বিনোদন ডেস্ক
আপডেট: ১৯:২০, ২৭ জুন ২০২১
রেহানা মরিয়ম নূর: কানের অফিসিয়াল সিলেকশনে বাংলাদেশের গৌরব
কান উৎসবে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করছে সাদ-বাঁধনরা
নির্মাতা সাদ এবং মূল চরিত্রের অভিনেত্রী বাঁধন।
কান উৎসব। অভিনয়শিল্পী এবং নির্মাতাদের জন্য এক স্বপ্নের নাম। মর্যাদাপূর্ণ আসর কান’র অফিসিয়াল সিলেকশনে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের সিনেমা। নাম ‘রেহানা মরিয়ম নূর’।
কান উৎসবের এই সিলেকশনের মাধ্যমে 'রেহানা মরিয়ম নূর'এর পুরো টিম বাংলাদেশকে বিশ্ব চলচ্চিত্র দরবারে উপস্থাপিত করছে।
এটি পরিচালনা করেছেন নির্মাতা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ। প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজের একজন শিক্ষক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করেই এর গল্প। আর এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন।
ইতোমধ্যেই আয়োজকদের আমন্ত্রণে এতে অংশ নিতে একটি ফ্লাইটে প্যারিসের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন এর অভিনেত্রী-নির্মাতাসহ সিনেমার একটি টিম। আগামী ৬ জুলাই দক্ষিণ ফ্রান্সের সাগরপারের শহর কানের পালে দে ফেস্টিভ্যাল ভবনের গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরে উৎসবের পর্দা উঠবে।
এক ফ্রেমে পুরো টিম।
দেশ ত্যাগ করার আগে বাঁধন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালেও আমরা নিশ্চিত ছিলাম না, ভিসা পাবো কি পাবো না। বিকেলে ভিসা হাতে পেয়েছি। আমাদের চলচ্চিত্রের এমন একটি অংশ হতে পেরে আমি ভীষণ আনন্দিত। এটা জীবনের কত বড় অর্জন, তা বলে বোঝানো যাবে না।’
বাঁধন বলেন, ‘৬ জুলাই শুরু হচ্ছে কান উৎসব। তবে আমরা আগে যাচ্ছি কারণ, ওখানে গিয়ে আমাদের ১০ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। যতটুকু জেনেছি, এবার সারা বিশ্ব থেকে আড়াই হাজার ফিল্ম থেকে প্রতিযোগিতায় স্থান পেয়েছে মাত্র ৪৪টি। এর মধ্যে একটি বাংলাদেশের “রেহানা মরিয়ম নূর”। যার মাধ্যমে প্রথমবার কান উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে বাংলাদেশের কোনও ছবি স্থান পেলো। দোয়া করবেন, যাতে আমরা নতুন কিছু অর্জন নিয়েই দেশে ফিরতে পারি। সব ঠিক থাকলে আগামী ১৮ জুলাই দেশে ফেরা হবে।’
সত্যি ঐতিহাসিক! কান চলচ্চিত্র উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশনে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ প্রথমবারের মতো যুক্ত করেছে বাংলাদেশের নাম। এর নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বাঁধন। তিনি যে সমুদ্রসমান আনন্দে ভাসছেন তা বোঝাই যায়।
ক’দিন পরেই কানের লালগালিচায় পা মাড়িয়ে ইতিহাসের পাতায় ঢুকে পড়বেন বাঁধন। আয়োজকদের অফিসিয়াল আমন্ত্রণ পাওয়া বাংলাদেশের প্রথম কোনো অভিনেত্রী এই সম্মান অর্জন করতে যাচ্ছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, আপাতত ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের মূল কেন্দ্র থেকে একটু দূরে একটি অ্যাপার্টমেন্টে কোয়ারেন্টিনে আছেন বাঁধনসহ সাতজন।
বাঁধন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আমার খুব ভালো লাগছে যে, একদল দারুণ তরুণের সঙ্গে আছি। তারা সবাই খুব ভালো। কারণ আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি সব গোছানো। এমনিতে তো ছেলেদের একটু অগোছালো ব্যাপার থাকে ঘরের ভেতর। কিন্তু সবাই সবকিছু গুছিয়ে রাখছে, রান্নাবান্নার কাজ শেষে পরিষ্কার করছে। সবাই একে অপরকে সহযোগিতা করছে। সত্যি বলতে আমরা একটা পরিবারের মতো। আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া ভালো। কারণ ছবির চিত্রায়নের সময় আমরা একসঙ্গে অনেকদিন পেরিয়ে এসেছি। আমাদের আশা, কোয়ারেন্টিনের ১০ দিন দারুণ কাটবে।
রেহানা মরিয়ম নূরের দৃশ্য।
আঁ সার্তে রিগা
উল্লেখ্য, প্যারিসেই গত ৩ জুন সংবাদ সম্মেলনে অফিসিয়াল সিলেকশন ঘোষণা করেন কান উৎসবের পরিচালক থিয়েরি ফ্রেমো। তার মুখেই শোনা গেছে, ‘আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ, রেহানা মরিয়ম নূর, বাংলাদেশ!’
আঁ সার্তে রিগা বিভাগে নির্বাচিত আরও ১৭টি ছবির নাম জানানো হয় ৩ জুন। এগুলো হলো— মানিবয়েস (সি.বি ই, প্রথম ছবি; অস্ট্রিয়া), ব্লু বায়ো (জাস্টিন চন, যুক্তরাষ্ট্র), ফ্রেডা (জেসিকা জেনেয়ুস, প্রথম ছবি; হাইতি), হাউস অ্যারেস্ট (আলেক্সেই জার্মান জুনিয়র, রাশিয়া), গুড মাদার (আফসিয়া আর্জি, ফ্রান্স), ফায়ার নাইট (তাতিয়ানা হয়েসো, মেক্সিকো), ল্যাম্ব (ভালদিমার ইওহানসন, প্রথম ছবি; আইসল্যান্ড), কমিটমেন্ট হাসান (সেমি কাপলানোলু, তুরস্ক), আফটার ইয়েং (কোগোনাডা, যুক্তরাষ্ট্র), লেট দেয়ার বি মর্নিং (এরান কোলিরিন, ইসরায়েল), আনক্লেনসিং দ্য ফিস্টস (কিরা কোভালেনকা, রাশিয়া), উইমেন ডু ক্রাই (মিনা মিলেভা ও ভ্যাসেল কাজাকোভা, বুলগেরিয়া), গ্রেট ফ্রিডম (সেবাস্টিয়ান মায়েস, অস্ট্রিয়া), লা সিভিল (তেওদোরা আনা মিহাই, প্রথম ছবি; রোমানিয়া/বেলজিয়াম), গাই ওয়ার (না জিয়াজো, প্রথম ছবি; চীন), দ্য ইনোসেন্টস (এসকিল ফুক্ট, নরওয়ে) এবং অ্যা ওয়ার্ল্ড (লরা বন্দেল, প্রথম ছবি; বেলজিয়াম)।
কান চলচ্চিত্র উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশনের একটি বিভাগ ‘আঁ সার্তে রিগা’। এর অর্থ ‘অন্য দৃষ্টিকোণ’। ১৯৭৮ সালে কান উৎসবে এটি চালু করেন জিল জ্যাকব। ফ্রান্সের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিতে সহায়তার জন্য অনুদানসহ তরুণ প্রতিভাবান নির্মাতাদের অভিনব ও সাহসী কাজে উৎসাহ দিতে ১৯৯৮ সাল থেকে আঁ সার্তে রিগায় পুরস্কার চালু হয়। ২০০৫ সাল থেকে ৩০ হাজার ইউরোর পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে এই বিভাগে।
সাদ-বাঁধনদের জন্য শুভকামনা
এবার আঁ সার্তে রিগায় বিচারকদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্রিটিশ নারী নির্মাতা আন্ড্রেয়া আর্নল্ড। তার নেতৃত্বে বিচারকের আসনে থাকবেন আলজেরিয়ার পরিচালক মুনিয়া মেদু, ফরাসি অভিনেত্রী এলজা জিলবারস্তাইন, আর্জেন্টাইন পরিচালক দানিয়েল বরমান এবং মার্কিন পরিচালক মাইকেল অ্যাঞ্জেলো কোভিনো। তাদের মন জয় করে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ কোনো পুরস্কার পেয়ে যায় কিনা সেদিকে তাকিয়ে বাংলাদেশিরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছবিটির অফিসিয়াল পেজে ‘উইশ আস বাংলাদেশ’ লিখে প্যারিসের পথ ধরেছিলেন সাদ-বাঁধনরা। কানের অফিসিয়াল সিলেকশনে যুক্ত হয়েই দেশকে গর্বে ভরে দিয়েছেন তারা। তবুও তাদের হাতে পুরস্কার দেখার জন্য তাকিয়ে আছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বাঙালিরা।
আইনিউজ/এসডি
- নিউ জার্সির চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রীমঙ্গলের ২ নির্মাতার ৬টি চলচ্চিত্র
- ‘হাওয়া’ দেখতে দর্শকদের ভিড়, খোদ নায়িকা সিঁড়িতে বসে দেখলেন সিনেমা
- লুঙ্গি পরায় দেওয়া হয়নি সিনেপ্লেক্সের টিকেট, সেই বৃদ্ধকে খুঁজছেন নায়ক-নায়িকা
- বিয়ে করেছেন মারজুক রাসেল!
- সেরা পাঁচ হরর মুভি
- শোকের মাসে শ্রীমঙ্গলের স্কুলগুলোতে প্রদর্শিত হলো ‘মুজিব আমার পিতা’
- শাকিবের সঙ্গে বিয়ে-বাচ্চা তাড়াতাড়ি না হলেই ভাল হত: অপু বিশ্বাস
- গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃত্যুতে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর শোক
- নারী বিদ্বেষীদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নতুন যাত্রা শুরু : জয়া আহসান
- ‘ইত্যাদি’ এবার সোনারগাঁয়ে