বিশেষ প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও
হিন্দু না খ্রিস্টান বিতর্ক শেষে গোয়াল ঘরের পাশে দাফন হলো আশা রানী
আশা রানী হিন্দু না খ্রিস্টান সঠিক না জানায় গোয়াল ঘরের পাশেই সমাহিত হন। ছবি- আই নিউজ
দাসপাড়া গ্রামের মেন্দেলু দাসের স্ত্রী আশা রাণী(৭৫)। তাঁর মৃ-ত্যু-র পর শেষকৃত্য নিয়ে দেখা দিলো সমস্যা। তিনি হিন্দু নাকি খ্রিস্টান তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন কেউ কেউ। আর এই দ্বন্দ্বের ফলে মা-রা যাওয়ার প্রায় ২৮ ঘণ্টায়ও সম্ভব হয়নি লা শে র শেষকৃত্য সম্পন্ন। এতো সময় তর্ক-বিতর্কের পর আশা রানীকে দাফন করা হয় নিজের বাড়ির গোয়াল ঘরের পাশে মাটিতে।
ঘটনাটি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ দাসপাড়া গ্রামে ঘটেছে। জানা গেছে আশা রানী নামের ওই নারীর মৃ ত্যু র পর সে হিন্দু না খ্রিস্টান এই তর্কের জের ধরে মরদেহ সৎকারে গ্রামবাসীরা বাধা দেয়।
আশা রাণী গত কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। বাড়িতেই তার চিকিৎসা চলছিল। স্বাস্থ্যের অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ায় মূমুর্ষ অবস্থায় তাকে গত রোববার বিকালে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। জরুরি বিভাগে পৌঁছানোর আগেই মারা যান আশা রাণী। তাঁর মৃ ত্যু র খবরটি নিশ্চিত করেন হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. ফিরোজ জামান জুয়েল।
হাসপাতাল থেকে বাড়িতে এনে রাতেই শশ্মানে সৎকারের জন্য প্রস্তুতি নিলে প্রথমে এতে বাধা দেন শশ্মান কমিটির নেতা কালো বর্মনসহ অনেকে। কালো বর্মন দাবি করে বলেন আশা রাণী, তার মৃত স্বামী ও ছেলে-মেয়ে খিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হয়েছে। তাই তাকে শশ্মানে সৎকার করতে দেয়া হবেনা। আর আশারাণীর মেয়ে দীপালি রাণী তা অস্বীকার করে দাবী করেন, দীপালি ও তার ভাই ধর্মান্তরিত হলেও মা আশা রানী সনাতন ধর্মই পালন করতেন।
আশারাণীর চাচাতো ভাই ধীরেন দাস অভিযোগ করে বলেন, আমার বোনকে যখন বাড়ির অদূরের রাধা-উষা নামে শশ্মান ঘাটে সমাহিত করতে দিচ্ছিল না গ্রামবাসী। তখন আমরা অনেকের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরি। কিন্তু কোন ফল মিলেনি। জনরোষের মুখে অবশেষে আশারাণীকে গত সোমবার রাত ৯ টার দিকে গোয়াল ঘরের পাশেই কবরস্থ করা হয়েছে।
এসময় প্রশাসনের কর্মকর্তারা এলাকায় ছিলেন। রুহিয়া থানা এলাকার ক্যাথলিক গির্জার ধর্মযাজক আনতনি সেন বলেন, ওই শশ্মানতো সরকারের। প্রশাসনের নিরবতার কারণেই আশা রানীকে গোয়ালঘরের পাশে কবরস্থ করা হয়েছে। এটি খুবই দুঃখজনক ও অমানবিক।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নরেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, প্রথম পরিচয় আমরা বাঙালি। এরপরেই ধর্ম। হিন্দু হোক, বৌদ্ধ হোক, আর খিস্টানই হোক সবার মরদেহ সমাহিত করার অধিকার আছে।
জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি তপন কুমার ঘোষ বলেন, যেহেতু আশা রাণীকে দাহ করতে দেবে না ,তাই মৃতদেহ শশ্মানে নিতে বাধা দেয় স্থানীয়রা।
রহিমানপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান হান্নু জানিয়েছেন, গ্রামটির একদল মানুষ কবরস্থ করতে বাধা দেয়ায় সেখানে বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আশা রানী নামে ওই বৃদ্ধাকে তার ছেলের গোয়াল ঘরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে ।
প্রসঙ্গত, দাসপাড়া গ্রামের ১৬১ টি পরিবারের মধ্যে ১৫০ পরিবার সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং ১১টি পরিবার খ্রিষ্টিয় ধর্ম পালন করেন।
আই নিউজ/এইচএ
- বরিশালে সন্ধ্যা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়লো হাঙর
- বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২৩ ফলাফল : নৌকা ৮৭৭৫৩, হাতপাখা ৩৪৩৪৫
- গাজীপুর সিটি নির্বাচন প্রাপ্ত ফলাফল
- প্রেমের টানে বরিশালে, ‘দেশি প্রেমিকের’ হাতে মার খেয়ে পালালেন ভারতীয় প্রেমকান্ত
- বাড়িতে ফোন দিয়ে জানলেন তিনি বাঘের থাবায় মারা গেছেন, চলছে দাফনের প্রস্তুতি
- কুড়িয়ে পাওয়া পাঁচ লক্ষ টাকার প্রকৃত মালিককে খুঁজতে এলাকায় মাইকিং
- চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে কর্মচারীরা
- সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতা স্বপ্ন-সোহাগী ঠাকুরগাঁওয়ের গর্ব
- দেলোয়ার হোসেন সাঈদী মারা গেছেন
- নির্বাচন ফলাফল লাইভ ২০২৪ | BD election result 2024