Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৫ ১৪৩২

গোলাম মুর্শেদ

প্রকাশিত: ২০:০১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

বিদেশ ভ্রমণে ফ্লাইট প্রস্তুতি

বিদেশ ভ্রমণে ফ্লাইট প্রস্তুতি

বিদেশ ভ্রমণে ফ্লাইট প্রস্তুতি

যারা বাংলাদেশের বাইরে বিভিন্ন উন্ন দেশে যেতে ইচ্ছুক এবং ইতিমধ্যে সকল ঝামেলা শেষ করে এয়ার টিকেট হাতে নিয়ে বসে আছেন তাদের জন্য কিছু টিপস। মূলত, প্রথমবার বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে আপনার ব্যাগেজ কেমন হওয়া উচিত বা কিরকম থাকলে সুবিধা হবে তা জানাব আজকের এই প্রতিবেদনে। আর এই প্রতিবেদনটি লিখেছেন, সদ্যই জার্মানিতে যাওয়া একজন বাংলাদেশি তরুণ গোলাম মুর্শেদ। 

১. ভ্রমণের আগে অবশ্যই দামী লাগেজ কিনে নিবেন যাতে তা ভেঙেচুরে না যায়। ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে এ নিয়ে কী পরিমাণ ঝামেলা হয় কল্পনাও করতে পারবেন না। আরএফএল বা প্রেসিডেন্টের অথবা লটোর ৫/৬ হাজারের লংলাস্টিং ব্যাগ কিনা খুবই প্রয়োজনীয়। তাছাড়া বুকে চেস্ট ব্যাগ রাখতে পারেন পাসপোর্ট, টিকেট, বোর্ডিং পাস বা খুচরো ডলারের জন্য।

২. লাগেজের সাইজ ২৮ হলে বেশি মালামাল নিতে পারবেন, তবে টিকেটে নির্ধারিত ওজন থেকে ০.৫/১ কেজি ওজন কম নেয়াই ভালো। যদিও প্রথমবার ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের জন্য ১/২ কেজি বেশি হলেও ছাড় দেওয়া হয়। হ্যান্ড লাগেজে ৭ কেজির বেশি সম্ভবত এলাও করা হয় না, তবে সাইজ ১৮/২০ এর উপরে হলে তা নিয়ে ঝামেলা হতে পারে।

৩. লাগেজে স্টিলের জিনিসপত্র, ছুরি, লাইটার ইত্যাদি বহন না করাই ভালো। সিগারেট ১০ প্যাকেটের পারমিশন থাকলেও ১৫-২০ প্যাকেট আনা যেতে পারে। এয়ারপোর্টে লাগেজ তেমন চেক করা হয় না বা খুলে দেখা হয় না। তবে লাগেজে কী কী নিবেন তা আগে থেকে লিস্ট করে নিলে ভালো হয়।

৪. আপনি যদি কানাডাগামী হয়ে থাকেন তাহলে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে একাধিকবার ইন্টারভিউয়ের সম্মুখীন হতে পারেন। আত্মবিশ্বাসের সাথে উত্তর দিতে হবে কারণ ইমিগ্রেশন পুলিশ ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদেরও অনেক ক্রস কুয়েশ্চন করে থাকে। তাছাড়া সব ডকুমেন্টস হাতের কাছে রাখা বাধ্যতামূলক। 

৫. অবশ্যই এয়ারপোর্টের ভেতর "হেল্প ডেস্ক" থেকে আপনার কাউন্টার, সারি ইত্যাদি জেনে নিবেন। আমরা সাধারণত সিলেটিরা এক্ষেত্রে আনাড়িদের থেকে সাহায্য নিতে গিয়ে ঝামেলায় পড়ে যাই অথচ হেল্প ডেস্কে যেতে দ্বিধাবোধ করি। আর হ্যাঁ ৭/৮ ঘন্টার বেশি লম্বা ফ্লাইট হলে ইকোনমি ক্লাস না নেয়াই ভালো। আমার ১৩ ঘন্টার ফ্লাইট জিন্দা লাশ করে দিছিলো।

৬. ডোমেস্টিক ফ্লাইটের এক থেকে দেড় ঘন্টা এবং ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইটের তিন থেকে চার ঘন্টা আগে এয়ারপোর্টে ঢুকে যাবেন। ভেতরে সময় কীভাবে যায় তা বোঝাই মুশকিল। (মজার ব্যাপার হচ্ছে আমার ডোমেস্টিক ফ্লাইট ৫০ মিনিট এডভান্স হয়েছিল যেখানে অন্যান্য ফ্লাইটগুলো সাধারণত ১৫-৩০ মিনিট ডিলে হয়। এটা আমার এমন প্রথম অভিজ্ঞতা।) 

৭. এয়ারপোর্টে নাস্তা করার আগে দামটা জেনে নিবেন। নাহলে পরে আমার পাশের এক আংকেলের মত ছোট এক স্যান্ডুইচ এর দাম ২০০ টাকা শুনে অবাক হয়ে যাবেন। তবে আমি যেখানে নাস্তা করেছি সেখানে খুবই সুলভ মূল্যেই সবকিছু পাওয়া গিয়েছিল।

৮. প্রত্যেক এয়ারপোর্টে ফ্লাইট ইনফরমেশন ডিসপ্লে সিস্টেম বা FIDS নামক অনেকগুলো স্ক্রিন থাকে যেখানে আপনি নজর রাখলে আপনার ফ্লাইটের সময়, গেইট নং ইত্যাদি জানতে পারবেন। নাহলে অনেক সময় ভুল গেইটে চলে গেলে ফ্লাইট মিসও হয়ে যেতে পারে। মনে রাখবেন, ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টগুলো আপনার ধারণার থেকে অনেক অনেক বড়।

৯. এয়ারপোর্টে যথাসম্ভব সজাগ থাকবেন, ঘুমানোর ব্যবস্থা বিমানের ভেতর ভালোই পাওয়া যায়। চাইলে নেক পিলোও কিনে নিতে পারেন আগেভাগেই। বিমান ফ্লাই করার পর সিট এডজাস্ট করে ভালো ঘুম দিন।

১০. কম সময়ের ট্রানজিট থাকলে চোখ কান খোলা রেখে দ্রুত চলতে হবে এবং সবসময় এয়ারপোর্টের স্টাফদের থেকে সহায়তা নিতে হবে। আমার কাতারে মাত্র ৪০/৪৫ মিনিটের ট্রানজিট ছিল, প্রায় দৌড়ের ওপর থেকেই ফ্লাইট ধরতে হয়েছে। তবে এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষের কোনো ভুলের কারণে ফ্লাইট মিস হলে তারা পরের ফ্লাইট ফ্রি (মাঝে মাঝে গিফট কুপনসহ) করে দিবে।

১১. কানাডার ক্ষেত্রে প্রথম যে এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করবেন সেখানেই ইমিগ্রেশন হবে। আমারটা হয়েছিল মন্ট্রিলে এবং প্রথমে একটি কুপন কালেক্ট করতে হয় ইমিগ্রেশন এর আগে। পুরো ব্যবস্থাই সেল্ফ সার্ভিসের উপর এবং মন্ট্রিল এয়ারপোর্টে স্টাফদের থেকে সহায়তা একটু কমই পাবেন। তাছাড়া এখানে ইংরেজি থেকে ফ্রেঞ্চ একটু বেশিই চলে।


লেখক- গোলাম মুর্শেদ, মনট্রিয়েল, কানাডা থেকে

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়