আই নিউজ ডেস্ক
অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার সময় ট্রাক থেকে ২৩ বাংলাদেশি উদ্ধার
রোমানিয়া সীমান্তে একটি ট্রাক থেকে ২৩ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়েছে। অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার সময় বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) তাদের উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম স্টাইরিপিসার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাকটি পশ্চিম টার্নু বর্ডার ক্রসিং পয়েন্টে আসলে রোমানিয়ার আরাদ সীমান্ত পুলিশ সেটিতে তল্লাশি চালায়। ট্রাকের চালক জানিয়েছেন, তিনি রোমানিয়া-ইতালি রুটে তোশক নিয়ে যাচ্ছিলেন।
আরাদ সীমান্ত পুলিশ জানিয়েছে, তল্লাশি চালানোর সময় তাদের সহকর্মীরা নিশ্চিত করেছেন, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা বাংলাদেশের নাগরিক, যাদের বয়স ২৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। ব্যক্তিগত নথির ভিত্তিতে জানা গেছে, তারা আইনানুগ উপায়ে রোমানিয়াতে প্রবেশ করেছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে অভিবাসী চোরাচালান এবং ট্রাকে লুকিয়ে থাকা বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে রাজ্যের সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এদিকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি প্রবেশে অভিবাসীদের ঢল ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে এবার নতুন আইন প্রণয়ন করেছে দেশটি।
আইনে বলা হয়েছে, যারা অবৈধ অভিবাসীদের ইতালিতে আনার সঙ্গে জড়িত, তাদের ১০ থেকে ৩০ বছরের জেল এবং নৌকাচালকদের একই সাজার আওতায় আনা হবে।
তবে আইনটিকে বর্ণবাদী বলছেন দেশের বহু নাগরিক। স্থানীয়রা বলছেন, এ সরকার বর্ডার বন্ধ করতে চায়। তারা মানুষের স্বাধীন চলাফেরার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। সমুদ্রপথে আসা অভিবাসীদের ঢল থামানো যাবে না। যুদ্ধ এবং দরিদ্রতা তাদের এই বিপজ্জনক পথ বেছে নিতে সাহস জোগায়। এ সরকার বিত্তশালীদের কথায় চলে।
২০২২ সালে ইতালিতে প্রবেশ করেছে ১ লাখ ৫ হাজার ১২৯ জন অভিবাসী। তাদের মধ্যে ১৪ হাজার ৯৮২ জন বাংলাদেশি। এদিকে চলতি বছর এখন পর্যন্ত এসেছে ২০ হাজার ৪৬ জন, তাদের মধ্যে ১ হাজার ৬২৯ জন বাংলাদেশি রয়েছেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ বাংলাদেশি বিদেশে বসবাস করছেন। এদেরকে বাংলাদেশি ডায়াস্পোরা অর্থাৎ প্রবাসী বাংলাদেশি বলা হয়। তাদের প্রথম প্রজন্মের অভিবাসীরা আর্থিক অবস্থার উন্নতি কিংবা দারিদ্র্য থেকে বাঁচতে বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলেন। বিশ্বের চতুর্থ বৃহৎ অভিবাসী গোষ্ঠী বাংলাদেশের নাগরিক। অর্থাৎ অভিবাসীদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চতুর্থ স্থানে।
ডিসপ্লেসমেন্ট ট্র্যাকিং ম্যাট্রিক্স (ডিটিএম) ইউরোপের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে ৪ হাজার ৫১০ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি সমুদ্র ও স্থলপথে ইতালি, মাল্টা, স্পেন বা গ্রিস হয়ে ইউরোপে এসেছেন। বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে সর্বাধিক আশ্রয়প্রার্থী নিবন্ধিত হয়েছেন ইতালিতে। তাদের স্থল ও সমুদ্রপথে আগমনের হার প্রায় ৯২ শতাংশ। তাছাড়া, একই বছর পশ্চিম বলকান দেশগুলো অতিক্রম করার সময় প্রায় ৮ হাজার ৮৪৪ বাংলাদেশি নাগরিককে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
আন্তর্জাতিক অভিবাসনের ক্ষেত্রে এখনও অর্থনৈতিক বিষয়গুলোই প্রধান। যারা ইউরোপে যাচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগই ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সি। অনেকেই লিবিয়া হয়ে ইউরোপের দিকে এগুতে থাকেন।
সরকারি তথ্য অনুসারে, ইতালিতে প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশি অভিবাসী বসবাস করছেন। তারা কৃষিকাজ, জাহাজ নির্মাণ এবং ফুটপাতের ব্যবসাসহ বিভিন্ন খাতে নিযুক্ত রয়েছেন। ইইউ’র অন্য কোনো দেশে এত বেশি বাংলাদেশি অভিবাসী নেই। জনসাধারণের মধ্যে একটা ধারণা আছে, ইতালি বিদেশিদের প্রতি খুব বন্ধুপ্রতিম। ইতালি মাঝে মাঝে অনিয়মিত অভিবাসী শ্রমিকদের বৈধতা দিয়ে থাকে। যে কারণে অনেকে মনে করেন কোনো না কোনোভাবে দেশটিতে ঢুকতে পারলে কোনো না কোনো এক সময় আইনি মর্যাদা পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন
- ডিভি লটারি আবেদনের নিয়ম
- ইউরোপ যাওয়ার আগে যা জানা প্রয়োজন
- লন্ডনের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তথ্য ২০২৩
- গ্রিসে নিখোঁজের দেড় মাসেও খোঁজ মিলেনি হবিগঞ্জের ওয়াহিদ আলীর
- অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা ২০২৪ আবেদন করবেন যেভাবে
- বিনা খরচে জার্মানি ওয়ার্ক ভিসা ২৬ হাজার কর্মী নিচ্ছে জার্মানি
- বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে: আমিরাতে তথ্যমন্ত্রী
- মৌলভীবাজারের জুনেদ পেলেন ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সম্মাননা
- ভুয়া বিয়ের নিমন্ত্রণে কানাডায় যাওয়ার পথে আটক ৪২ বাংলাদেশি
- স্বচ্ছতা আনতে উন্মুক্ত লটারীর মাধ্যমে ভাতা কার্ডের তালিকা তৈরি