আবু মকসুদ, লন্ডন
আপডেট: ১৬:১০, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
লন্ডন বইমেলা : সফল মেলা কিংবা ছিদ্রান্বেষণ
![দশম বাংলাদেশ বইমেলা, লন্ডন দশম বাংলাদেশ বইমেলা, লন্ডন](https://www.eyenews.news/media/imgAll/2021April/Bangladesh-Book-Fair-London-Eye-News_1-2209091606.jpg)
দশম বাংলাদেশ বইমেলা, লন্ডন
লন্ডনে দশম বাংলাদেশ বইমেলা সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘ দুই বছর অনুপস্থিতির পরে মেলাকে কেন্দ্র করে বিলেতের সাহিত্য, সংস্কৃতি কর্মী ছাড়া সাহিত্যমোদী সাধারণ পাঠক এক জায়গায় জড়ো হয়েছে। জমায়েতের মানুষের মুখে হাসি দেখে, বইকে ঘিরে তাদের উচ্ছ্বাস দেখে মনে হয়েছে মুক্তির আনন্দে নাচছে।
দীর্ঘদিনের দমবন্ধ পরিবেশের পরে ঝর্ণার কলকল ধ্বনি তাদের বুকের জমাট পাথর সরিয়ে দিয়েছে। মেলা মানুষকে জড়ো করতে পেরেছে, তাদের আনন্দ ফুর্তি করতে দিয়েছে, সর্বোপরি তাদের বইয়ের কাছে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। বই কেমন আনন্দের বস্তু বই বিমুখ মানুষ জীবনেও জানতে পারবে না। এবারের মেলা মানুষের বই প্রীতি পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করেছে। শুধু সেলফি, ফটোবাজি নয় মানুষ হাত ভরে, ব্যাগ ভরে বই নিয়ে ফিরে গেছে। মেলা আয়োজনে কিছু ভুলভ্রান্তি থাকলেও সার্বিকভাবে মেলা সফল। মানুষের উপচে পড়া ভিড় মেলার সফলতা প্রমাণ করে।
লন্ডনে দশম বাংলাদেশ বইমেলায় উপস্থিত অতিথি ও দর্শকেরা।
সফল মেলা কিছু মানুষের মনোকষ্টের কারণ হয়েছে, যেমন হয়। মানুষের স্বভাব ছিদ্র অন্বেষণ করা, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভুল ভ্রান্তিকে বড় করে প্রচার করা। অন্যের সাফল্যে খুশি হতে না পারাদের মনোকষ্ট দেখে তাদের প্রতি করুণা হয়। তাদের সান্ত্বনা জানাতে পারলে ভালো লাগতো কিন্তু সান্তনা জানানোতেও তারা ছিদ্র খুঁজে পাবে।
সাপ্তাহিক সুরমা মেলা নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে, যদিও সাপ্তাহিক সুরমা দলীয় পত্রিকা তবু সাংবাদিকতার নীতিমালায় যে ন্যূনতম নিরপেক্ষতা দেখানো লাগে তা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। 'বইমেলা, শেখ মুজিব ও হাইকমিশনের প্রদশর্নী- দলীয়করণ নিয়ে প্রশ্ন' এই শিরোনামে তারা খবর ছেপেছে। বলা বাহুল্য এই শিরোনাম চূড়ান্ত বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা। প্রথমত মেলাতে আগত হাজার মানুষের মধ্যে একজনও দলীয়করণ নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেনি, অন্তত মেলা আয়োজকদের কাছে এ ব্যাপারে কেউ কথা বলেনি।
- আরো পড়ুন : বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত হলো বাংলা মেলা
মেলাতে সব পথ এবং মতের মানুষ এসেছে, দলীয় এবং নির্দলীয় মানুষ এসেছে। মেলাতে আস্তিক এবং নাস্তিক এসেছে, মুক্তমনা কিম্বা মৌলবাদীও এসেছে। মেলা কোন ধর্ম কিংবা দলের প্রতি আনুগত্য দেখায়নি, কোন বিশেষ দল কিংবা সম্প্রদায়ের প্রতি আনুগত্য দেখালে এটা সার্বজনীন মেলা হতো না। তাই দলীয়করণ নিয়ে প্রশ্ন তোলা মিথ্যাচার। শেখ মুজিব এবং হাইকমিশনের প্রদর্শনী নিয়ে যে প্রশ্ন করা হয়েছে তাতেও বিভ্রান্তি বিদ্যমান।
- আরো পড়ুন : চালু হলো প্রবাসবন্ধু হটলাইন ‘16135’
অন্যান্য অনেক স্টলের মত এই মেলায় 'বঙ্গবন্ধু কর্ণার' নামে একটি স্টল ছিল। যেখানে বঙ্গবন্ধুর লেখা বই এবং তাঁকে নিয়ে লেখা বই প্রদর্শিত হয়েছে। বাংলাদেশ এবং বিলেতের প্রকাশনী গুলো যেভাবে স্টল বরাদ্দ পেয়েছে 'বঙ্গবন্ধু কর্ণার' সেভাবেই পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু কর্নার এর জন্য কোনো বিশেষ সুযোগ দেয়া হয়নি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাদের দাওয়াত করা হয়েছে এবং যারা মঞ্চে ছিলেন তাদের কাউকেই রাজনৈতিক পরিচয়ে আনা হয়নি। যদি তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় থেকে থাকে, তা থাকতেই পারে। কিন্তু মেলায় আমন্ত্রণ এর ক্ষেত্রে রাজনীতি বিবেচনা করা হয়নি।
রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি হিসাবে হাইকমিশনারকে দাওয়াত করা হয়েছে। গওহর রিজভীকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়া প্রয়োজন নেই, শিক্ষাবিদ এবং গবেষক অক্সফোর্ড এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন, মেলায় তিনি উপস্থিত হয়েছেন এবং দু কথা বলেছেন এটা মেলার আয়োজকদের জন্য গর্বের ব্যাপার। সুলতান শরীফের রাজনীতিক পরিচয় থাকলেও তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা তাঁকে মুক্তিযোদ্ধা এবং কমিউনিটির অভিভাবক হিসাবে মঞ্চে আনা হয়েছে।
লন্ডনে দশম বাংলাদেশ বইমেলায় আসা নারীরা।
হুমায়ুন কবির সম্পাদক এবং কথা সাহিত্যিক মেলায় অংশগ্রহণের জন্য আমেরিকা থেকে এসেছেন, সৈয়দ তোশারফ আলী একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং দৈনিক ইত্তেফাকের সাবেক নির্বাহী সম্পাদক। মঞ্চে যারা ছিলেন প্রত্যেকেই যশস্বী ব্যক্তি, প্রত্যেকেই নিজের কর্মের মাধ্যমে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করেছেন।
মেলায় হাইকমিশনার ছিলেন এবং হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে 'বঙ্গবন্ধু কর্ণার' পরিচালিত হয়েছে, শুধু এই কারণে মেলা শেখ মুজিব এবং হাইকমিশনের প্রদর্শনী বলা চূড়ান্ত অভ্যবতা। হাইকমিশনার বিদেশে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন, শেখ মুজিব বাংলাদেশের জাতির পিতা এটা সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্টিত। কোন দেশের হাইকমিশনার যদি দেশের জাতিরপিতাকে স্মরণ করে কিংবা সম্মান জানায় সেটা দোষের নয় বরং সম্মান না জানানোটাই দোষের। সাপ্তাহিক সুরমা দলীয় পত্রিকা সবকিছুতে গলদ খোঁজা এদের কাজ। এবারও তারা এই কাজে সচেষ্ট হয়েছে।
সমালোচনার অধিকার সবার আছে, সুস্থ সমালোচনা ভবিষ্যৎ ভুলভ্রান্তি শোধরানোর সুযোগ দেয়। কিন্তু কুৎসা, পরশ্রীকাতরতা সমাজের অসুস্থতা বাড়ায়, এসব পরিহার করা উচিৎ।
আবু মকসুদ, লন্ডন
দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি
সৌদি আরবে মেয়েকে নির্যাতনের খবরে মায়ের আহাজারি-কান্না
গ্রিসের বস্তিতে বাংলাদেশীদের মানবেতর জীবন, অধিকাংশই সিলেটি
গ্রিসে পাঁচ বছরের ভিসা পাবে বাংলাদেশিরা
- ডিভি লটারি আবেদনের নিয়ম
- ইউরোপ যাওয়ার আগে যা জানা প্রয়োজন
- লন্ডনের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তথ্য ২০২৩
- গ্রিসে নিখোঁজের দেড় মাসেও খোঁজ মিলেনি হবিগঞ্জের ওয়াহিদ আলীর
- অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা ২০২৪ আবেদন করবেন যেভাবে
- বিনা খরচে জার্মানি ওয়ার্ক ভিসা ২৬ হাজার কর্মী নিচ্ছে জার্মানি
- বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে: আমিরাতে তথ্যমন্ত্রী
- মৌলভীবাজারের জুনেদ পেলেন ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সম্মাননা
- ভুয়া বিয়ের নিমন্ত্রণে কানাডায় যাওয়ার পথে আটক ৪২ বাংলাদেশি
- স্বচ্ছতা আনতে উন্মুক্ত লটারীর মাধ্যমে ভাতা কার্ডের তালিকা তৈরি