তানভীর রাসিব হাশেমী
আপডেট: ১৩:৪৭, ২৪ জুলাই ২০২০
যান্ত্রিকতার ভিড়ে হারিয়ে গেছে ‘লেইস ফিতা লেইস’
ছবি- সংগৃহীত
লেইস ফিতা লেইস, চুরি ফিতা, রঙিন সুতা রঙিন করিবে মন! লেইস ফিতা লেইস - সংগীত গুরু জেমসের সেই গানের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে। ‘নিঃশব্দে, কোলাহলে ঈমান আলী হেকে বেড়ায় লেইস ফিতা লেইস! পথে পথে সে বেচে বেড়ায় বাক্স বন্দী কিছু স্বপ্নসুখ! সেই ঈমান আলীকে নিয়ে আমাদের লেইস ফিতা লেইস’- এই কথাগুলো এই গানটির মিউজিক ভিডিওর শুরুতেই লেখা, ৯০-এর দশকে এত চমৎকার ভিডিও বানানো হয়েছিল ভাবতেই অবাক লাগে!
৯০-এর দশকের সেই লেইস ফিতাওয়ালাদের এখন আর আগের মতো দেখা মেলে না। শহরের যান্ত্রিকতার ভিড়ে হারিয়ে গেছে বাক্সবন্দি ব্যবসায়ী লেইস ফিতাওয়ালারা। তবে মফস্বল বা গ্রামের পথেও তাদের পদচারণা কদাচিৎ ঘটে। আধুনিক সভ্যতা কেড়ে নিয়েছে সেই লেইস ফিতাওয়ালাদের বিচরণ। তাই সচরাচর আর চোখে পড়ে না কাগজের কার্টনের ওপর সাদা বা লাল কাপড় পেঁচিয়ে পুঁটলি কাঁধে ঝুলিয়ে আরেক হাতে কাচের ঢাকনাওয়ালা বাক্স বহনকারী লেইস ফিতাওয়ালাদের।
সে সময় দুপুরের পর যখন অন্দরমহলের নারীরা মধ্যাহ্নভোজ সেরে উঠানের আড্ডার জন্য প্রস্তুত, তখন রাস্তা দিয়ে হেঁকে যেতেন লেইস ফিতাওয়ালারা। তাদের সে ডাক শুনে খুকুমণিরা বায়না ধরত ফিতা-চুড়ি বা নেইলপলিশের। নারী বরাবরই প্রসাধনপ্রিয়, খুকুমণির আবদারে খুকুমণির মায়েরও দেখতে ইচ্ছা করত, কী আছে ফেরিওয়ালার বাক্সে! এটা থেকে ওটা পরখ করে নারীরা কিনে নিতেন স্নো, ক্রিম বা কদুর তেল। খুকুমণির কাঁধঝোলানো চুলে বেঁধে দেয়া হতো লাল টুকটুকে ফিতা।
এখন বাক্সবন্দি ব্যবসার চেয়ে অনেকে দোকান খুলে কিংবা অন্য ব্যবসার দিকে ঝুঁকে গেছেন অনেকটা। ফেরি করে লাভবান হওয়া যায় না বলে ব্যবসায়ীরা এ ব্যবসা থেকে আগ্রহ হারাচ্ছেন। তাই তাদের আর দেখা মেলে না। খুকুমণিরাও আজকাল আর লাল ফিতার বায়না ধরে না।
যশোরের সারদা এলাকায় লেইস ফিতাওয়ালা জমসেদ জানান, এখন আর আগের মতো গ্রামে কেউ চুড়ি-ফিতা কেনে না। মার্কেটে সবরকম প্রসাধন সামগ্রী আর সাজসজ্জার জিনিস পাওয়া যায়। এখন সবাই মার্কেটে যান। তারপরও জমসেদের কণ্ঠে শোনা যায় ‘লেইস ফিতা, এই লেইস ফিতা’ ডাক।
ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করে রাজধানীর মগবাজার এলাকার ফাতেমাতুজ্জোহরা বলেন, ছোটবেলায় লেইস ফিতাওয়ালার কাছ থেকে জিনিস কিনতাম। এখন আর তাদের দেখা যায় না। সবাই একসঙ্গে এটা সেটা দেখে অনেক মজা করে চুড়ি-ফিতা, নেইলপলিশ কিনতাম। আগের দিনগুলো সত্যি অনেক মজার ছিল।
রাজধানীর সেনানিবাস এলাকার বাসিন্দা সাদিকা আক্তার বলেন, ছোটবেলায় বিকেলে যখন ঘুমিয়ে পড়তাম ফেরিওয়ালার ‘লেইস ফিতা লেইস’ ডাক শুনে উঠে যেতাম। সঙ্গে সঙ্গেই মা'র কাছে বায়না ধরতাম লাল ফিতা কিনে দেয়ার জন্য। সেই লাল ফিতা মাথায় বেণি করে পেঁচিয়ে চারদিকে ঘুরে বেরাতাম। সেই দিনগুলো সত্যি অসাধারণ ছিল।
আইনিউজ/এইচ
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ