ফিচার ডেস্ক
দুই যুগ পেরিয়েও জনপ্রিয়তা কমেনি মীনার
‘আমি বাবা মায়ের শত আদরের মেয়ে, আমি বড় হই সকলের ভালোবাসা নিয়ে, আমার দুচোখে অনেক স্বপ্ন থাকে, আমি পড়ালেখা শিখতে চাই।’
এই কথাগুলোর সঙ্গে পরিচয় নেই নব্বই দশকের এমন ছেলেমেয়ে পাওয়া কষ্ট না প্রায় অসম্ভবই বটে। ছোট্ট মীনার সমাজ-সংস্কার ও জ্ঞানের আলোয় মানুষকে সচেতন করে তুলছে। সঙ্গে তার ছোট ভাই রাজু আর টিয়া পাখি মিঠু।
আজ মীনা দিবস। মীনার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনা করে ১৯৯৮ সালে সার্কের পক্ষ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বরকে ঘোষণা করা হয় মীনা দিবস। সেসময় থেকে প্রতি বছর ২৪ সেপ্টেম্বর দিনটি পালিত হয়ে আসছে মীনা দিবস হিসেবে।
কার্টুনের মূল চরিত্র মীনা আট বছর বয়সের কন্যাশিশু। সে তার পরিবারের সঙ্গে একটি ছোট গ্রামে বাস করে। এ চরিত্রের মাধ্যমে শিশুদের অধিকার, শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিনোদন এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে বেড়ে ওঠার চিত্র ফুটে ওঠে।
মীনা কার্টুনে একটি পরিবারের কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে মীনা সময়মতো স্কুলে যায়, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করে এবং পরিবারের বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করে। মিনা চরিত্রটি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল তথা দক্ষিণ এশিয়ার মেয়ে শিশুদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি বালিকা চরিত্র।
১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের পর্দায় তার প্রথম আবির্ভাব। মীনা বিরাজমান শিক্ষা-সংস্কৃতির বৈষম্যকে তুলে ধরে ছেলেশিশু-মেয়েশিশুর সামগ্রিক অধিকার বিষয়ে সমতাভিত্তিক সংস্কৃতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের অভিযান করেছে।
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা ১৯৯০-২০০০ দশককে মেয়েশিশু দশক হিসেবে ঘোষণা করে। এর মূলে ছিল ২০০০ সালের মধ্যে 'সবার জন্য শিক্ষার' অনুপ্রেরণা। উদ্দেশ্য শিক্ষা এবং অধিকার সচেতনতায় পিছিয়ে থাকা নারী ও মেয়েশিশুদের শিক্ষা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা। নো চাইল্ড লেফট বিহাইন্ড- এই ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার প্রচেষ্টা।
মীনার সঙ্গে তৈরি করা হয় রাজু, মিঠু, মীনার মা-বাবাসহ আরও একঝাঁক চরিত্র। 'দীর্ঘদিনের পথচলায় মীনার সঙ্গে সমাজের সম্পর্ক দৃঢ় এবং ঘনিষ্ঠ হয়েছে তার ইতিবাচক চলন-বলন এবং আদর্শগত চারিত্রিক গুণাবলির কারণে। ছেলেমেয়ের মধ্যে বৈষম্যের বিষয়টি সমাজের মানসপটে গেঁথে থাকা একটা পুরোনো রীতি। মীনা বিরাজমান অসংগতি দূরীকরণে কার্যকর ভূমিকা দেখিয়েছে।
বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, নেপালি ও উর্দু- এই পাঁচ ভাষায় শুরু হয় মীনার সমন্বিত কার্যক্রম। এগুলোই আবার অনূদিত হয় দক্ষিণ এশিয়ার ১৭টি ভাষায়। প্রথম পর্বটি ডাব করা হয় ৩০টি ভাষায়। প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্পের চিত্রকল্প দানা বাঁধে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তানের শিশুদের কথা মাথায় রেখে। এ পর্যন্ত মীনার ৩৭টি পর্ব প্রচারিত হয়েছে।
ইউনিসেফের মতে, বাংলাদেশের ৯৭ ভাগ শহুরে শিশু-কিশোর মীনার কার্যপ্রণালি উপভোগ করে আর গ্রামে ৮১ শতাংশ শিশু-কিশোর মীনার সঙ্গে পরিচিত। এছাড়া বয়স্কদের সঙ্গেও মীনা বেশ পরিচিত।
নব্বই দশক থেকে এখনো পর্যন্ত মীনার কদর কমেনি। বরং বেড়েই চলেছে। বিশ্বব্যাপী চলতি মহামারিতেও মীনার কাজ থেমে ছিল না। জীবাণু ধ্বংস করতে এবং সুস্থ থাকতে সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়ার কথা বলেছে বারবার। সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ড, সচেতনতা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাল্যবিবাহ রোধ সবেতেই মীনার সজাগ দৃষ্টি। মীনা হয়ে উঠেছে সবার ঘরের মেয়ে। মীনা সাধারণত নারী শিক্ষার প্রতি বেশি জোর দয়েছে। এই প্রজন্মের কাছেও মীনা কার্টুন শিক্ষার পাশাপাশি বিনোদনের অন্যতম এক ক্ষেত্র।
আইনিউজ/এসডিপি
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ