Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৮ ১৪৩২

মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৩৭, ৩ মে ২০২১
আপডেট: ২৩:৪৭, ৩ মে ২০২১

আর কেউ রইল না নয় বছরের মীমের

সোমবার ভোরে শিমুলিয়া থেকে কমপক্ষে ৩১ যাত্রী নিয়ে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয় একটি স্পিডবোট। যার এক যাত্রী নয় বছরের মীম। বাবা-মা আর দুই বোনের সাথে যাচ্ছিল মৃত দাদার লাশ দেখতে। কিন্তু মাঝপথেই স্পিডবোটটি একটি বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে সব যাত্রী পানিতে পড়ে যান। এসময় মীম একটি ব্যাগ ধরে ভেসেছিল নদীতে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে জীবিত উদ্ধার করতে পারলেও তার পরিবারের কেউ বেঁচে নেই।

সোমবার (৩ মে) সকালে কাঁঠালবাড়ীর বাংলাবাজার পুরোনো ঘাটে পদ্মা নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ২৬ জন নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে রয়েছে মীমের বাবা-মা ও দুই বোনের লাশও।

জানা গেছে, শিশু মীমের বাবা মনির হোসেন, মা হেনা বেগম, ছোট দুই বোন সুমি ও রুমি স্পিডবোট দুর্ঘটনায় মারা গেছে। তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ রাখা হয়েছে স্থানীয় একটি স্কুল মাঠে। খুলনার তেরখাদায় এ পরিবারের বাড়ি। সেখানে দাদার মৃত্যুর খবর পেয়ে যাচ্ছিলেন তারা। দাদার লাশ দেখতে বাবা-মা ও দুই বোনের লাশ সঙ্গে নিয়ে যেতে হচ্ছে তাকে।

আরও পড়ুন: ইন্টারভিউ দিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না জবি শিক্ষার্থী শাহাদাতের

মীমের কথা শুনে জানা যায়, দাদার মৃত্যুর খবর পেয়ে গ্রামের বাড়ি খুলনার তেরোখাদা গ্রামের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল ছোট্ট মীম ও তার পরিবার।  ঢাকার মিরপুরের ভাড়া বাসা থেকে মা, বাবা আর ছোট দুই বোনের সঙ্গে মীম সোমবার সকাল ৬টার আগে শিমুলিয়া ঘাট থেকে স্পিডবোটে ওঠে।

স্পিডবোট চলাকালে ঘুমিয়ে ছিল মীম। কোলের ওপর ছিল কাপড়-চোপড় ভরা ব্যাগ। দুর্ঘটনার পর পানিতে ব্যাগ বুকে চেপে ভাসমান অবস্থায় নিজেকে আবিষ্কার করে মীম। এ সময় কেউ একজন এসে তাকে পানি থেকে উদ্ধার করে। হাত ও চোখের কাছে সামান্য আঘাত থাকায় দ্রুত স্থানীয় রয়েল হাসপাতালে নেওয়া হয় মীমকে।

আরও পড়ুন:  মাদারীপুরে স্পিডবোট ডুবি: নিহতদের বেশিরভাগের মাথায় ছিল আঘাত

কান্নারত অবস্থায় মীম বলে, আমরা দাদু বাড়ি যাচ্ছিলাম। দাদা মারা গেছেন, তাকে দেখতে। আমার আর কেউ নাই।

সোমবার বিকেল ৪টার দিকে বাবা, মা ও দুই বোনের মরদেহসহ মীমকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি খুলনার তেরোখাদার উদ্দেশে অ্যাম্বুলেন্স রওনা দিয়েছে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামান জানান, শিশুটির বাবা, মা ও দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সে করে শিশুটিকে তাদের গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের শনাক্ত হলে তাদেরও তাদের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

সোমবার সকালে শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে আসা স্পিডবোটটি কাঁঠালবাড়ী ঘাটের কাছে নোঙর করে রাখা একটি বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত অবস্থায় পাঁচজনকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আইনিউজ/এসডিপি

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়