Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ১০ ১৪৩২

আই নিউজ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:১১, ২১ আগস্ট ২০২৪

ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি 

নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে বন্যা দুর্গতরা।

নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে বন্যা দুর্গতরা।

স্মরণকালের ভয়া*বহ রূপ ধারণ করেছে ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি। বন্যার প্রবল তোড়ে ভেসে গেছে শতাধিক গ্রাম, জনপদ। অথৈ পানিতে পড়ে দুর্বিপাকে কয়েক লাখ মানুষ। রাস্তাঘাট, চলার পথ, মাঠঘাট ডুবে গিয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় পড়েছেন ফেনীর মানুষ। 

ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ রূপ নিয়েছে উত্তরের তিন উপজেলা ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার শতাধিক গ্রামের লাখের বেশি মানুষ। এসব এলাকায় তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট ও ঘর-বসতি। নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে বন্যা দুর্গতরা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও ফেনীর বন্যা দুর্গতদের সাহাযার্তে তৎপরতা শুরু করেছে। 

বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি। ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন, আনন্দপুর, মুন্সীরহাট, আমজাদহাট ইউনিয়নের ৪০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পরশুরামের মির্জানগর,  চিথলিয়া, বক্সমাহমুদ এবং পৌরশহরসহ ৪৫টির বেশি গ্রাম পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ছাগলনাইয়ার পাঠান নগর, রাধানগর, শুভপুর ইউনিয়নেরও বেশ কয়েকটি গ্রামে বন্যা হচ্ছে।  

এসব এলাকায় তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, পুকুর ও ফসলি জমি। কিছু কিছু এলাকায় মানুষের ঘরের ছাদ ও টিনের চালেও ছুঁয়েছে বন্যার পানি। এমন পরিস্থিতিতে আশ্রয় খুঁজছেন স্থানীয়রা। বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণ সহায়তা নিয়ে মাঠে নেমেছে স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।  সব মিলিয়ে ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে। 

এর আগে গত মাসের মাসের শুরুতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর ১৫ স্থানে ভাঙন দেখা যায়। সেসব স্থানে মেরামতের পর চলতি মাসের শুরুতে বাঁধের আরও ১২ স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। বাঁধে ভাঙনে প্লাবিত হয় শতাধিক গ্রাম। অবকাঠামো, ধান, ফসল ও মৎস্যে ক্ষতি ৩০ কোটি ছাড়িয়ে যায়। তখনো ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি অনেক খারাপ ছিল। এবার ১৫ দিনের মাথায় আবার দেখা দিল বন্যা।  

পরশুরামের বক্সমাহমুদ গ্রামের মাদ্রানা শিক্ষক ও সাংবাদিক মোঃ শাহআলম বলেন, আমাদের ত্রাণের চেয়েও এখন নৌকা বা স্পিডবোট বেশি প্রয়োজন। অনেকে বন্যা পরিস্থিতি এমন হবে বুঝতে পারেনি। এখন কোথাও যাওয়ার উপায় নাই। এছাড়া সোমবার রাত থেকে বিদ্যুৎ নেই। বন্যার সঙ্গে বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক বেশি ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। 

নাজমা আক্তার নামে আরেকজন বলেন, ঘরে এক গলা পানি। ছাদের ওপর আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে আবার পানিও বাড়ছে জানিনা কীভাবে রাত কাটাবো। পরিবারের ছোট সন্তান, বয়োবৃদ্ধদের নিয়ে বেশি কষ্ট করতে হচ্ছে।  দুইদিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। দুপুর থেকে মোবাইল নেটওয়ার্কও নেই। 

ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ফেনী জেলা প্রশাসক মুসাম্মত শাহীনা আক্তার বলেন, ত্রাণ সহায়তা ও উদ্ধার অভিযানে প্রশাসন তৎপর রয়েছে।  

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন, মুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার ৮৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ফেনী আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ফেনীতে টানা দুইদিন মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।  মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিন জেলাজুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে ফেনীর বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় কি না তাই এখন দেখার বিষয়। 

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়