হেলাল আহমেদ
আপডেট: ১১:১৬, ২৪ নভেম্বর ২০২০
নেক্রোফিলিয়া: যে ব্যাধি মানুষকে মৃতদেহের সাথে যৌনাচারে লিপ্ত করে
‘প্রত্যাখ্যান করবে না`- এমন যৌন সঙ্গী পছন্দ নেক্রোফাইলদের
কিছুদিন আগে বাংলাদেশের রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের এক ডোমের সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মুন্না নামের ওই আটক কিশোরকে একটি বিকৃত অপরাধের কারণে আটক করা হয়। সে মর্গে আসা মেয়েদের মৃত লাশের সাথে যৌঞ্চারে লিপ্ত হতো।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লাশ ধর্ষণের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে মুন্না। ঘটনায় আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে মুন্নাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
‘নেক্রোফিলিয়া’
সাধারণত মৃতদেহের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হওয়ার বিকৃত আবেগের মানসিক ব্যাধিকে নেক্রোফিলিয়া বলা হয়। এই রোগে আক্রান্তরা মৃতদেহের সাথে বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হন। গবেষণায় জানা গেছে এই রোগে আক্রান্তরা সাধারণত যে দেহের সাথে যৌন সম্পর্কে গেলে কোনো বাঁধা আসে না এমন দেহ পছন্দ করে। যার কারণে এরা যৌনচারে লিপ্ত হওয়ার জন্য মৃতদেহকে বেছে নেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে ১৯৮৯ সালে ১২২ জন নেক্রোফইল ব্যক্তির তথ্য পর্যালোচনা করে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ঐ গবেষণায় বলা হয়, 'বাধা দেবে না বা প্রত্যাখ্যান করবে না', মূলত এমন যৌন সঙ্গী পাওয়ার বাসনা থেকে মরদেহের সাথে যৌন সংসর্গ করে থাকে নেক্রোফাইলরা।
অনেক সময় তারা এমন পেশা নির্ধারণ করে, যেখানে মরদেহের আশেপাশে থাকার সুযোগ থাকে তাদের।
তবে গবেষণার জরিপে পর্যালোচনা করা ১২২ জনের কয়েকজন মরদেহের আশেপাশে থাকার সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও হত্যা করার পর মৃতদেহের সাথ যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন বলে উঠে আসে প্রতিবেদনে।
অতীত ইতিহাসেও রয়েছে এই বিকৃত ঘটনার বিবরণ
মৃতদেহের প্রতি যৌন আকর্ষণ। অসুস্থ সেই আকাঙ্খা থেকে বাস্তবে শবের সঙ্গে সহবাস। ইতিহাসের পাতাতেও সেই বিকৃতির উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যায়। গ্রিসের অত্যাচারী রাজা পেরিঅ্যান্ডারের শব-কামের কথা উঠে এসেছে ইতিহাসের জনক হেরোডোটাসের লেখায়।
মিশরের মমির সঙ্গেও জুড়ে আছে শবকামের কাহিনী। নেক্রোফিলিয়ার ভয়েই মমি তৈরির আগে সুন্দরী মহিলাদের দেহ মৃত্যুর পর দিন চারেক ফেলে রাখা হত। দেহে খানিকটা পচন ধরলে তবেই তা মমি প্রস্তুতকারকদের হাতে তুলে দেওয়া হত।
'বাধা দেবে না বা প্রত্যাখ্যান করবে না', মূলত এমন যৌন সঙ্গী পাওয়ার বাসনা থেকে মরদেহের সাথে যৌন সংসর্গ করে থাকে নেক্রোফাইলরা।
আরেকটি বিকৃত মানসিক রোগ পেডোফিলিয়া
পেডোফিলিয়া আক্রান্তরা অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুদের সাথে যৌন সম্পর্ক তৈরি করতে পছন্দ করে। শিশুদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা বা যৌন হয়রানি, নির্যাতন করার যৌন বিকৃতিকে 'পেডোফিলিয়া' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই ব্যাধিতে আক্রান্তদের চিহ্নিত করা হয় পেডোফাইল হিসেবে।
শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষণ তৈরি হওয়ার ফলে শিশুদের যৌন নির্যাতন করার সমস্যা এবং এরকম ঘটনার হার বৃদ্ধি পাওয়া বিশ্বের অধিকাংশ দেশের জন্যই এখন চিন্তার বিষয়। বিশেষ করে অনলাইনে শিশুদের সাথে যৌন হয়রানিমূলক আচরণের হার সম্প্রতি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
যুক্তরাজ্যের পত্রিকা 'দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট' এ বছরের মার্চ মাসে একটি খবর প্রকাশ করে, যেখানে শিশুদের যৌন হয়রানি ও নির্যাতন থেকে সুরক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে তৈরি সংস্থা 'দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনকোওয়ারি ইনটু চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ'এর প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয় যে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের পুলিশ প্রতি মাসে গড়ে '৪০০ থেকে ৪৫০ জন' অভিযুক্তকে 'অনলাইনে শিশুদের সাথে যৌন নির্যাতনমূলক আচরণ করায়' গ্রেফতার করে।
বাংলাদেশে গত মাসে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তিনজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল 'শিশু পর্নোগ্রাফি তৈরি করে ছড়িয়ে' দেয়ার।
আইনিউজ/এইচএ
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ