ইমরান আল মামুন
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা প্রস্তুতি
অনেক আগেই প্রকাশিত হয়েছে চলতি বছরের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি। এই পরীক্ষার অনলাইনে আবেদন শুরুর তারিখ ছিল ১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩ এবং শেষ তারিখ ছিল ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩. চলতি মার্চ মাসের ৬ তারিখ সোমবার হতে ৭ তারিখ মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রবেশপত্র ডাউনলোড করা যাবে।
সবকিছু ঠিক থাকলে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১০ মার্চ ২০২৩ শুক্রবার। তারমানে পরীক্ষার আর মাত্র ৬ দিন বাকি রয়েছে। এই সময়টাতে নতুন করে প্রস্তুতি নেওয়ার তেমন কিছুই নেই। তাই শিক্ষার্থীদের উচিৎ পুরোনো পড়াগুলো ভালোভাবে রিভিশন করে নেওয়া।
আজকে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার শেষ মুহূর্তে কি কি প্রস্তুতি নেওয়া যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো:
পরীক্ষার মানবন্টন:
যারা এখনো মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার মানবন্টন সম্পর্কে জানেন না । তাদের জন্য বলছি, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার মোট নম্বর ৩০০.যার মধ্য ২০০ নম্বর এসএসসি ও এইচএসসি জিপিএর উপর। মানে
• এসএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ১৫ গুন = ৭৫ নম্বর (সর্বোচ্চ)
• এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ২৫ গুন= ৭৫ নম্বর (সর্বোচ্চ)
আর ভর্তি পরীক্ষায় অনুষ্ঠিত হবে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ । যার মধ্যে জীববিজ্ঞান ৩০; রসায়নবিদ্যা ২৫; পদার্থবিদ্যা ২০; ইংরেজি ১৫; সাধারণ জ্ঞান ১০ নম্বর থাকবে।
শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি:
এই অল্প সময়ে নতুন করে কিছু মুখস্ত না করাই ভালো। পুরনো পড়াগুলো ভালো করে রিভিশন দেওয়া উচিত। সেই সাথে ইংরেজিসহ অন্যান্য বিষয়ের বানানগুলো ভালোভাবে লিখে প্র্যাকটিস করা দরকার।
সাধারণ জ্ঞান বিষয়ের জন্য সাম্প্রতিক বিষয়াবলী, বাংলাদেশের নদ নদী, মুক্তিযুদ্ধ, সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, ক্ষুদ্রতম বৃহত্তম, বিশ্ব ইতিহাস ও অন্যান্য বিষয়গুলো একটু ভালোভাবে পড়লে ১০ নম্বর কমন পাওয়া যায়।
এছাড়া পদার্থ রসায়ন ও জীব বিজ্ঞানের জন্য বিগত বছরের মেডিকেলে আসা প্রশ্নগুলো পড়লেই ভালো নম্বর আশা করা যায়। কারণ এ সকল পরীক্ষায় বিগত বছরের প্রশ্ন থেকে অনেক প্রশ্ন কমন পড়ে। তাছাড়া ছোট ছোট প্রশ্নের জন্য মূল বই বেশি করে রিভিশন দেওয়া উচিত। এতে করে বানান ভুলের সম্ভাবনা অনেক কম থাকে।
পরীক্ষার হলে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে:
১০০ নম্বরের জন্য সময় থাকবে মাত্র ৬০ মিনিট। আর এই স্বল্প সময়ে এতগুলো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়া খুব সহজ কাজ নয়। ভর্তি নিশ্চিত করতে চাইলে কমপক্ষে ৭০/৭৫ শতাংশের বেশি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে হবে। আর টার্গেট যদি থাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ তাহলে কমপক্ষে ৯০ শতাংশ প্রশ্নের সঠিক উত্তর নিশ্চিত করতে হবে। উত্তর দেওয়া শুরু করার আগে কমপক্ষে ৫ মিনিট ভালোভাবে প্রশ্নটি পড়ে নেওয়া উচিৎ।
যদিও প্রথম দেখায় প্রশ্ন সহজ মনে হতে পারে। কিন্তু তারপরেও ভালোভাবে বুঝে শুনে উত্তর দিতে হবে। ম্যাথসহ বেশ কিছু প্রশ্ন থাকে যেগুলো উত্তর করার জন্য কিছুক্ষণ ভেবে নিতে হয়। আমার দিক থেকে পরামর্শ থাকবে এরকম প্রশ্নগুলো অর্ধেক সময় পরে দাগানোর জন্য। যে প্রশ্নগুলোর উত্তর সহজ বা নিশ্চিত সেগুলো আগে দেওয়া উচিৎ।
পরীক্ষার আগের ২/৩ দিন:
পরীক্ষার আগের কয়েকটি দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই কয়েকটি দিন সকল প্রকার সামাজিক অনুষ্ঠান কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলা উচিৎ। এর ফলে মনোযোগ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া পরীক্ষার আগের দিন অতিরিক্ত রাত জেগে পড়াশোনা না করে ভালোভাবে ঘুমিয়ে নেওয়া দরকার। ঘুম ভালো হলে মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকে। আর যদি ঘুম ভালো না হয় তাহলে পরীক্ষার হলে অনেক জানা প্রশ্নের উত্তর মনে নাও আসতে পারে।
তাছাড়া কোথায় সিট পড়বে, সিট কেমন হবে , পরীক্ষার হলের পরিবেশ কেমন হবে ইত্যাদি নিয়ে আগের দিন ভাবনা চিন্তা করে সময় নষ্ট করা দরকার নেই। তবে সম্ভব হলে আগের দিন পরীক্ষার সিট দেখে আসলে ভালো হয়। এতে করে সিট খোঁজার টেনশন মাথা থেকে সরে যায়।
যেহেতু ৭ মার্চ এডমিট কার্ড ডাউনলোড করার শেষ দিন । তাই শেষ দিনের অপেক্ষা না করে প্রথম দিন অর্থাৎ ৬ মার্চ এডমিট কার্ড ডাউনলোড করাই বুদ্ধিমানের কাজ। পরীক্ষার হলে যা যা নিবে তা দু-তিন দিন আগেই গুছিয়ে রাখবে। যেহেতু একদিনই পরীক্ষা, তাই কোন কিছু মিস করা যাবে না কিংবা ভুল করা যাবে না।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা এক বিরাট যুদ্ধ। প্রস্তুতি ভালো থাকলে যে নিশ্চিত চান্স পাবে ব্যাপারটা এরকম নয়। সারা বছর ভালোভাবে প্রিপারেশন নিয়ে এক ঘন্টার পরীক্ষা ভালো নাও হতে পারে। অনেকের ভালো পরীক্ষা দিয়েও চান্স নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে কোনরকম হতাশ হওয়া যাবে না। কারণ মেডিকেল ছাড়াও আরো অনেক ভালো ভালো লেখাপড়ার সুযোগ রয়েছে। ফার্মেসি, বায়োকেমিস্ট্রি, জেনেটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি মেডিকেলের মতোই অনেক ভালো বিষয়।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে আপনি এর সকল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। আর পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, সন্তান যদি কোন কারনে চান্স না পায়। তাহলে সে ক্ষেত্রে তাদেরকে দোষারোপ না করে পাশে থেকে মানসিকভাবে শক্তি যোগানো উচিৎ। সেই সাথে অন্যান্য পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য উৎসাহ দেওয়া উচিৎ। সকল পরীক্ষার্থীদের জন্য রইল আমার আন্তরিক ভালবাসা ও শুভকামনা।
- মাস্টার্স পরীক্ষার ফলাফল ২০২৫
- এসএসসি বোর্ড চ্যালেঞ্জ এর রেজাল্ট ২০২৩
- এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩ | এসএসসি ফলাফল
- অনার্স ১ম বর্ষ পরীক্ষা রুটিন ২০২৩
- এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩ কবে হবে
- চবি ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৫
- ‘বাঁচতে চাইলে পরীক্ষায় এ্যাটেন্ড কর’, ছাত্রীকে শাবি শিক্ষক
- ওসমানী মেডিকেলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, আন্দোলনে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা
- স্বপ্ন চার্টার্ড একাউন্টেন্ট হওয়া
টিউশনী করে পরীক্ষা দিয়ে গোল্ডেন এ প্লাস পেল সরকারি কলেজের সুমাইয়া - গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩