ফিচার ডেস্ক
অভিশপ্ত এই গাড়ির সব মালিক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন
জাদুঘরে থাকা অভিশপ্ত গাড়িটি
অভিশপ্ত বাড়ি কিংবা স্থানের কথা অনেকে শুনলেও গাড়ির কথা শুনেছেন কি? অভিশপ্ত এই গাড়ির প্রায় সব মালিকই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে।
গাড়িটির এক ভয়ঙ্কর ইতিহাস আছে। এমনকি গাড়িটিকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জন্য দায়ী বলে বিশ্বাস করেন অনেকেই। তেমনই একটি অভিশপ্ত গাড়ি নিয়ে আজকের লেখা।
২০ শতকের শুরুর দিকে গ্রাফ অ্যান্ড স্টিফ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিশ্বের বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল অটোমোবাইল তৈরি করে। এই প্রতিষ্ঠানটি ২০০১ সাল পর্যন্ত সক্রিয় ছিল। তারা বাস, ট্রাক ও প্রাইভেট কার তৈরি করত। তবে এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত বিখ্যাত হয় ২০ শতকের শুরুতে তৈরি কয়েকটি প্রাইভেটকারের জন্য।
এই নির্মাণ প্রতিষ্ঠানটি অস্ট্রিয়ার যুবরাজ আর্চ ডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দ এর জন্য একটি গাড়ি তৈরি করেছিল। এই গাড়িটি গ্রাফ অ্যান্ড স্টিফ লাক্সারি লিমোজিন নামে পরিচিত। ডাবল ফেটন এই গাড়িটির ইঞ্জিন নাম্বার ছিল ২৮৭। এই গাড়ি ব্যবহারের প্রথম দিনেই যুবরাজ আর্চ ডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দ এবং তার স্ত্রী সোফি আততায়ীর গুলিতে নিহত হন।
এরপর অস্ট্রিয়া ১৯১৪ সালের ২৮ জুলাই সার্বিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। সূচনা হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের। অভিশপ্ত এই গাড়িটি যতবারই হাত বদল হয়েছে এর মালিক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে নিহত কিংবা আহত হয়েছেন। পরবর্তী ১২ বছরে ডাবল ফেটন গাড়িটি ১৫ জন ভিন্ন ভিন্ন মালিকের কাছে হাত বদল হয়েছে। যার মধ্যে দুর্ঘটনায় শিকার হয়ে ১৩ জনের মৃত্যু ঘটেছিল।
গাড়িটি ১৯১৫ সালে ফাইভ-বি সেনাদলের ক্যাপ্টেন কিনেছিলেন। মাত্র নয় দিন ব্যবহার করার পর দুর্ঘটনার শিকার হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এরপর গাড়িটি প্রায় তিন বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। ১৯১৮ সালে যুগোস্লাভিয়ার গভর্নর অস্ট্রিয়া সফর করেন। ফেরার সময় তিনি এটি ক্রয় করেন। তিনি এই গাড়িতে চারটি পৃথক দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলেন। তিনি এরপর গাড়িটি বিক্রি করলেও দুর্ঘটনায় আঘাতজনিত কারণে পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করেন।
এরই মধ্যে অভিশপ্ত হিসেবে এই গাড়িটির কুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তারপরও যুগোস্লাভিয়ার গভর্নরের একজন চিকিৎসক বন্ধু এটি কেনার সাহস দেখিয়েছিলেন। তিনি কিছুদিনের মধ্যেই এই গাড়িতে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা যান। গন্তব্যে যাওয়ার পথে একটি খালের মধ্যে উল্টে পড়েছিলেন তিনি। চিকিৎসকের মৃত্যুর পর আরো কয়েকবার হাত বদল হয় গাড়িটি এবং প্রতিবারই মালিকের মৃত্যু হয়েছে।
অনেকের বিশ্বাস ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনাও হয়েছিল অভিশপ্ত এই গাড়ির কারণে। চিকিৎসকের মৃত্যুর পর একজন মোটর মেকানিক গাড়িটি নতুন করে তুলেছিলেন। তিনি একজন ধনী কৃষকের নিকট গাড়িটি বিক্রি করেন। এই গাড়িটি নিয়ে নতুন মালিক যেদিন সারায়েভো শহরে প্রবেশ করেছিলেন কাকতালীয়ভাবে সে দিনই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছিল।
যাই হোক শেষ মালিকের মৃত্যুর পর অস্ট্রিয়া কর্তৃপক্ষ এটি কিনে রাখে। এবার জাদুঘরে রাখা হয়। তবে জাদুঘরও স্থায়ী হয়নি অভিশপ্ত গাড়িটি নিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৪৫ সালের জুলাই মাসে বোমার বিস্ফোরণে জাদুঘরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ