Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৩ ১৪৩২

প্রকাশিত: ১৫:০২, ১৬ মে ২০১৯
আপডেট: ১৩:১৮, ২১ মে ২০১৯

কবি হেনরি স্বপনের জামিন; বাদীকে আদালতের ভর্ৎসনা

বরিশালঃ  ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারের তিনদিনের মাথায় বরিশালের কবি ও মুক্তমনা লেখক হেনরি স্বপনকে জামিন দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হেনরি স্বপনের জামিনের জন্য আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। দীর্ঘ শুনানি শেষে মামলার বাদী আপত্তি না করায় বিচারক মো. শামীম আহমেদ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত হেনরি স্বপনের জামিন মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি বাদীকে ধর্মযাজক লাকাবা লিএল গোমেজকেও ভর্ৎসনা করেন বিচারক। বিকেলে বরিশাল কেন্দ্রীয় করাগারে জামিনের আদেশ পৌঁছালে হেনরি স্বপনকে মুক্তি দেয়া হয়। কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের জড়িয়ে ধরেন হেনরি স্বপন। এ সময় তিনি বলেন, হয়রানির জন্য আমার বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে। তবে আমাকে গ্রেফতারের পর সাংবাদিক ও সুশীল সমাজ পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। এজন্য আমার জামিনের পথ অনেকটা সহজ হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা টের পেয়েছে হেনরি স্বপন একা নয়, তার পাশে অনেকে আছেন। এজন্য সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞা জানাই আমি। জামিন শুনানিতে হেনরি স্বপনের পক্ষে অংশ নেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ সাজুসহ ১০ আইনজীবী। আইনজীবী সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ সাজু বলেন, কবি হেনরি স্বপনের জামিনের বিষয়ে আবেদন করার পর বাদীকে বিচারক কোনো আপত্তি আছে কিনা জানতে চান। ধর্মযাজক লাকাবা লিএল গোমেজ তার উত্তরে কোনো আপত্তি নেই জানান। এ সময় আদালত তাকে ভর্ৎসনা করেন। কারণ সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকে লেখালেখির মাধ্যমে খ্রিষ্টান ধর্মের অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে থানায় মামলা করেছিলেন ধর্মযাজক লাকাবা লিএল গোমেজ। ওই মামলার পরপরই গ্রেফতার করা হয় হেনরি স্বপনকে। আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। গ্রেফতারের তিনদিনের মাথায় আসামির জামিনের জন্য বাদী আদালতে এসে জামিনে অনাপত্তি জানান। তিনদিনের মধ্যে এমন কি ঘটল তা বাদীর কাছে আদালত জানতে চান। পরে বাদীকে ভর্ৎসনা করেন আদালত। এরপর বিচারক মামলার আগামী শুনানি ৩০ জুন ধার্য করে হেনরী স্বপনের জামিন মঞ্জুর করেন। বরিশাল ক্যাথলিক চার্চের ফাদার লাকাবা লিএল গোমেজের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর নবগ্রাম রোডের গোল পুকুর সংলগ্ন বাসভবন থেকে হেনরি স্বপনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপরই সাদা পোশাকে থাকা ওই চার পুলিশ মোটরসাইকেলে করে হেনরি স্বপনকে থানায় না নিয়ে সরাসরি নিয়ে যান মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায়। ওই দিন বিকেলে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে হেনরি স্বপনকে কারাগারে পাঠানো হয়। কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি মো. নুরুল ইসলাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকে লেখালেখির মাধ্যমে খ্রিষ্টান ধর্মের অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে হেনরি স্বপনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে তাকে জামিনে মুক্তি দেন আদালত। এদিকে, হেনরি স্বপনকে গ্রেফতারের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন সাংবাদিক মহল ও সুশীল সমাজ। হেনরি স্বপনকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বরিশাল নগরী থেকে শুরু করে সারাদেশে মানববন্ধন ও বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। পাশাপাশি বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যরা বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশানরের মতবিনিময় সভা বর্জনের ঘোষণা দেন। হেনরি স্বপনকে গ্রেফতারের পর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার ছিল সাংবাদিক সমাজ। আরডি/ইএন
Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়