মো. রওশান উজ্জামান রনি
ইউরোপ
ক্রোয়েশিয়ার ভিসা প্রসেস কীভাবে করবেন
ক্রোয়েশিয়ার ভিসা প্রসেস | ছবি আই নিউজ
ক্রোয়েশিয়ার ভিসা; সাম্প্রতিককালে ইউরোপের দেশ ক্রোয়েশিয়া সেনজেনভুক্ত হওয়ার পর থেকে মূলত বাংলাদেশিদের ইউরোপে আসার যে স্বপ্ন সেটিই কিন্তু অনেকটা সহজ হয়ে গিয়েছে৷ বিশেষ করে ইউরোপের অন্য কোনও দেশে যারা অবৈধভাবে বসবাস করছেন, তাদেরও কিন্তু এই ইউরোপে স্থায়ী হওয়ার জন্য ক্রোয়েশিয়া একটা অন্যতম সুযোগ হতে পারে।
ক্রোয়েশিয়ার ভিসা নিয়ে আজকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো তুলে ধরতে চাই। আর তা হল আপনারা যারা বাংলাদেশ থেকে ক্রোয়েশিয়া আসতে চান বা অন্য কোনও দেশ থেকে ক্রোয়েশিয়া আসতে চান আসার প্রক্রিয়া গুলো কি কি এবং আপনার সে ক্ষেত্রে কী কী ডকুমেন্টস লাগবে? কত সময় লাগতে পারে। এখানে আসার পর আপনি কী কাজ করবেন, কত টাকা ইনকাম করতে পারবেন এবং এই পুরো প্রসেসটি করতে আপনার কত টাকা খরচ হতে পারে। আর এখানে আসার পর আপনার স্থায়ী হতে কতদিন সময় লাগতে পারে এই বিষয়গুলোই স্টেপ বাই স্টেপ তুলে ধরব। তাহলে আপনি ওভারঅল একটি ধারণা পেতে পারেন। যে আপনি কীভাবে এই দেশটিতে আসবেন, কী ভাবে এগোবেন, আপনার কত কি খরচ হবে এবং আপনি আদৌ আসবেন কি না।
ক্রোয়েশিয়াতে আপনি আসবেন কি না, সিদ্ধান্ত নিলেন যে, হ্যাঁ, আপনি ক্রোয়েশিয়া আসতে চান। ক্রোয়েশিয়ার ভিসা পেতে এখন আপনি কী করবেন? প্রথম যে স্টেপটি আপনার হবে সেটি হচ্ছে আপনাকে একটি ওয়ার্ক পারমিটের ব্যবস্থা করতে হবে। এই ওয়ার্ক পারমিট আপনি কীভাবে পেতে পারেন। আপনি নিজেই ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারেন অথবা কোন এজেন্সির মাধ্যমে। তবে নিজের যে প্রক্রিয়া সেটি অনেক জটিল প্রক্রিয়া এবং ভিসা না পাওয়ার সম্ভাবনা ৯৯%। তবে সে ক্ষেত্রে আপনি এজেন্সির মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট ম্যানেজ করতে পারেন। সেটা কীভাবে করবেন সেটা আমি ডিটেল্স আরো বলবো।
ক্রোয়েশিয়ার ভিসা পেলে আপনাকে একটি ওয়ার্ক পারমিট ম্যানেজ করতে হবে। এই ওয়ার্ক পারমিট ম্যানেজ করার ক্ষেত্রে আপনার কী কী ডকুমেন্টস লাগবে, সেই ডকুমেন্টস গুলো লিস্ট হলো, আপনার একটি বাংলাদেশের পাসপোর্ট থাকা লাগবে। আপনাকে বাংলাদেশের একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিতে হবে। আপনার যে অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট গুলো রয়েছে, আপনি যদি এস এস সি পাশ হয়ে থাকেন বা এস এইস সি পাশ হয়ে থাকেন বা স্নাতক, স্নাতকোত্তর যাই হোক আপনার যে পাবলিক পরীক্ষা অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট গুলো রয়েছে, যে পর্যন্তই পড়াশোনা করেছেন সেই সার্টিফিকেট গুলো আপনি ওঠাবেন। এরপর যে ডকুমেন্টটি আপনার লাগবে বেসিক ডকুমেন্ট হিসেবে সেটি হচ্ছে, আপনার পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে। তারপর আপনার যে ডকুমেন্টস গুলো লাগতে পারে সেটি হচ্ছে আপনার বাংলাদেশে যে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। আপনি যদি কোথাও দীর্ঘদিন কাজ করে থাকেন কোনও কোম্পানিতে তাহলে আপনি সেখানে আপনার যে কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট সেই সার্টিফিকেট তুলবেন। এই কয়েকটি ডককুমেন্ট দিয়ে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করা যায়। ক্রোয়েশিয়ার ভিসা জন্য আপনি যে কোম্পানিতে আবেদন করবেন তারাও আপনার কাছে মুলত এই ডকুমেন্ট গুলোই চাইবে। এই ডকুমেন্টস গুলো দিয়ে যখন আপনার একটি ওয়ার্ক পারমিট ম্যানেজ হবে এবং ম্যানেজ হওয়ার পর কিন্তু আপনাকে ভিসার জন্য যে প্রসেসিং আপনাকে ভিসা দেওয়া হবে ক্রোয়েশিয়ার। মূলত এই ভিসা প্রসেসিংটি যে আপনাকে ওয়ার্ক পারমিটের ব্যবস্থা করে দেবে যে এজেন্সি তারাই কিন্তু আপনাকে এই ভিসার ব্যবস্থা করে দেবে।
অনেকের এক্ষেত্রে প্রশ্ন থাকে যে, কতদিন সময় লাগতে পারে এই ওয়ার্ক পারমিট ম্যানেজ করার জন্য এবং ভিসা প্রসেসিং করার জন্য। সর্বোচ্চ আপনার চার থেকে ছয় মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে আপনার এই ওয়ার্ক পারমিট এবং ক্রোয়েশিয়ার ভিসা পাওয়ার জন্য। ধরেন আপনি ক্রোয়েশিয়ার ভিসা পেয়ে গেলেন। এরপর আপনি যথারীতি ফ্লাইটে করে যাবেন। অর্থাৎ ক্রোয়েশিয়াতে আসবেন। ক্রোয়েশিয়াতে আসার পর এবার আপনি কত দিনের রেসিডেন্স পাচ্ছেন। এটি সাধারনত আপনি যে কোম্পানির ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে আসছেন সেই কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় এই কাজটি হয়ে থাকে। আপনার ক্রোয়েশিয়ার রেসিডেন্স প্রাপ্তির যে প্রক্রিয়াকরণ এখানে বাড়িভাড়া ও আপনার ওয়ার্ক পারমিট এবং আপনার যে রেসিডেন্স পাওয়ার যে প্রক্রিয়া সেটা সাধারণত আপনার যে কোম্পানির মাধ্যমে আপনি আসছেন সেখানেই করে থাকে। সেক্ষেত্রে তারা আপনাকে অনেক সাহায্য করে থাকবে। আর এটি করতে আপনার এখন ক্রোয়েশিয়াতে এক থেকে দেড় মাস মতো সময় লাগবে। এর মধ্যে কিন্তু আপনি ক্রোয়েশিয়াতে এসে আপনার যে রেসিডেন্স কার্ড অর্থাৎ এখানে বসবাসের যে অনুমতি এবং কার্ড যেটাকে বলা হয়ে থাকে সেটাই আপনি পেয়ে যাবেন। মোটামুটি দেড় মাসের মতো সময় লাগতে পারে।
ক্রোয়েশিয়ার ভিসা পেতে কত টাকা খরচ হবে? এই যে প্রসেস গুলো বললাম, আপনি আসলেন, সবকিছু ঠিক আছে, কিন্তু কত টাকা খরচ হবে। হ্যাঁ, যেহেতু শুরুতেই বলেছি যে বাংলাদেশ থেকে যেতে আর ইউরোপের অন্য কোনও দেশ থেকে বা মিডল ইস্টের কোনও দেশ থেকে ধরেন আপনি আসতে চান। আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে হলে যে এজেন্সিগুলো কাজ করে তারা মূলত যেহেতু ইউরোপের দেশ এবং সেনজেনভুক্ত দেশ বুঝতেই পারছেন আপনি এখানে এসে অন্য যে কোনও দেশে চলে যেতে পারবেন বৈধভাবে। আপনি প্রায় ২৭ টি দেশের মধ্যে উইদাউট ভিসা আপনার এই দেশে ভালো না লাগলে আপনি চলে যেতে পারেন। সেই কারণে বেশ ডিমান্ড রয়েছে এই দেশটির বর্তমানে। সে ক্ষেত্রে এজেন্সিগুলো আপনার কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত নিতে পারে। কেউ কেউ হয়তো একটু কম নিতে পারে হয়তো ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা। তবে তার সম্ভবনা খুবই কম এবং ১২লাখ টাকার বেশিও নিতে পারে এটা জাস্ট একটা আইডিয়া দিয়ে রাখলাম এরকম মতো টাকা খরচ হতে পারে।
তবে আপনি যদি ইউরোপের অন্য কোনও দেশ থেকে ক্রোয়েশিয়ার ভিসা নিয়ে আসতে চান এই দেশটিতে ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে বৈধ হওয়ার জন্য। তাহলে সেক্ষেত্রে মনে হয় না যে এত টাকা লাগবে। আপনি কোনও এজেন্সি ছাড়াই আপনি ইউরোপের অন্য কোনও সেনজেনভুক্ত দেশ থেকে যদি আপনি ক্রোয়েশিয়া আসেন আপনি এখানে একটা জব ম্যানেজ করে নিজেই নিজের কাজ করতে পারবেন। সেটা আপনার জন্য খুবই কনফিনিয়েন্ট হবে এবং আপনার খরচ এক্ষেত্রে আপনার কোনও কোম্পানিকে কোনও টাকা দেওয়া লাগবে না। ক্রোয়েশিয়ার ভিসা পুরো প্রসেসটি সম্পর্কে আপনারা জানলেন। ক্রোয়েশিয়া নিয়ে কনটেন্টটি আমি মনে করি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আই নিউজ/আর
আরও পড়ুন
- ডিভি লটারি আবেদনের নিয়ম
- ইউরোপ যাওয়ার আগে যা জানা প্রয়োজন
- লন্ডনের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তথ্য ২০২৩
- গ্রিসে নিখোঁজের দেড় মাসেও খোঁজ মিলেনি হবিগঞ্জের ওয়াহিদ আলীর
- অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা ২০২৪ আবেদন করবেন যেভাবে
- বিনা খরচে জার্মানি ওয়ার্ক ভিসা ২৬ হাজার কর্মী নিচ্ছে জার্মানি
- মৌলভীবাজারের জুনেদ পেলেন ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সম্মাননা
- বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে: আমিরাতে তথ্যমন্ত্রী
- ভুয়া বিয়ের নিমন্ত্রণে কানাডায় যাওয়ার পথে আটক ৪২ বাংলাদেশি
- স্বচ্ছতা আনতে উন্মুক্ত লটারীর মাধ্যমে ভাতা কার্ডের তালিকা তৈরি