Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, রোববার   ২০ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৬ ১৪৩২

সাগর শুভ্র, শাবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:২৫, ১ মার্চ ২০২৫
আপডেট: ২৩:০৩, ২১ মার্চ ২০২৫

ভর্তি পরীক্ষায় জোর করে নারী শিক্ষার্থীর হিজাব খোলার অভিযোগ শাবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে

শিক্ষার্থীর অসম্মতি থাকা স্বত্বেও জোর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার হলে কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীর হিজাব খোলার অভিযোগ উঠেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষক  বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফারজানা সিদ্দিকা রনি।

গতকাল শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়টির ভর্তি পরীক্ষার হলে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই হলে পরীক্ষা দেয়া একাধিক শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকগণ। তাদের অভিযোগ একাধিকবার ডিভাইস আছে কিনা সেটা চেক করার পরও তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের দিক থেকে হিজাব পড়তে দেয়া হয় নি।

এর আগে নিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের এক কোর্সের প্রেজেন্টেশনে এক নারী শিক্ষার্থী হিজাব না খোলায় তার প্রেজেন্টেশন নেন নি বলেও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ক্লাসে নিয়মিত ওই শিক্ষার্থী সবার সামনে হিজাব খুলতে অসম্মতি জানালে তিনি তার প্রেজেন্টেশন নিতে অপারগতা প্রকাশ ও তাকে হেনস্তা করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে ঐ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। এমনকি ওইসময় কেউ যদি হিজাব খুলতে অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে তাদের প্রেজেন্টেশন নিবেন না বলেও সেসময় জানান তিনি। এরপর কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীরা বের হয়েও চলে আসেন বলে জানা যায়।

এদিকে গতকাল বিকেলে শাবিপ্রবির প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ‘এ’ (বিজ্ঞান) ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অ্যাকাডেমিক ভবন-ডি এর ২০০৬ নং কক্ষে হিজাব খোলা নিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকগণ।

তারা জানান, হিজাব এবং নিকাব খুলতে অপারগতা প্রকাশ করলেও ওই শিক্ষক নিয়মের কথা বলে হিজাব খোলা রাখতে বাধ্য করেন৷ ডিভাইস আছে কিনা সেটা একাধিকবার চেক করার পরও কেন খোলা রাখতে হবে হিজাব সেটা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। আমরা অন্য পরীক্ষার হলগুলোতেও খোঁজ নিয়েছি, কিন্তু সেখানে এ নিয়ে কোন অভিযোগ পাই নি বা অন্য শিক্ষকবৃন্দ অনেক নমনীয় ছিলেন। প্রথমেই যদি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে এমন আচরণ দেখে শিক্ষার্থীরা তাহলে শিক্ষার্থীরা কি শিখবে তাদের কাছ থেকে এমন প্রশ্ন থেকেই যায়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. ফারজানা সিদ্দিকা রনি বলেন, হিজাব তো খুলতে বলাই হয়েছে। নয়তো আমরা কীভাবে শনাক্ত করবো। তারা মুখ দেখিয়ে পরে আবার হিজাব দিয়ে মুখ কাভার করে ফেলছে। আর এটা আমাদের উপর  মহল থেকেই নির্দেশনা ছিল। যে মুখ খুলে এডমিট কার্ডের ছবির সাথে মিল আছে কিনা সেটা দেখতে হবে এবং কানে কোন ডিভাইস আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করতে হবে। এজন্য তাদেরকে মুখ খুলতে হয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, এটা যেহেতু নির্দেশনা দেওয়া তাই প্রতিটি দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরাই এটা করেছে। এখানে আমি বলেই হয়ত তুমি আমাকে কল করেছো এবং এটা নিয়ে কথা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অ্যাকাডেমিক ভবন-ডি এর কো-অরডিনেটরের দায়িত্বে থাকা পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. আজিজুল বাতেন বলেন, এ বিষয়ে আমি আপনার থেকেই প্রথম শুনালাম। এই বিষয়ে আমি অবগত নই।

সেন্টারের ইনচার্জ অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসাইন বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। তবে এডমিট কার্ডের সাথে প্রকৃত চেহারার মিল রয়েছে কিনা সেটা দেখতে বলা হয়েছিল। তাই হয়ত এটা করতে বলেছেন তিনি।

সাগর/আইনিউজ

আরও পড়ুন
Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়