আপডেট: ১৯:০৮, ২৯ আগস্ট ২০১৯
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘মুক্তি কক্সবাজার’র প্রকল্প স্থগিত
আইনিউজ ডেস্ক : রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘মুক্তি কক্সবাজার’র কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য ‘ধারাল অস্ত্র’ তৈরির অভিযোগে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছয়টি প্রকল্প স্থগিত করতে জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছে এনজিও ব্যুরো।
সম্প্রতি কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের সমাবেশে তাদের হাতে ধারাল অস্ত্র দেখার পর আলোচনার মধ্যে এই পদক্ষেপ নিয়েছে এনজিও বিষয়ক ব্যুরো।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে চিঠিটি জেলা প্রশাসকের হাতে পৌঁছে। এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ‘মুক্তি কক্সবাজার’র রোহিঙ্গাদের জন্য ছয় শতাধিক দেশীয় অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি উঠে আসে। সুষ্ঠু তদন্ত করার জন্য তাদের ছয়টি প্রকল্প আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানিয়েছেন, ‘‘সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের সরবরাহের জন্য তৈরি করা ছয় শতাধিক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে প্রশাসন। ‘মুক্তি কক্সবাজার’ এনজিও ব্যুরোকে অবগত না করে গোপনে ওইসব অস্ত্র তৈরি করে তা রোহিঙ্গাদের মাঝে সরবরাহের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এতে কোনও খারাপ উদ্দেশ্য ছিল। তাই ‘মুক্তি কক্সবাজার’র ছয়টি প্রকল্পের সব ধরনের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এই নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত মুক্তির ছয়টি প্রকল্প স্থগিত থাকবে।’’
এনজিও ব্যুরোর উপপরিচালক এবং ব্যুরোর রোহিঙ্গা বিষয়ক সেলের ফোকাল পয়েন্ট আব্দুল্লাহ আল খায়রুম গণমাধ্যমকে বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে মুক্তি কক্সবাজারের যে ছয়টি প্রকল্প চলছিল, সেগুলোর কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “এনজিও ব্যুরোর অনুমোদিত যেসব সামগ্রী বিতরণ করার কথা, তা না মেনে তারা আইটেম তৈরি ও বিতরণ করছে, যা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
রোহিঙ্গা সঙ্কটের দ্বিতীয় বছর র্পূর্তিতে গত রোববার শরণার্থী শিবিরে বিশাল সমাবেশ করে মিয়ানমারের এই নাগরিকরা।
ওই সময়ে কক্সবাজারের উখিয়ার কোটবাজার এলাকায় একটি কামারের দোকান থেকে লোহার তৈরি ধারাল প্রায় সাড়ে ছয়শ’ সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ তোলে, রোহিঙ্গা শিবিরে বিতরণের জন্য তৈরি করা হচ্ছিল এসব ‘ধারাল অস্ত্র’।
তবে মুক্তি কক্সবাজারের কর্মকর্তারা দাবি করেন, ওগুলো কৃষি কাজে ব্যবহারের ‘নিড়ানি’ এবং সেগুলো রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিতরণের জন্য তৈরি করা হয়নি।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার কোটবাজার ভালুকিয়া সড়কে কামারের দোকানে তৈরির সময় ছয় শতাধিক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসন। ‘মুক্তি’ নামের এনজিওটি এসব চাপাতি তৈরি করছিল বলে জানিয়েছেন অভিযানের নেতৃত্বে থাকা উখিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফখরুল ইসলাম।
শরণার্থী শিবিরে কর্মরত কিছু এনজিও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরতে নিরুৎসাহিত করছে বলেও অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক সালাম বলেছিলেন, তারা মাঠের তথ্যের অপেক্ষায় আছেন, তা পেলে পদক্ষেপ নেবেন।
তার একদিনের মধ্যে বুধবার মুক্তি কক্সবাজারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন এনজিও ব্যুরোর আদেশ এল।
এনজিও ব্যুরোর অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার সিরাজুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়, “রোহিঙ্গাদের মাঝে বিতরণের জন্য এনজিও ব্যুরোর অনুমোদনহীন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হাতিয়ার (৬০০০টি নিড়ানি) তৈরির কারণে মুক্তি কক্সবাজারের চলমান প্রকল্পের সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।”
মুক্তি কক্সবাজারের যে ৬টি প্রকল্প স্থগিত হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে-নন ফরমাল এডুকেশন প্রোগ্রাম ফর দ্য চিলড্রেন অব ফোর্সিবলি ডিসপ্লেসড মিয়ানমার ন্যাশনাল; স্ট্রেংদেনিং রেজিলেন্স অ্যান্ড ফুড সিকিউরিটি অব ফোর্সিবলি ডিসপ্লেসড মিয়ানমার ন্যাশনাল অ্যান্ড লস্ট কমিউনিটি ইন টেকনাফ; ইম্প্রুভ অব ওয়াটার, স্যানিটেশন, হাইজিন ফর দ্য ফোর্সিবলি ডিসপ্লেসড মিয়ানমার ন্যাশনাল অ্যান্ড লস্ট কমিউনিটি ইন কক্সবাজার; এনহেন্সিং লার্নিং আউটকামস ফর ফোর্সিবলি ডিসপ্লেসড মিয়ানমার ন্যাশনাল ইন উখিয়া; ইম্প্রুভ ডব্লিউএএসএইচ থ্রু ফেসাল স্লাজ ম্যানেজমেন্ট এ্যান্ড বাথিং কিউবিকল ফর দ্য ডিসপ্লেস পার্সনস ফ্রম মিয়ানমার ইন কক্সবাজার এবং প্রটেকশন ইনিশিয়েটিভ ফর দ্য আন একাম্প্যানিড অর অরফান চিলড্রেন ইন কক্সবাজার।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকালে কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যাখ্যা দেয় ‘মুক্তি’। ‘মুক্তি’র প্রধান নির্বাহী বিমল চন্দ্র দে সরকার জানান, মুক্তি কক্সবাজারের পক্ষ থেকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডে ৬শ স্থানীয় উপকারভোগী পরিবারে সবজিচাষ প্রশিক্ষণ পরবর্তী বিভিন্ন ধরনের কৃষি উপকরণ প্রদানের লক্ষ্যে সবজি বীজ, চারা, ভার্মি কমপোস্ট সার, পানির জার ও নিড়ানি সরবরাহের জন্য প্রকল্প নিয়েছে। এ বিষয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে ২৫ জুলাই মের্সাস কৃষি বিপণিকে (প্রোপাইটর মোহাম্মদ আজিজুল হক, (ঠিকানা- বিমানবন্দর সড়ক মহিলা কলেজের সামনে, কক্সবাজার) ২৬০০ পিস নিড়ানি, ২৬০০ পিস সেক্স ফেরোমনট্রাপ (গন্ধযুক্ত কীটনাশক) ও ২৬০০ পিস নজল (স্প্রেয়ার) সরবরাহ করার জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রকল্পটি সরকারের এনজিও বিষয়ক ব্যুরো, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২৮/৩/২০১৯ তারিখে অনুমোদিত হয়। অনুমোদনের কপি যথারীতি এফডি-৭সহ জেলা প্রশাসক কক্সবাজার, আরআরআরসি, টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পের সিআইসিদের দেওয়া হয়। প্রকল্পটির পরিচিতি সভায় ৫/৫/২০১৯ তারিখে টেকনাফ ইউএনও’র কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের কর্মকর্তা, কর্মরত এনজিও এবং হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদকে সবকিছু অবহিত করা হয়।
মুক্তি কক্সবাজারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের মাঝে দেশীয় অস্ত্র সরবরাহের যে অপপ্রচার হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মুক্তির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রণজিত দাশ। উপস্থিত ছিলেন সহ-সম্পাদক বাবলা পাল, দ্বীপক শর্মা দিপু।
- কাল থেকে যেসব শাখায় পাওয়া যাবে নতুন টাকার নোট
- 'জাতীয় মুক্তি মঞ্চ' গঠনের ঘোষণা
- এক বছরেই শক্তি, ক্ষিপ্রতা জৌলুস হারিয়ে 'হীরা' এখন বৃদ্ধ মৃত্যুপথযাত্রী
- ওয়াহিদ সরদার: গাছ বাঁচাতে লড়ে যাওয়া এক সৈনিক
- ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিকথা (প্রথম পর্ব)
- এবার ভাইরাস বিরোধী মাস্ক বানিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলো বাংলাদেশ
- মায়েরখাবারের জন্য ভিক্ষা করছে শিশু
- ২৫ কেজি স্বর্ণ বিক্রি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
- তালিকা হবে রাজাকারদের