তনিমা রশীদ
আপডেট: ১২:৫৭, ২৫ নভেম্বর ২০২১
সেরা পাঁচ হরর মুভি
সকলেই মুভি দেখতে পছন্দ করে। সারাদিনের ক্লান্তি দূর করার জন্য সকলেই মুভি বা সিনেমা দেখাকে বেস্ট চয়েস বলে ধরেন। কারণ এতে রয়েছে বিনোদন, কারণ রোমান্স, কমেডি, থ্রিলার এসবকিছু আমাদের বিনোদন দেয়। এই রোমান্স, কমেডি, থ্রিলার এর সাথে ভয়ও একধরনের বিনোদন দেয়। হরর মুভি বা ভূতের সিনেমা এরই বড় উদাহরণ।
বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে মুভি-সিনেমা দেখতে হলে কমেডি ও হরর মুভি কোনো বিকল্প নেই। চলুন দেখে নেওয়া যাক সেরা পাঁচট হরর মুভি। স্পয়লার দেওয়া হবে না, সেরা পাঁচ হরর মুভি তালিকা দেওয়া হবে শুধু। সেরা পাঁচ ভূতের সিনেমার নাম দেখে নিন এক ঝলকে-
পরি: নট আ ফেইরি টেল (১০১৮)
এটি একটি বলিউড সিনেমা। মুভির প্রযোজক আনুষ্কা শর্মা এবং অভিনয়ও তিনি করেছেন৷ এ মুভিতে অভিনয় করেছেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। প্রথমে এই মুভিটিকে লিস্টে রাখার দু’টি কারণ রয়েছে। প্রথম কারণ হলো, এটি সত্যিই একটি দুর্দান্ত হরর মুভি। দ্বিতীয় কারণ হলো এই মুভিটির গল্প আমাদের বাংলাদেশের। সাতক্ষীরার একটি ঘটনা থেকে এই সিনেমা তৈরী। ভাবতেও অবাক লাগে আমাদের দেশের কাহিনী নিয়ে অন্যরা মুভি বানিয়ে জনপ্রিয়তার সাথে সাথে কোটি কোটি টাকা ইনকাম করে নিচ্ছে। আর আমাদের দেশের প্রযোজকরা না-কি কাহিনী খুঁজে পান না।
সেরা পাঁচ হরর মুভি তালিকায় এটি পাঁচ নম্বরে। যাক কাহিনীতে আসি।
কাহিনী সংক্ষেপ:
ছবির শুরুতেই একটা দুর্ঘটনা ঘটে। অর্ণব নামের এক ছেলে তার বাবা মার সাথে কনে দেখতে গিয়েছিলো আসবার পথে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। অর্ণব গাড়ি মা-বাবার সাথে কাথা বলতে বলতে চালাছে। হঠাৎ গাড়ির সাথে একটি মহিলার ধাক্কা লাগে। মহিলাটি সেখানে মারা যায়। পুলিশ কেস হলে পুলিশ অর্ণবকে নিয়ে যায় সেই এলাকায় যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় মহিলাটি ওই এলাকার একটি জঙ্গলে থাকে। এলাকার বাচ্চারা থাকে কুত্তাওয়ালী বুড়ী ডাকে। কারণ সে যেখানে কোনো কুকুর পায় ধরে নিয়ে যায়। এলাকার লোকজন সেই বুড়ী ঘর দেখিয়ে দেয়ে। সেখানে গিয়ে পুলিশ একটি মেয়েকে শিকলে বাঁধা পায়। মেয়েটি ছিলো বুড়ীর মেয়ে নাম রুখসানা। রুখসানাকে তার মায়ের মরদেহর কাছে নিয়ে গেলে। সে কোনো ধরনের দুঃখ প্রকাশ করেনি। শুধু তার হাত দিয়ে মায়ের হাত বুলিয়ে দিলো। অর্ণব রুখসানার কাছে লজ্জিত বোধ করছিলো। তার কারণে রুখসানার মা মারা যায়। রুখশানার মায়ের লাশ দাফনের সকল দায়-দায়িত্ব অর্ণব নেয়।
ওদিকে হসপিটালের মর্গে কর্মকর্তারা মর্গের লাশের শরীরে যা পাচ্ছে খুলে নিচ্ছে। এমনি এক কর্মকর্তা রুখসানার মায়ে মরদেহর কাছে যায় খুঁজতে। সে প্রথমে মরদেহর হাত দেখতে যায়। মরদেহর হাতের কাপড় সরাতে হাতের মধ্যে তৈরি একটি চিহ্ন দেখতে পায়। যা দেখে ঐ কর্মকর্তা ভয় পেয়ে সেখান থেকে চলে যায়। রুখসানার মা’র দাফনের পর। অর্ণব রুখশানাকে তার ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে রুখসানা একা। ক’দিন পর রুখসানাকে ধরতে অনেক লোক আসে। রুখসানা তা আগে থেকে বুঝতে পেরে অর্ণবের বাসায় চলে যায়।
সেখান থেকে খুলতে থাকে মুভির সব রহস্য। বুড়ীর হাতে কিসের চিহ্ন, কে সে রুখসানা, তাকে কে এবং কেনো ধরতে এসেছে, আর কি’বা ঘটেছিলো সাতক্ষীরাতে এমনি রহস্যময় রোমাঞ্চকর এই মুভি।
মুভিটি বাকি মুভিগুলোর মতো অত ভয়াবহ না হলেও। তার রহস্যগুলো ছিলো খুবই রোমাঞ্চকর। এই মুভিটি বলিউডের বাকি হরর মুভি থেকে একদম আলাদা। বলিউডের হরর মুভি বলতেই যে ধারনা মনে আসে ‘পরী’ সেই ধারণাকে ভেঙে দিয়ে চেয়ে।
ড্যাব-৪: কার্স অফ দ্য জিন (২০১৩)
ড্যাব মুভিটি আমার সবচেয়ে পছন্দের একটি হরর মুভি। এর সব-কটি সিরিজই খুবই ভয়াবহ। এটি আমার পছন্দের একটি হওয়ার কারণ হলো ড্যাব হরর সিরিজে ৪র্থ নম্বর মুভি কার্স অফ দ্য জিন ধারণ করা হয়েছে Found footage স্টাইলে৷ অর্থাৎ আপনার দেখে মনে হবে এটি কোনো মুভি নয়, বরং বাস্তবে ঘটে যাওয়া কোনো কাহিনী। তবে মুভির নির্মাতাদের দাবী অনুযায়ী এ মুভিটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে। এই মুভিটি এমনিভাবে তৈরী করেছেন নির্মারা যে প্রথম দেখাতে আপনিও ভাববেন এটি মুভি নয় খুঁজে পাওয়া কোনো ভিডিও।
সেরা পাঁচ হরর মুভি তালিকায় এটি চতুর্থ নাম্বারে রয়েছে।
কাহিনী সংক্ষেপ:
ইব্রু নামের একজন লেডি সাইক্রিয়াটিস্ট। সে জ্বিনের উপর রিসার্চ করছিলো। রিসার্চে জন্য ইব্রু তান্ত্রিক ডক্টর ফারুক ওজার কাছে যায়। ওজাকে নিয়ে রিসার্চে উদ্দেশ্যে নিজ গ্রামে তার ছোটবেলার বান্ধবী কুবরার কাছে যান। ইব্রুর কুবরার কাছে যাওয়ার উদ্দেশ্য হলো, বলা হয় কুবরার উপর এক অশুভ জ্বিন ভর করেছে। তাই কুবরার সাহায্যের জন্য ইব্রু সেখানে যায়। কিন্তু সে কল্পনাও করতে পারেনি যে সেখানে তার জন্য কত বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।
রিসার্চের তথ্য গুলো ইব্রু ক্যামেরায় ধারণ করেন। আর ধারণকৃত ফুটেজটা ছবিতে দেখানো হয়ছে বলে মনে হয়। ছবি দেখলে মনে হবে ছবি নয় বরং আসল ফুটেজ দেখছি।
দ্যা অরফানেজ (২০০৭)
এই ছবিটি পরিচালক জে.এ.বায়োনা এর প্রথম ছবি। এ ছবির প্রযোজক হলেন বায়োনা বন্ধু গুইলারমো দেল তরো। যেমনি ভয়াবহ তেমনি অসম্ভব সুন্দর এই মুভি। চারপাশের পরিবেশকে ব্যবহার করে সুণিপুণভাবে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে যে প্রতিটি শব্দে শব্দে আপনি চমকে উঠবেন।
সেরা পাঁচ হরর মুভি তালিকায় তৃতীয় নম্বরে তাই রাখা হয়েছে দ্যা অরফানেজ মুভিটি।
কাহিনী সংক্ষেপ:
নাম থেকেই বুঝা যাচ্ছে ছবিটি একটা অনাথাশ্রম নিয়ে তৈরি। সমুদ্র তীরের ধারে একটি বিশাল পরিত্যক্ত অনাথাশ্রম। শৈশবে সেখানে বেড়ে ওঠা লরার। এই গল্পটি লরা ও তার স্বামী কার্লোস এবং তাদের দত্তক নেয়া সাত বছরের ছেলে সিমোনকে নিয়ে। লরা এই এতিমখানা কিনে নেয় সংস্কার করার জন্য। সে অনাথাশ্রমকে বিকলাঙ্গ শিশুদের জন্য খুলতে চায়।
সবকিছু ঠিকঠাক পরিকল্পনা মতে চলছে। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় তখন থেকে যখন শিশু সিমোনের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে অদৃশ্য এক শিশুর সাথে। যাকে সিমোন থমাস নামে চিনে। একদিন বাড়ি থেকে হারিয়ে যায় সিমোন।
কোথায় গেলো সিমোন, কিভাবে গেলো, কে সে থমাস, কী রহস্য লুকিয়ে আছে এই অনাথাশ্রমে পুরো মুভি জুড়ে এরকম আরো নানান প্রশ্ন জাগবে আপনার মনে। এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজবার জন্য আপনি মুভির একটিও দৃশ্য মিস করতে চাইবেন না। মুভিটি যেমন রহস্যময়, তেমনি ভয়াল। আর এই রহস্যময় গল্পের মধ্যে লুকিয়ে আছে একটি হৃদয়বিদারক আরো একটি গল্প। ক্রিটিকাল ও কমার্শিয়াল দু’ধরণেরই সাফল্য পেয়েছে এই মুভি। এর রিমেক তৈরী হচ্ছে হলিউডে। আশা করা যায় রিমেক টাও এর মতো রহস্য রোমাঞ্চকর ও ভয়াল হবে।
দ্য এক্সরসিজম অফ এমিলি রোজ (২০০৫)
এই মুভিটি সত্য ঘটনার উপর তৈরী করা হয়েছে। অ্যানেলিস মিশেল নামক এক তরুণীর উপর এ মুভি নির্মিত হয়েছে। মুভিতে এমিলি রোজ নাম ব্যাবহার করা হয়। ২০০৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মুভিটি রিলিজ হয়। স্কট ডেরিকসন ছিলেন মুভিটির পরিচালক। মুভিটির IMDb স্কোর হলো ৬.৭ স্টার। এই মুভিটি ১৪৫.২ মিলিয়ন USD ইনকাম করে।
বুকে হরর ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া এই সিনেমাটি সেরা পাঁচ হরর মুভি তালিকায় রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে।
কাহিনী সংক্ষেপ
মুভির শুরুতেই পুলিশ একটি বাড়িতে যায় সেখান থেকে এক ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করে। তার নাম হচ্ছে ফাদার মরি। তিনি এমিলি রোজ (আসল নাম-অ্যানেলিস মিশেল) এর উপর এক্সরসিজম করছিলেন। তার মতে এমিলির শরীরে ছয়টি শয়তানি আত্মা ভর করেছে। যার কারণে তিনি ৬২ বার এক্সরসিজম করেন। এক্সরসিজম সফল না হওয়ায় রোজ এর মৃত্যু হয়। কিন্তু এই কারণে ফাদার মরিকে গ্রেফতার করা হয়নি। তাকে গ্রেফতার করা হয় এক্সরসিজম করার কারণে। ডাক্তারের মতে এমিলির এপিলেপ্টিক সাইকোসিস এর রোগী। যার কারণে সে অস্বাভাবিক আচরণ করে। ঠিকমতো ও সঠিক ঔষধ না খাওয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়। যার কারণে ফাদার মরিকে জেলে নেওয়া হয়। ফাদার মরি এর কেস নেন এরিন নামক এক উকিল। তিনি ফাদার মরির সাথে দেখা করতে জেলে যান। সেখানে ফাদার মরি এরিনকে বলেন তিনি এমিলি রোজ এর সত্য ঘটনা পুরো দুনিয়াকে বলতে চান। যার জন্য এরিনকে যেকোনো ভাবেই এই কেস জিতে হবে।
- আরও পড়ুন- সিনেমার মিষ্টি মেয়ে কবরী
কী ছিলো এমিলি রোজ এর সত্য ঘটনা, কেনো এক্সরসিজম সফল হয়নি, কী হয়েছিল সেদিন, এরিন কেস জিততে পারবে কি না এমনি রহস্যময় এই মুভি।
দ্য এক্সরসিস্ট (১৯৭৩)
দ্য এক্সরসিস্ট মুভিটি গণ্য করা হয় সর্বকালের সেরা হরর মুভি হিসাবে। ১৯৭৩ সালে পরিচালক উইলিয়াম ফ্রেডকিন এই মুভিটি তৈরী করেন। সেই সময় সিনেমা হলে মুভিটি দেখানোর সময় হলের সামনে অ্যাম্বুলেন্স রাখা হতো। কারণ মুভিটির ভয়াবহ দৃশ্য সহ্য না করতে পেরে অনেকেই অজ্ঞান হয়ে পড়তেন।
মারাত্মক ভয়ের এ সিনেমাটি সেরা পাঁচ হরর মুভি তালিকায় সবার উপরে, যতোই ভূতের সিনেমার তালিকা করা হোক না কেন, দ্য এক্সরসিস্টের নাম থাকবেই।
কাহিনী সংক্ষেপ
ওয়াশিংটনের এক অভিজাত এলাকা জর্জটাউন, সেখানে বাস করতেন ক্রিস ম্যাকনেইল নামক এক অভিনেত্রী ও তার ১২ বছর বয়সী মেয়ে রেগান। স্বামীর সাথে বিচ্ছদে হয়ে ক্রিস ও তার মেয়ে একা একটি বাড়িতে থাকে। একদিন ঘর গুছাতে গিয়ে ক্রিস একটি ওইজা বোর্ড খুঁজে পান। রেগানকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে, সে বলে ওইজা বোর্ড দিয়ে সে এক অদৃশ্য বন্ধুর সাথে গল্প করে।
ক্রিস একে ছেলেমানুষী ভেবে উড়িয়ে দেয়। পরে রেগানের অস্বাভাবিক আচরণ দেখে সে বুঝতে পারে একটি অশুভ অশরীরী আত্মা তার উপর ভর করেছে। তখন সে সাহায্যের জন্য দুজন প্রাদীর কাছে যায়। ওই দুই প্রাদী রেগানকে অশুভ আত্মা হাত থেকে বাঁচাতে পারেন কি না, এই নিয়ে এই মুভি।
মুভিটির ভীতিকর কিছু দৃশ্য দেখে যে কেউর গা ভয়ে শিউরে উঠবে। মুভিটি সর্বশ্রেষ্ঠ হরর মুভির মর্যাদা পেয়েছে।
মুভিগুলো দেখতে থাকুন ও ভয় পেতে থাকুন। বিনোদনের যে কোনও খবরের জন্য আইনিউজের বিনোদন ক্যাটাগরিতে ভিজিট করুন। এছাড়াও সারা বিশ্বের যে কোনও খবরের আপডেট সবার আগে পেতে থাকুন আইনিউজ Eye News -এর সাথেই।
আইনিউজ/টিআর/এসডি
- নিউ জার্সির চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রীমঙ্গলের ২ নির্মাতার ৬টি চলচ্চিত্র
- ‘হাওয়া’ দেখতে দর্শকদের ভিড়, খোদ নায়িকা সিঁড়িতে বসে দেখলেন সিনেমা
- লুঙ্গি পরায় দেওয়া হয়নি সিনেপ্লেক্সের টিকেট, সেই বৃদ্ধকে খুঁজছেন নায়ক-নায়িকা
- বিয়ে করেছেন মারজুক রাসেল!
- সেরা পাঁচ হরর মুভি
- শোকের মাসে শ্রীমঙ্গলের স্কুলগুলোতে প্রদর্শিত হলো ‘মুজিব আমার পিতা’
- শাকিবের সঙ্গে বিয়ে-বাচ্চা তাড়াতাড়ি না হলেই ভাল হত: অপু বিশ্বাস
- গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃত্যুতে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর শোক
- নারী বিদ্বেষীদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নতুন যাত্রা শুরু : জয়া আহসান
- ‘ইত্যাদি’ এবার সোনারগাঁয়ে