিয়ে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে চা আমদানি করতে হতো। চা শিল্পের সাথে পরোক্ষভাবে কয়েক লাখ শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তার জীবন-জীবিকা জড়িয়ে আছে। প্রতিবছর দেশে চায়ের উৎপাদন বাড়লেও বর্তমানে শিল্পটি কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছে। বিক্রয় মূল্যের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এখন চা বাগান পরিচালনা কঠিনসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাগান মালিকরা জানান, চা শিল্পের এই সংকটের জন্য যেসব কারণ দায়ি সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- চোরাচালানের মাধ্যমে নিম্নমানের চায়ের প্রবেশ। পঞ্চগড়ের সমতলের বাগানে নি¤œমানের চা উৎপাদন ও নিয়ম না মেনে সরাসরি কারখানা থেকে চা বিক্রি। চায়ের নিলাম মূল্য না বাড়লেও শ্রমিক মজুরি ও রেশন, জ্বালানী, সার ও ঔষধের দাম বৃদ্ধি। চা প্যাকেটজাতকরণের সাথে জড়িত কয়েকটি কোম্পানি কর্তৃক চায়ের নিলাম বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যাংক ঋণ পরিশোধের উচ্চ হার।

বিরাজমান সংকট নিরসন করে চা শিল্প রক্ষায় বাগান মালিকরা ১২টি সুপারিশ পেশ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- নিলামে চায়ের সর্বনিম্ন মূল্য ৩৫০-৪০০ টাকা নির্ধারণ, ন্যায্যমূল্য পেতে বিডিং পদ্ধতিতে উন্নতমানের চা নিলাম, চোরাইপথে দেশে চায়ের প্রবেশ বন্ধ, সমতলের চায়ের মান বৃদ্ধি ও বিধিসম্মতভাবে বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা করা ও ছোট কোম্পানি ও বাগানকে প্যাকেজিংয়ের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান। এছাড়াও বাগান মালিকরা সংকট নিরসনে আরও যেসব সুপারিশ করেছেন সেগুলো হলো- প্যাকেজিংয়ের নূন্যতম পরিমাণ ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ করা, উন্নতমানের প্যাকেটজাত চা রফতানির সুযোগ সৃষ্টি করা, কৃষি ব্যাংকের ঋণের শর্ত সহজীকরণ ও সুদের হার হ্রাস করা, চা বাগানের আয়ের বহুমূখী উৎস সৃষ্টি করতে ‘চা পর্যটন’র সুযোগ দেওয়া, ছোট বাগানগুলোকে ৫ বছরের ট্যাক্স হলিডে প্রদান ও বাগানের জায়গা দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলারক্ষায় প্রয়োজন হলে তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

‘টি প্ল্যান্টার্স সিলেট ডিভিশনের’ সদস্য এবং প্যারাগণ গ্রুপ টি এস্টেটের উপদেষ্টা মুফতি এম হাসান বলেন, ‘দিন দিন চায়ের উৎপাদন খরচ বাড়ছে, বিপরীতে কমছে চায়ের নিলাম মূল্য। প্রতি কেজি চায়ের নিলাম মূল্য ৬০-৭০ টাকা কমেছে, অথচ দফায় দফায় বাড়ছে রোগবালাই দমনের ঔষধ ও সারসহ উৎপাদন সংশ্লিষ্ট পণ্যের দাম। এই অবস্থায় চা বাগানগুলো ঠিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। লোকসান গুনতে গুনতে এখন মালিকরা বাগান বন্ধ করা ছাড়া কোন উপায় দেখছেন না।

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়