ফিচার ডেস্ক
হাত নেই, তবুও দমে নেই প্রিন্স গোগোই
প্রিন্স গোগোই
মানুষ কঠোর পরিশ্রম, অধ্যাবসায় আর মনোবল দিয়েই পৃথিবী জয় করেছে। এর অনেক প্রমাণ রয়েছে আমাদের সমাজে। এমনকি জন্মগতভাবে কিংবা দুর্ঘটনাজনিতভাবে অনেকেই শরীরের একটি অঙ্গ হারিয়ে জয় করেছেন পৃথিবী।
স্বাভাবিক মানুষের চেয়েও তারা ভালোভাবে জীবনযাপন করেন। এমন অনেকের কথাই তো জেনেছেন। আজ এমন একজন অদম্য মনোবলের মানুষের কথা জানাবো যিনি মনের জোড়েই নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে বিশ্ব জয় করেছেন। নাম তার প্রিন্স গোগোই।
আসামের ছোট শহর সোনারির বাসিন্দা তিনি। জন্ম থেকেই বিকলাঙ্গ সে, তার দুই হাত নেই। তারপরও দমে যাননি। জীবনের এই সীমাবদ্ধতা নিয়ে দুঃখ পেলেও তিনি কখনোই নিজেকে কোণঠাসা করে রাখেন নি। বরং এই মহামারি চলাকালীনও তিনি হাসপাতালে কাজ করে তার পরিবারের ভরণপোষণ জুগিয়েছেন। তিনি এখন গুয়াহাটিতে থাকেন এবং এখানকারই একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করেন। নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে প্রিন্স তার নিজের পা কে কাজে লাগিয়েছেন।
হাসপাতালে ফোন তোলা থেকে শুরু করে রোগীদের নাম লেখা, সব কিছুই নিজের পায়ের সাহায্যে করেন এই নারী। প্রিন্সের এই উদ্যোগ দেখে সকলেই তার প্রশংসা করে। চাকরি করা ছাড়াও প্রিন্স গান ও পেইন্টিং করেন। সময় পেলেই পছন্দের কাজ দুটিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন প্রিন্স। তিনি তার পা দিয়ে তুলির টানে ছবি আঁকেন। কয়েকদিন আগে তিনি গণেশের একটি মূর্তিও তৈরি করেন। এই প্রতিমাটি বিক্রি হয় ৩০ হাজার টাকায়।
প্রিন্সর একটি স্বপ্ন রয়েছে, বিভিন্ন প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য একটি আর্ট স্কুল খোলার। এই পেইন্টিংগুলো বিক্রি করে তিনি যে পরিমাণ অর্থ আয় করবেন তা তাদের জন্য বিনিয়োগ করবেন। তিনি মনে করেন যে এই বিদ্যালয়ের বাচ্চাদের শিল্পের দক্ষতা শিখতে হবে। তারা যেন নিজেদের কখনো অক্ষম বলে মনে না করে।
এমনকি প্রিন্সের পরিবারেও তাদের মেয়ের এমন প্রতিবন্ধকতা নিয়ে কোনো দুঃখ নেই। বরং তারা তার জন্য গর্ব করেন। এই মেয়েটিই নিজের পরিবারের সমস্ত দায় দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে। দুই হাত না থাকায় সরকারি স্কুলে ভর্তি হতে পারেন নি। এছাড়াও একজন শিক্ষক তার মাকে ডেকে বলেছিলেন,আপনার সন্তান মানসিক রোগী, তাই তাকে এই স্কুল ভর্তি করা যাবে না।
এরপর এক প্রতিবেশী প্রিন্সকে একটি প্রাইভেট স্কুলে ভর্তি করান। স্কুলের নাম 'সোনারী জাতীয় বিদ্যালয়।' সেই স্কুল থেকে তিনি এসএস সি পাস করেন। এরপর সেখানকার কলেজ থেকেই আর্টস স্ট্রিমে পড়াশোনা শেষ করেন।
শারীরিক সক্ষমতা নেই, তবুও তার রয়েছে জীবনকে উপভোগ করার উৎসাহ। এটি দেখে বেশ কয়েকটি সংস্থা তাকে সাধুবাদ জানিয়েছে। প্রিন্স অনেক প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য অনুপ্রেরণা। তাকে দেখে সমাজের অন্যান্য প্রতিবন্ধীরা নতুন কিছু শিখতে পারে। দুই হাত না থাকা সত্ত্বেও তার এই প্রতিভার জন্য সে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
আইনিউজ/এসডিপি
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ