Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ১২ এপ্রিল ২০২৫,   চৈত্র ২৯ ১৪৩১

সাজু মারছিয়াং, শ্রীমঙ্গল

প্রকাশিত: ১১:২০, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২
আপডেট: ১১:২১, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২

শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিকদের অর্থ কার্ড নিতে ইউপি সদস্যকে ঘুষ দিতে হয় ৩শ টাকা!

চা শ্রমিকদের অর্থ সহায়তার কার্ড নিতে গেলে জনপ্রতি ৩০০ টাকা বাড়তি দেয়ার কথা বলেন ইউপি সদস্য!

চা শ্রমিকদের অর্থ সহায়তার কার্ড নিতে গেলে জনপ্রতি ৩০০ টাকা বাড়তি দেয়ার কথা বলেন ইউপি সদস্য!

সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় চা-শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি'র অন্তর্গত এককালীন নগদ অর্থ সহায়তার কার্ড বিতরণে শ্রমিকদের কাছ থেকে বাড়তি ৩০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (২১সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের কালীঘাট ইউনিয়নের খাইছড়া চা বাগানের নাট মন্দিরে ভুক্তভোগী চা শ্রমিকরা জড়ো হয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে ইউপি সদস্য দয়াল বুনার্জী ও তার ছেলে মনিশংকর বুনার্জীর বিরুদ্ধে বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেন।

সমাবেশে সবিতা বাড়াইক, বিপুল ভুইঁয়া ও হারুনসহ ১০-১২ জন ভুক্তভোগী চা শ্রমিক জানায়, ইউপি সদস্য দয়াল মেম্বারের ছেলে আমাদেরকে বলে আইডি কার্ড যে দিছো টাকার জন্য সরকার থেকে তোমাদের টাকা আসছে  ৫ হাজার টাকা। এখন ৩০০ টাকা দেও, আমি কার্ড দিচ্ছি। তখন আমরা বলি যে, ৩০০ টাকা কই পামু। তখন মেম্বারের ছেলে বলে, টাকা না দিলে তুমি মেম্বারের কাছে যাইবা। আর ৩০০ টাকা নিয়ে যাইবা। পরে ৩০০ টাকা দেওয়ার পর আমাদেরকে অর্থ সহাতার কার্ড দিয়েছে।

ভুক্তভোগী চা শ্রমিকরা আরো জানায়, রাতে ঘরে ঘরে গিয়ে মেম্বারের ছেলে জানায় তোমাদের ৫ হাজার টাকার কার্ড আইছে, তোমরা ৩০০ টাকা করে না দিলে কার্ড পাইবায় না। ৩০০ টাকা দিতে হবে। তখন মেম্বারের কাছে গেলে, মেম্বার বলে এখন কার্ড দেওয়া যাবে না। এটা আমি ঘরে পৌছাবো। তারপর তিন-চার ঘর থেকে ঋণ করে ৩০০ টাকা এনে দেওয়ার পর আমার কার্ড দিছে। ভুক্তভোগীরা জানায়, টাকা না দিলে কার্ড দেবে না তাই বাধ্য হয়ে ৩০০ টাকা দিয়ে কার্ড নিয়েছি।’

সমাবেশে খাইছড়া চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি পুস্প দাশ পাইনকা বলেন, ‘দুইদিন আগে সমাজসেবা থেকে শ্রমিকদের কার্ড আসার পর ইউপি চেয়ারম্যান কার্ড পাঠিয়েছে মেম্বারের কাছে। চেয়ারম্যান মেম্বারকে বলছে পঞ্চায়েত সভাপতি ও সর্দারকে সাথে নিয়ে তুমি কার্ড বিতরণ করবে। কিন্তু মেম্বার দয়াল বুনার্জী আমাদেরকে সে কথা বলে নাই। সন্ধ্যার পর মেম্বার আমাকে রাস্তায় পেয়ে জানায় যে, সরকার থেকে শ্রমিকদের এককালিন ৫ হাজার টাকার কার্ড আসছে, আমি বিতরণ করেছি। কিন্তু বিতরণের পর জানতে পেরেছি, যে কার্ড দিয়ে শ্রমিকদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে বাড়তি টাকা নিচ্ছে দয়াল মেম্বারের ছেলে মনিশংকর বুনার্জী। কার্ডটা নেও টাকা দেও, টাকা না দিলে কার্ড দেব না। ৫ হাজার টাকা পাওয়ার আগে যে সে ৩০০ টাকা করে নিচ্ছে এর কারণটা আমরা জানতে চাই?’

তবে টাকা নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য দয়াল বুনার্জী বলেন, ‘আমি সব ছেলেদেরকে ডেকে জানতে চেয়েছি তারা কেনো টাকা নিয়েছে, তখন তারা বলছে মন্দিরের জন্য নিয়েছে । কার্ড দিয়ে টাকা নেওয়ার কোন যুক্তি নেই। আমি বাগানের মুরুব্বি ও পঞ্চায়েত কমিটিকে নিয়ে বসবো, ছেলেগুলা যে টাকা উত্তোলন করেছে তার একটা সঠিক সমাধান করবো।

এবিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, চা- শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়নে উপহার স্বরুপ এই টাকা দেওয়া হচ্ছে। এই ৫ হাজার টাকা চা শ্রমিকদের জন্য বিশাল টাকা। এই টাকা বিতরণের ক্ষেত্রে যদি কার্ডের জন্য বাড়তি টাকা নেওয়া হয় তাহলে এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোরতম আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আইনিউজ/এইচএ

আইনিউজে আরও পড়ুন-


দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি

সৌদি আরবে মেয়েকে নির্যাতনের খবরে মায়ের আহাজারি-কান্না

গ্রিসের বস্তিতে বাংলাদেশীদের মানবেতর জীবন, অধিকাংশই সিলেটি

গ্রিসে পাঁচ বছরের ভিসা পাবে বাংলাদেশিরা

Green Tea
সিলেট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়