Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৬ ১৪৩২

আবুল হায়দার তরিক

প্রকাশিত: ১৪:০৮, ২৩ এপ্রিল ২০২২

রাশিয়া ইউক্রেন সংকট : ইউরোপ গমনে সতর্কবার্তা

সাম্প্রতিক এই সময়ে যারা  স্টুডেন্ট ভিসা, বা অন্য কোন ভিসায় ইউরোপের দেশগুলোতে যাওয়ার তোরজোড় শুরু করছেন তাদের উদ্দেশ্য ছোট্ট একটা পরামর্শ। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে এই সময়ে ইউরোপের দেশগুলোতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত একটু ভেবে-চিন্তে নিন। বর্তমান পরিস্থিতি খুবই আশঙ্কাজনক। এর মধ্যে দালাল দৌরাত্ম্যের কথা না হয় বাদ দিলাম। রাশিয়া এবং পশ্চিমাদের বিষয়টির দিকেই নজর দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নিন। একদিকে সম্পুর্ন পশ্চিমা বিশ্ব, অপরদিকে অস্তিত্ব রক্ষায় আগ্রাসী রাশিয়া। 

ইতিমধ্যে রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযানকে কেন্দ্র করে রাশিয়া যে সকল বার্তা দিয়ে আসছিলো তার প্রায় সবগুলো বাস্তবায়ন করেছে। তারা এটাও বলে রেখেছে, যদি প্রয়োজন হয় তাহলে পারমাণবিক হামলা করবে। গত ২০ এপ্রিল রাশিয়া যে পারমাণবিক মিসাইল পরীক্ষা করেছে, সেটি ১৮ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ফ্রান্সের মত একটি রাষ্ট্র ধ্বংস করে দিতে পারে। আর প্রয়োজন রাশিয়া যে তা করবে না তার কোন নিশ্চয়তা নেই।

এদিকে এই যুদ্ধ দীর্ঘ হওয়ার আবাস পাওয়া গেলেও, শেষ হওয়ার কোন আবাস নেই। এর মধ্যে পশ্চিমা দেশগুলোর ভুমিকা আগুনে ঘি ঢালার মত। ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটো তে যোগ দেওয়ার উত্তেজনা এখত চরমে। তুরস্ক ইতিবাচক দিকে এগিয়ে গেলেও মোড়ল ভুমিকার দেশগুলো চায় না এ যুদ্ধ বন্ধ হোক। 

বিশ্ব রাজনীতি থেকে রাশিয়াকে একঘরে করে রাখতে ইউক্রেন যুদ্ধ এখন প্রধান হাতিয়ার। মোড়লরা যদি শান্তি চাইতো তাহলে রাশিয়ার এই আগ্রাসন এতো ভয়ংকর হতো না। এদিকে দাদার মন রক্ষা করতে রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জ্বালানী সংকটে পড়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রায় সকল দেশ। এই অবস্থায় কোন বিকল্প জ্বালানী যোগানও পাওয়ার আশঙ্কা অতি সহজ নয়। তাই এই পরিস্থিতির একটা ইতিবাচক দিক না দেখে ইউরোপে যাওয়ার সিদ্ধান্তে একটু ধীর গতিতে অগ্রসর হওয়া উচিৎ। 

কেননা কেউ অস্তিত্ব সংকটে পড়লে আঘাত করার বিন্দু পরিমাণ সুযোগটাও কাজে লাগাতে চায়। আর রাশিয়া তো রাঘব বোয়াল। রাশিয়ার সাথে আছে চীন, বিপক্ষে নয় আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত। 

ইতিমধ্যে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। কৃষি উপাদান, ভোজ্য তেল, জ্বালানী তেল, গ্যাস, খাদ্য সামগ্রী সহ সবকিছুর দাম রেকর্ড মাত্রায় বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এই অবস্থায় আগামী দিনগুলোতে ইউরোপের দেশগুলোর পরিস্থিতি কেমন থাকবে, বা এই যুদ্ধ পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়বে কিনা তাও ভাবতে হবে। পরিস্থিতি এখনও শান্তির দিকে নেই। আর তা এশিয়ার দেশগুলোর বুঝা উচিৎ। এটাও বুঝা উচিৎ, কোন কমেডিয়ান রাষ্ট্র নায়ক হলে দেশের পরিস্থিতি কেমন হয়। ইউক্রেনের দিকে তাকিয়ে এই বিষয়টিও উপলব্ধি করা প্রয়োজন। 

আমরা দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নয়নশীল দেশের জনগণ। আমাদের ধারণা ইউরোপ বা আমেরিকায় গেলে উন্নত জীবন গড়তে পারবো। তাই আমরা মনপ্রাণ চেষ্টা করি ইউরোপ বা আমেরিকা বা কানাডা অস্ট্রেলিয়ার মত দেশগিলোতে যাওয়ার। এই চেষ্টা এক দিক থেকে ইতিবাচক হলেও বস সময় ইতিবাচক নয়। কখনো কখনো এই আকাঙ্খা বিপদ ঢেকে আনে। তাই আমাদের দেশের ইউরোপ গমনে আগ্রহীদের গভীরভাবে ভাবনা-চিন্তা করে ফাইনাল সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া উত্তম।

আবুল হায়দার তরিক, লেখক ও সাংবাদিক

 

আইনিউজ ভিডিও 

মানসিক চাপ কমাবেন যেভাবে

বয়স পঞ্চাশের আগেই বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা

খালি পেটে ঘুমালে যেসব ক্ষতি হয়

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়