ইমরান আল মামুন
এক নজরে মাদারীপুর জেলা
দেশের বৃহত্তম জেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি জেলা হচ্ছে মাদারীপুর আজকের এই প্রতিবেদনে আপনাদের সামনে তুলে ধরা হবে এক নজরে মাদারীপুর জেলা সম্পর্কে। প্রতিবেদনে জানতে পারবেন মাদারীপুরের দর্শনীয় স্থান এবং ঐতিহ্য সম্পর্কেও।
বাংলাদেশের যতগুলো যারা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি উন্নত জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে মাদারীপুর জেলা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এবং বিখ্যাত ব্যক্তিরা এখানে জন্মগ্রহণ করেছেন। প্রতিবছর এখানে কার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো মানুষের আগমন ঘটে থাকে। প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে মূলত মাদারীপুরের সকল তথ্য দিয়ে। তাহলে আমরা সরাসরি চলে যাই আলোচনার মূল প্রসঙ্গে।
এক নজরে মাদারীপুর জেলা
মাদারীপুর জেলা আজকে অথবা কয়েক যুগ ধরে গড়ে ওঠেনি। আগে থেকেই এই মাদারীপুর জেলা গড়ে উঠেছে। এ জ্বালার উত্তর দিতে রয়েছে ফরিদপুর এবং মুন্সিগঞ্জ, দক্ষিণ থেকে রয়েছে বরিশাল এবং গোপালগঞ্জ, পূর্বে রয়েছে শরীয়তপুর জালা শুধুমাত্র এবং সর্বশেষ পশ্চিমে রয়েছে গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর জেলার কিছু অংশ। ১৯৫৪ সালের মাদারীপুর থানা সাব ডিভিশন হিসেবে স্বীকৃতি পায় এবং ১৯৮৪ সালে চূড়ান্তভাবে মাদারীপুর জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
যদি মাদারীপুর জেলার ইতিহাস দেখতে চাই তাহলে সে ক্ষেত্রে দেখা যায় মূলত এই অঞ্চলটি কোটলীপাড়া নামে পরিচিত ছিল পূর্বে। আর এটি ছিল ঈদিলপুর চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের উন্নত একটি জনপদ। এরপর ধীরে ধীরে বিভিন্ন ইতিহাস এবং রাজ্যের পরিবর্তন ঘটে অবশেষে মাদারীপুর জেলা তৈরি হয়।
মাদারীপুর জেলার জনসংখ্যা এবং আয়তন
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মাদারীপুর জেলার জনসংখ্যা হচ্ছে ১২ লক্ষ ১২ হাজার ১৯৮ জন। আর এই জেলার আয়তন হচ্ছে সর্বমোট ১০১৪৪.৯৬ বর্গ কিলোমিটার। আর জনসংখ্যার ঘনত্ব হচ্ছে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১১০০। বাংলাদেশের ঘনবসতি জেলাগুলোর মধ্যে প্রথম থেকে অবস্থান করছে এই মাদারীপুর জেলা। এখানে সাক্ষরতার হার হচ্ছে সর্বমোট ৪৮ শতাংশ।
মাদারীপুর জেলার প্রশাসনিক এলাকা সমূহ
যদি একটি জেলা সম্পর্কে সবকিছু জানতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে তার প্রশাসনিক এলাকা সম্পর্কে জানা দরকার। এখন জানব এক নজরে মাদারীপুর জেলার প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ সম্পর্কে।
- মাদারীপুর পৌরসভা
- কালকিনি পৌরসভা
- রাজৈর পৌরসভা
- শিবচর পৌরসভা
মাদারীপুর জেলার শিক্ষা ব্যবস্থাপনা
অন্যান্য জেলার মত এখানে জালের মতো সরিয়ে রয়েছে অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে রয়েছে সরকারি বেসরকারি এবং প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেমন এখানে রয়েছে ৬৭৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এছাড়াও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য এনজিও প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২৮৯ টি। অন্যদিকে কিন্ডারগার্টেন রয়েছে 76 টি এবং মাদ্রাসা রয়েছে ১৬৪ টি। উচ্চশিক্ষার জন্য রয়েছে ২৩ টি কলেজ যার মধ্যে পাঁচটি সরকারি, একটি টেক্সটাইল এবং একটি টেকনিক্যাল কলেজ। শিক্ষা ব্যবস্থা করার জন্য রয়েছে দশটি ভোকেশনাল এবং অন্যান্য আরো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখন আমরা মাদারীপুর জেলার কিছু বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানব। কারণ এক নজরে মাদারীপুর জেলা সম্পর্কে জানতে হলে এ বিষয়গুলো জানার দরকার রয়েছে।
- মাদারীপুর সরকারি কলেজ (১৯৪৮),
- বীরমোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৪৭)।
- শশিকর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৪২).
- শিকার মঙ্গল মাধ্যমিক বিদ্যালয়(১৯৮৮)
- ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫০)
- সরকারি রাজৈর গোপালগঞ্জ কে জে এস পাইলট মডেল ইনস্টিটিউশন (১৯২৯),
- সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজ (১৯৬৪),
- রাজৈর ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০),
- সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজ (১৯৮৪),
- সরকারি শেখ হাসিনা একাডেমি এন্ড উইমেন্স কলেজ (১৯৯৫),
- শিবচর নন্দকুমার ইনস্টিটিউশন (১৯১০),
- ডনোভান সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯১৪),
- শশিকর শহীদ স্মৃতি কলেজ (১৯৭৩),
- মাদারীপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ (১৯৮১),
- চরমুগুরিয়া কলেজ (১৯৭৮),
- কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজ (১৯৭২),
- ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ]] (১৯৯৯),
- গোপালপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়
- কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন একাডেমি
- কালকিনি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- মিঠাপুর এল এন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫),
- আলহাজ্ব আমিনউদ্দিন হাই স্কুল (১৯৭০),
- খালিয়া রাজারাম ইনস্টিটিউিশন (১৯০০),
- রাজকুমার এডওয়ার্ড ইনস্টিটিউিশন (১৯০২),
- মিয়ারহাট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭০),
- কালিনগর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৪),
- শশিকর উচ্চ বিদ্যালয়,(১৯৪৩),
- মাদারীপুর পাবলিক ইনস্টিটিউশন (১৯৫৩),
- চরমুগুরিয়া মার্চেন্টস হাই স্কুল (১৯৩১),
- ঘটকচর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৩),
- মহিষমারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮),
- মাদারীপুর আহমাদিয়া কামিল মাদ্রাসা (১৯৪৯),
- বাহাদুরপুর শরিয়াতিয়া আলিয়া মাদ্রাসা (১৯৪০),
- চরনাচনা ফাজিল মাদ্রাসা (১৯১২),
- বীরমোহন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯),
মাদারীপুর জেলার দর্শনীয় স্থান
এই জেলাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান। এখানে সারা বাংলাদেশ থেকে প্রত্যেক বছর দর্শনীয় প্রার্থীরা ঘুরতে আসেন এবং বিদেশ থেকেও অনেক মানুষ এখানে সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। আমরা এখন আমরা মাদারীপুর জেলার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানব।
- আউলিয়াপুর নীলকুঠি - ছিলারচর,
- সূফী আমীর শাহ (রঃ) এর মাজার শরীফ,
- সেনাপতি দিঘি - আমড়াতলা ও খাতিয়াল
- আলগী কাজি বাড়ি মসজিদ - বাহাদুরপুর,
- কুলপদ্মী জমিদার বাড়ি,
- খালিয়া জমিদার বাড়ি - খালিয়া,
- চরমুগরিয়া
- ঝাউদি গিড়ি - ঝাউদি,
- মাদারীপুর শকুনি দীঘি,
- মিঠাপুর জমিদার বাড়ি - দুধখালী,
- নারায়ণ মন্দির - পানিছত্র,
- পর্বতের বাগান- মস্তফাপুর,
- প্রণব মঠ- বাজিতপুর,
- মঠের বাজার মঠ - খোয়াজপুর,
- রাজারাম মন্দির - খালিয়া,
- শাহ মাদার (রঃ) দরগাহ শরীফ,
মাদারীপুর জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের তালিকা
জেলা সম্পর্কে জানবেন কিন্তু আপনারা বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের সম্পর্কে জানবেন না সেটি তো আর হয় না। এখানে রয়েছে অনেকগুলো সুফি দরবেশ রাজা। এছাড়াও রয়েছে ব্রিটিশ থেকে ভারতবর্ষকে রক্ষা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সকল ব্যক্তিবর্গেরা। বর্তমান সময় পর্যন্ত বিখ্যাত এই ব্যক্তিবর্গের তালিকা গুলো আমরা জানি।
- মিলন সব্যসাচী (১৯৭২− ) - কবি, কথাসাহিত্যিক, গীতিকার, বহুমাত্রিক লেখক ও গবেষক;
- নারগিস আক্তার () - চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও প্রযোজক; জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (২০০১, ২০১০) প্রাপ্ত;
- সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন (১৯৮১- ) - চিত্রনাট্য লেখক, চলচ্চিত্র পরিচালক;
- আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম(১৯৬১- ) - রাজনীতিবিদ ও কৃষিবিদ; প্রাক্তন এমপি;
- নূর-ই-আলম চৌধুরী (১৯৬৪- ) - রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক; এমপি; ১১দশ জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ;
- মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন আহমেদ (১৯৬০- ) - এডমিরাল, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান (২০১৫-২০১৯);
- মাবিয়া আক্তার (১৯৯৯-) - ভারোত্তলক; ২০১৬ দক্ষিণ এশীয় গেমস ও ২০১৯ দক্ষিণ এশীয় গেমস এ স্বর্ণপদক জয়ী।
- এ. বি. এম. খায়রুল হক (১৯৪৪− ) - প্রখ্যাত আইনবিদ এবং ১৯ তম প্রধান বিচারপতি (৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০ - ১৭ মে ২০১১);
- মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান (১৯৩৭− ) - অধ্যাপক ও গবেষক; স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার(২০১৭) প্রাপ্ত;
- সিদ্দিকুর রহমান (১৯৮৪-) - গল্ফার; প্রথম বাংলাদেশী এশিয়ান ট্যুর শিরোপা জয়ী (১৯১০);
- শাহ মাদার (মৃত্যু: ১৪৩৪খ্রি.) - প্রখ্যাত সূফী
- কেদার রায় (মৃত্যু: ১৬০৩খ্রি.) - বার ভুঁইয়ার অন্যতম ও বিক্রমপুর পরগনার জমিদার
- আলাওল (১৫৯৭-১৬৭৩খ্রি.) - মহাকবি
- মৌলোবী আব্দুল জব্বার ফরিদপুরী (১৮০১-১৮৭৬খ্রি.) - বিশিষ্ট উর্দু কবি ও লেখক;
- অম্বিকাচরণ মজুমদার (১৮৫১-১৯২২খ্রি.) - বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবী
- সূফী আমির শাহ (মৃত্যুঃ ১৯৪৪খ্রি.) - প্রখ্যাত আধ্যাত্মিক সাধক;
- পুলিন বিহারী দাস (১৮৭৭-১৯৪৯খ্রি.) - ব্রিটিশ বিরোধী সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের ঢাকা অনুশীলন সমিতির প্রধান
- রাজা রাম রায়চৌধুরী (১৬ শতাব্দী) - রাজৈরের খালিয়া অঞ্চলের জমিদার
- হাজী শরীয়তুল্লাহ (১৭৮০-১৮৪০খ্রি.) - ধর্মীয় সংস্কারক ও ফরায়েজী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
- কিরণ চাঁদ দরবেশ (১৮৭৮-১৯৪৬খ্রি.) - স্বদেশী যুগের রাজনৈতিক কর্মী, কবি, গীতিকার ও সাহিত্য সাধক;
আশা করা যাচ্ছে এর প্রতিবেদনের মাধ্যমে আপনারা এক নজরে মাদারীপুর জেলা সম্পর্কে জানলেন। এরকম আরো অন্যান্য জেলা সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই আমাদের সারা বাংলা ক্যাটাগরি পড়ে নিবেন।
- বরিশালে সন্ধ্যা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়লো হাঙর
- বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২৩ ফলাফল : নৌকা ৮৭৭৫৩, হাতপাখা ৩৪৩৪৫
- গাজীপুর সিটি নির্বাচন প্রাপ্ত ফলাফল
- প্রেমের টানে বরিশালে, ‘দেশি প্রেমিকের’ হাতে মার খেয়ে পালালেন ভারতীয় প্রেমকান্ত
- বাড়িতে ফোন দিয়ে জানলেন তিনি বাঘের থাবায় মারা গেছেন, চলছে দাফনের প্রস্তুতি
- কুড়িয়ে পাওয়া পাঁচ লক্ষ টাকার প্রকৃত মালিককে খুঁজতে এলাকায় মাইকিং
- চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে কর্মচারীরা
- সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতা স্বপ্ন-সোহাগী ঠাকুরগাঁওয়ের গর্ব
- দেলোয়ার হোসেন সাঈদী মারা গেছেন
- নির্বাচন ফলাফল লাইভ ২০২৪ | BD election result 2024