আপডেট: ২১:২২, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের চোখে ‘আ ত্ম হ ন ন’
নিজেদের মতামত তোলে ধরেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী
বর্তমান সময়ে যে কয়টি সামাজিক ব্যাধি প্রকট আকার ধারণ করে বারবার আমাদের সামনে প্রত্যক্ষ হচ্ছে রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আ ত্ম হ ত্যা বা ‘আ ত্ম হ ন ন’। যার নেপথ্যে রয়েছে হতাশা নামক বিষবৃক্ষ।
গবেষণায় দেখা গেছে আ ত্ম হ ত্যা র ঘটনাগুলো বেশি ঘটছে বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তাই বিশ্ব আ ত্ম হ ত্যা প্রতিরোধ দিবস (১০ সেপ্টেম্বর) উপলক্ষে আ ত্ম হ ত্যা নিয়ে আই নিউজে নিজেদের মতামত তোলে ধরেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের থেকে মতামত নিয়েছেন মোহাম্মদ রাজিব।
আ ত্ম হ ত্যা একটি প্রতিরোধযোগ্য বিষয়
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইকবাল লিখেছেন-
'আ ত্ম হ ত্যা বা সু ই সা ই ড' শব্দটি ল্যাটিন শব্দ সুই সে ই ডে য়া র থেকে এসেছে যার অর্থ হলো কোন ব্যক্তি কর্তৃক ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়া। বিভিন্ন কারণে মানুষ নিজের প্রাণ বিনাশ করে থাকে। তার মধ্যে অন্যতম হলো মানসিক অশান্তি বা অবসাদ জনিত কারণ। ব্যক্তিগত জীবনে ব্যর্থতা এবং পারিবারিক ও সামাজিক হেয় প্রতিপন্নের শিকার হয়েও মানুষ আ ত্ম ঘা তী হয়ে ওঠে। যখন মানুষ একাকীত্ব বা অসহায়ত্ব বা ভরসাহীন অনুভব করে তখনই আ ত্ম হ ত্যা করে বসে।
আ ত্ম হ ত্যা মহাপাপ, এ জন্য জঘন্য এ কাজ থেকে বিরত থাকতে অনুপ্রাণিত করতে হবে। সমাজ ও পরিবারকে এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে যাতে কোন ব্যক্তি আ ত্ম হ ত্যা র মতো চরম পদক্ষেপের দিকে অগ্রসর না হয়। আ ত্ম হ ত্যা একটি প্রতিরোধযোগ্য বিষয়। সঠিক সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলে অবশ্যই আ ত্ম হ ত্যা ঠেকানো যায়।
আ ত্ম হ ত্যা থেকে বাঁচতে কল্পনাশক্তি বা ইচ্ছা শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে। ইতিবাচক ভাবনায় নিজেকে সমৃদ্ধ করতে হবে যার ফলে নেতিবাচক ভাবনা থেকে দূরে থাকা যাবে। আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে সেইসাথে এমন মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে যাতে সফলতার সাথে ব্যর্থতাকে মেনে নিতে পারে।
আ ত্ম হ ত্যা প্রতিরোধে পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মো.আরিফ শেখ লিখেছেন-
আ ত্ম হ ত্যা হচ্ছে একটি স্ব-প্রণোদিত বা s e l f i n f l I c t e d মৃ ত্যু। সারা বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে গড়ে একজন করে আ ত্ম হ ন নে র পথ বেছে নিচ্ছে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা,মারাত্মক অসুস্থতা, মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার,দারিদ্র্য ও বেকারত্ব, প্রেম ও পরীক্ষায় ব্যর্থতা ইত্যাদি আ ত্ন হ ত্যা র জন্য চরমভাবে দায়ী।
এছাড়াও নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করার মাধ্যমে আ ত্ম হ ন নে র প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ পায়। আ ত্ম হ ত্যা প্রতিরোধে পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের কারো মধ্যে আত্নহত্যার ইঙ্গিত পেলে দ্রুত মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে,সেই সাথে ঐ ব্যাক্তির ভালোলাগার কাজগুলো করা যেতে পারে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আত্নহত্যা প্রতিরোধে প্রয়োজন ইমার্জেন্সি হটলাইন।
বেলজিয়ামের আত্নহত্যার প্রবণতা রোধে নিয়োজিত হটলাইনের সেবা নিয়ে "কস্ট ইফেক্টিভনেস অব এ হেল্পলাইন ফর সুইসাইড প্রিভেনশন " শীর্ষক এ গবেষণায় বলা হয়েছে, হটলাইনের মাধ্যমে অন্তত ৩৬ শতাংশ ক্ষেত্রে আত্নহত্যার প্রবণতা রোধ সম্ভব।আ ত্ম হ ত্যা নামক চরম অভিশাপ রোধে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সভা সেমিনার আয়োজন করতে হবে।
খাদিজাতুল কোবরা
শিক্ষার্থী,কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
আ ত্ম হ ত্যা অমূল্য জীবনের অপচয়। এটি একটি গুরুতর সমস্যা যা পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং দেশের জন্য একটি অপরিমেয় ট্রাজেডি। বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ১০ হাজার জন আ ত্ম হ ত্যা করে। আ ত্ম হ ত্যা প্রায়ই মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থার সাথে সম্পর্কিত যেমন : বিষণ্নতা, উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি। এটি এখন তরুণদের মধ্যে মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ। আ ত্ম হ ত্যা র প্রবণতা কমিয়ে আনতে শিশুকাল থেকেই মা-বাবার আন্তরিক আচরণ বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। সন্তানকে ছোটবেলা থেকে ব্যর্থতা মেনে নিয়ে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার সাহস দিতে হবে। অনেকক্ষেত্রে আ ত্ম হ ত্যা প্রবণ ব্যক্তি আমাদের নানাভাবে তার পরিস্থিতি সম্পর্কে সংকেত দেয়। তাই এই ব্যাপারে সচেতন হওয়াটা অতীব জরুরি। যে সকল যুবক - যুবতীরা আ ত্ম হ ত্যা করার প্রয়োজন অনুভব করে তারা সরাসরি কারো কাছে সাহায্য চাইতে পারে না। যখন একজন যুবক আ ত্ম হ ত্যা করতে পারে এমন লক্ষণ দেখা যায়,তখন বিশেষ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত-তাদেরকে সরাসরি জিজ্ঞেস করতে হবে যে সে আ ত্ম হ ত্যা র কথা ভাবছে কিনা,তাদেরকে আশ্বস্ত করতে হবে যে সবসময় পরিস্থিতি একই রকম থাকবে না, তাদেরকে একা ফেলে যাওয়া যাবে না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাকিব লিখেছেন-
আ ত্ম হ ত্যা বর্তমান যুগে বড় চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে এর মাত্রা সীমাহীন। ব্যক্তিগত,পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে আ ত্ম হ ত্যা র সংখ্যা কমানো সম্ভব। বিশেষ করে, ব্যক্তিগতভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার কারণে অধিকাংশ মানুষ আ ত্ম হ ত্যা করে।
আ ত্ম হ ত্যার অন্যতম আরেকটি কারণ হলো পারিবারিক কলহ। পারিবারিক ভাবে সবাই একসাথে অধিক পরিমাণে সময় কাটানো ও একে অপরের সাথে খোলামেলা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
অপরদিকে, সামাজিক চাপে অনেক ক্ষেত্রে মানুষ আ ত্ম হ ত্যা র দিকে পরিচালিত হয়। এজন্য সামাজিক উন্নয়ন মুলক ভালো কর্মকান্ডে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে হবে।ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে এবং সবসময় ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করতে হবে।
যেকোনো ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দিলে, যত দ্রুত সম্ভব মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করতে হবে। বিষন্নতা দূর করার জন্য প্রকৃতির সাথে সময় কাঠানো যেতে পারে।
আইনিউজ/এইচএ
আইনিউজে আরও পড়ুন-
- ২০ হাজার গানের জনক গাজী মাজহারুল আনোয়ার ও তার কীর্তি
- প্রেম-ভালোবাসার ১০ উপকারিতা : শ্রেষ্ঠ কিছু প্রেমের গল্প
- কোমরে বাশি, হাতে তালি — গানই মদিনা ভাই’র জীবন-মরণ
দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি
সবচেয়ে সুন্দরী নারীদের দেশ ।। Most beautiful woman in the world ।। Eye News
যে গ্রামে পুরুষ ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা হচ্ছেন নারীরা | Women are pregnant without men | Kenyan Girls | Eye News
চুল বেঁধে ঘুমিয়ে নিজের যে ক্ষতি করছেন ।। Hair loss problems
পায়খানা ও প্রস্রাব দীর্ঘক্ষণ চেপে রাখলে যে ক্ষতি হয়??
- মাস্টার্স পরীক্ষার ফলাফল ২০২৩
- এসএসসি বোর্ড চ্যালেঞ্জ এর রেজাল্ট ২০২৩
- এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩ | এসএসসি ফলাফল
- অনার্স ১ম বর্ষ পরীক্ষা রুটিন ২০২৩
- এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩ কবে হবে
- চবি ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩
- ‘বাঁচতে চাইলে পরীক্ষায় এ্যাটেন্ড কর’, ছাত্রীকে শাবি শিক্ষক
- ওসমানী মেডিকেলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, আন্দোলনে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা
- স্বপ্ন চার্টার্ড একাউন্টেন্ট হওয়া
টিউশনী করে পরীক্ষা দিয়ে গোল্ডেন এ প্লাস পেল সরকারি কলেজের সুমাইয়া - গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩