Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৬ ১৪৩২

জাবেদ ভূঁইয়া, কুমিল্লা থেকে ফিরে 

প্রকাশিত: ২০:১০, ১০ ডিসেম্বর ২০২১
আপডেট: ২০:৫২, ১০ ডিসেম্বর ২০২১

কুমিল্লায় ধর্মীয় উগ্রতায় বলি দীলীপ দাসের পরিবারের সহায়তা প্রয়োজন

নিহত দীলীপ দাসের সাথে তাঁর মেয়ে প্রিয়া

নিহত দীলীপ দাসের সাথে তাঁর মেয়ে প্রিয়া

কুমিল্লার নানুয়া দিঘির পাড়ের পূজা মণ্ডপে কোরআন শরীফ অবমাননার জেরে নিহত দীলীপ দাসের পরিবার ধুকছে স্বামী, ভাই, পিতা, স্বজন হারানোর বেদনায়। এখন পর্যন্তু তারা কোনও সরকারি সহায়তাও পাননি। সরকারি-বেসরকারিভাবে কেউ করেনি আনুষ্ঠানিক দুঃখ প্রকাশ, এমনকি তাদের কাছে নিয়ে যায়নি কোন শোক বার্তাটুকুও।

এমন নিদানের দিনে নিহত দীলিপ দাসের স্ত্রী রূপা দাস দাবি করছেন একমাত্র পুত্রের জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে শিক্ষাখাতে যে কোন অর্থনৈতিক সহায়তার।

শোকে কাতর রাহুল দাস এখন পর্যন্তু কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারেনি প্রতিকূল পরিস্থিতে। সরকারি বা বেসরকারি অর্থ সহায়তা দিয়ে তাকে কোথাও ভর্তির সুযোগ করে দিতে সমাজের সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন রাহুলের মা রূপা দাস (৪৫) ।

কুমিল্লা মহানগরের কোতোয়ালি থানা পুলিশ অফিসের পাশে বসবাস ছিলো দীলিপ দাশের। ঘটনার দিন বাসা থেকে ১৫ মিনিটের দূরত্বে থাকা শ্রীশ্রী রাজেশ্বরী মন্দিরে তিনি অবস্থান করছিলেন। সেই সময়ের হামলায় আহত হয়ে ৮ দিন আইসিইউ থেকে জীবন- মৃত্যুর সাথে লড়ে মৃত্যুর কাছে হেরে যান দীলিপ দাস।

এখন একমাত্র উপার্জক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে তার পরিবারের চাকা জোড়াতালি দিয়ে প্রকারে চলছে একটি দোকান কোটার ভাড়ায়।

রাহুল দাসের একমাত্র কন্যা প্রিয়া রানী দাশ অধরা, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের স্নাতকোত্তর করছেন। সে ঢাকার দৃষ্টিপাত নাট্য দলের নাট্যকর্মী। সে জানায়, তার বাবা মুসলামানদের মাজারের খুব ভক্ত ছিলেন। ভক্তি নিয়ে ঘুরতেন মাজারে-মাজারে। সেই বাবার মৃত্যুর কারণ
মুসলমান কারও হাতে। ধর্মীয় ভেদাভেদে যিনি বলি হয়েছেন, সেই ব্যক্তির পাশে কেউ ছিলো না। আবার মৃত্যুর সময়ে পাশে ছিলেন সেই মুসলিম বন্ধুরাই। সকল কিছু করেছেন আন্তরিকতা নিয়ে! টানা ৮ দিন পাশে ছিলেন একমাত্র তাঁর মুসলিম বন্ধুরা।

তিনি জানান, সেই আটদিনে একটি বারের জন্য প্রশাসন কিংবা সরকারি তরফ হতে কেউ এগিয়ে যায়নি মানবিকতার হাত বাড়িয়ে! হয়তো আরও উন্নত এবং দ্রুত চিকিৎসা সেবা পেলে তার বাবাকে বাঁচানো যেত! এসব আক্ষেপ তাকে ভিতরে ভিতরে কুরে খাচ্ছে। তিনি এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পান না।

তিনি জানেন না এসব প্রশ্নের উত্তর কার কাছে পাবেন?  কেন এসব হয় দেশে! দীলীপ দাসেরা নানা অজুহাতে মরেন বিনা দোষে দোষী হয়ে। এ দৃশ্য বড়ই করুণ!

প্রিয়া দাস জানালেন, তাঁর বাবা আহত হবার পর কেউ এগিয়ে আসেনি তাকে বাঁচাতে। সবকিছু তার কাছে অসহায় করে তুলে, ভীত করে এখন। আগামীতে দেশে তাদের কি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে সেটাও তাঁর প্রশ্ন বিবেকবোধ সম্পন্ন সমাজের কাছে। একটা মার্ডারে যদি পরিবারের কেউ মারা যায়, সেই  যাতনার অংশটুকু সমাজের বড় ক্ষত তৈরী করে। এর দায় থেকে সমাজ এড়াতে পারে না।

প্রিয়া রানী দাস জানেন না তিনি পিতৃহত্যার বিচার কখনও পাবেন কি না। তবুও আশা করেন ন্যায় বিচারের।

দীলীপ দাসের স্ত্রীর কান্নায় বাসার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছিলো, আলাপ চালানো যাচ্ছিলো না। থেমে থেমে যতটুকু আলাপ সম্ভব হয়েছিলো তাতে আকুতি করেছেন পুত্র রাহুল দাসের জন্য। তিনি চেয়েছেন সকলের সহযোগিতা। পুত্রের জন্য শিক্ষা বিষয়ে প্রয়োজনীয় যা কিছু দরকার তার একটু ভরসা যদি তিনি পেতেন।

আইনিউজ/জেবি/এসডি

দেখুন আইনিউজের বিভিন্ন ভিডিও খবর

ঘুরে আসুন মৌলভীবাজারের পাথারিয়া পাহাড়

লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়া, দেশে চিকিৎসা নেই

শ্রীমঙ্গল পৌরসভায় চতুর্থবার মেয়র হলেন মহসীন মিয়া মধু

মৌলভীবাজারে ১৩৩ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৪০ বেকার তরুণ

পাকিস্তান দলকে সমর্থনকারী বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে আইনি ব্যবস্থা

বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উৎসবে মুগ্ধ বিদেশিনী

মৌলভীবাজারের সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী ভারত সরকারের পদ্মভূষণ পদকে ভূষিত

এছাড়াও যে কোনও ভিডিও সংবাদের জন্য ভিজিট করুন আইনিউজের ভিডিও আর্কাইভস

Green Tea
সারাবাংলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
সর্বশেষ
জনপ্রিয়