রোকসানা আক্তার
শিক্ষকতার একাল সেকাল
রোকসানা আক্তার, শিক্ষক
আমার পরিবারে অনেক শিক্ষক। বাবা, দাদা, পরদাদা, বোন, হাসব্যান্ড, ভাতিজা- প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষক তাঁরা। পরদাদাকে দেখিনি। কিন্তু উনার গল্পগুলো দাদীর কাছে শুনে শুনে একটা প্রতিচ্ছবি তৈরি হয়েছে মনে। একজন মহান শিক্ষক নিজের পরিবারের সদস্য ছিলেন- এটা ভাবতেই ভালো লাগে।
আমাদেরকে এই অবস্থা থেকে বের হতে হবে। শিক্ষকদের কোমরের জোর বাড়াতে হবে। অর্থাৎ অর্থনৈতিকভাবে শিক্ষকবৃন্দ স্বচ্ছল থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। মাথায় পরিবার চালানোর চিন্তা নিয়ে সৃজনশীলতা বিকাশ ঘটানো খুব বেশি সম্ভব না।
দাদার শিক্ষক জীবন শুধু দেখেছি বললে ভুল হবে, খুব কাছে থেকে দেখেছি। উনি আমাকে উনার স্কুলেই ভর্তি করিয়েছিলেন। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ঐ স্কুলেই পড়েছি আমি। সেইদিনগুলোর স্মৃতি এখনও চোখে ভাসে। আমি চোখের সামনেই সব দেখতে পাই।
আমার শিশুমনে শিক্ষকতা পেশাটা অসাধারণ মনে হওয়া শুরু তখন থেকেই। সমাজের চোখে একজন শিক্ষক ছিলেন অন্যরকম সম্মানিত ব্যক্তি। কথাও বলতেন সবাই খুব সম্মান করে। সকল ধরনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত থাকতো উনার। মাঝেমধ্যে আমাকে নিতেন উনার সাথে। কতো খাতির যত্ন করতেন সবাই! সেই ঘটনাগুলো আমার মনে ভালো স্মৃতি হয়ে আছে। সমাজের কাছে উনার সম্মানটা আমি শিক্ষকতা পেশার সম্মান মনে করতাম।
চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময়ে উনি অবসরে যাওয়ায় আমি স্কুল পাল্টাই। সেখানেও শিক্ষকদের সাথে সকলের আচরণে খুবই প্রীতির সম্পর্ক বুঝতাম। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে শিক্ষকদের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাসী থাকতে দেখেছি অভিভাবকদের। আর শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের চোখে চোখ রেখেই কথা বলতে পারতো না। পড়া ধরলেও ভয়ে সব উলট পালট করে ফেলতো। এককথায়- শিক্ষক তাদের কাছে সম্মান করার মতো একজন হিসেবে মনে করতো।
এবার আসি একালে। কয়েক মাসেই আমরা শিক্ষকদেরকে যেভাবে নাজেহাল করা হতে দেখেছি। তা সময়ের ব্যবধানে এই পেশার সম্মান কমতে শুরু করেছে- তা সহজেই বুঝা যায়। অভিভাবকদের কাছে হেনস্তা এবং অসম্মানিত হতে দেখছি আমরা। অনেক প্রতিষ্ঠান প্রধান সেগুলো প্রশ্রয় দিয়েই এই অসম্মান করতে পারা বাড়িয়ে দিয়েছেন। দেখেছি অভিভাবকদের সামনেই শিক্ষকদের ডেকে এনে তুলো ধূনতে। শিক্ষার্থীদের সামনেই দেখেছি বকাবকি করতে। অনেক কারণের একটা বড় কারণ আমরা নিজেরাই নিজেদের সম্মান করতে জানি না। প্রভাবশালীদের সাথে সখ্যতা বজায় রাখতে প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ পরিচালনা কমিটিও শিক্ষকদের বিপক্ষে চলে যান সেকেন্ডের মধ্যেই।
আমাদেরকে এই অবস্থা থেকে বের হতে হবে। শিক্ষকদের কোমরের জোর বাড়াতে হবে। অর্থাৎ অর্থনৈতিকভাবে শিক্ষকবৃন্দ স্বচ্ছল থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। মাথায় পরিবার চালানোর চিন্তা নিয়ে সৃজনশীলতা বিকাশ ঘটানো খুব বেশি সম্ভব না।
উপরোক্ত একালের চিত্র খুব বেশি না হলেও কমও না। আমাদের সকলের উচিত নিজেদের সন্তানের মনে শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ করতে শিখানো।
আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস।
এই বিশেষ দিনে সকল সম্মানিত শিক্ষকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। পাশাপাশি শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ করছি- শিক্ষকদের জন্য একটু ভাবুন। তাদের অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা দূর করতে চেষ্টা করুন।
রোকসানা আক্তার, শিক্ষক
ইউটিউবে দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি
দিনমজুর বাবার ছেলে মাহির বুয়েটে পড়ার সুযোগ
শেখ রাসেলকে নিয়ে লেখা কবিতা- `বিশ্বমানব হতেই তবে`
শিশু কিশোরদের জন্য ফেসবুকের নতুন ‘নিয়ন্ত্রণ’ ফিচার
৮০ বছর বয়সে বৃদ্ধা নূরজাহান বেগমের মানবেতর জীবন
বাংলাদেশের সাংস্কৃতি উৎসবে মুগ্ধ বিদেশিনী
লাউয়াছড়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ভাইরাল অজগর সাপ
- মাস্টার্স পরীক্ষার ফলাফল ২০২৩
- এসএসসি বোর্ড চ্যালেঞ্জ এর রেজাল্ট ২০২৩
- এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩ | এসএসসি ফলাফল
- অনার্স ১ম বর্ষ পরীক্ষা রুটিন ২০২৩
- এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩ কবে হবে
- চবি ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩
- ‘বাঁচতে চাইলে পরীক্ষায় এ্যাটেন্ড কর’, ছাত্রীকে শাবি শিক্ষক
- ওসমানী মেডিকেলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, আন্দোলনে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা
- স্বপ্ন চার্টার্ড একাউন্টেন্ট হওয়া
টিউশনী করে পরীক্ষা দিয়ে গোল্ডেন এ প্লাস পেল সরকারি কলেজের সুমাইয়া - গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩