শ্যামলাল গোঁসাই
আপডেট: ১৯:৪৩, ৬ ডিসেম্বর ২০২০
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী: বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ একটি নাম
প্রতিকৃতি: আইনিউজ
গণতন্ত্রের মানসপুত্র, উপমহাদেশের বরেণ্য রাজনৈতিক নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৬৩ সালের এই দিনে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের একটি হোটেল কক্ষে মারা যান তিনি।
১৮৯২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের সম্ভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম। তিনি ছিলেন বিচারপতি স্যার জাহিদ সোহরাওয়ার্দীর কনিষ্ঠ সন্তান।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর জন্ম ভারতের পশ্চিমবঙ্গে, কিন্তু বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসে তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রচনা করেছিলেন আওয়ামী লীগ নামে একটি দল গঠন করে।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ৮ই সেপ্টেম্বর ১৮৯২ সালে জন্মগ্রহণ করেন পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলায়। তাঁর পিতা স্যার জাহিদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক।
অনেকটা পারিবারিক ঐতিহ্য মেনেই তিনি আইন পড়তে যান ইংল্যাণ্ডে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনশাস্ত্রে ডিগ্রি লাভ করেন এবং আইনজীবী হিসাবে কিছুদিন কাজও করেন ব্রিটেনে।
হোসেন সোহরাওয়ার্দী ১৯২০ সালে ভারতে ফিরে আসেন এবং পরের বছর বাংলা প্রাদেশিক সভায় সদস্য নির্বাচিত হন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে গঠিত হয় অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুসলিম লীগ মন্ত্রিসভা। সোহরাওয়ার্দী অবিভক্ত বাংলার ক্ষমতায় থাকাকালেই ১৯৪৬ সালে ঘটে কলকাতার ভয়াবহ দাঙ্গা। লর্ড মাউন্টব্যাটেন ভাইসরয় হিসাবে ভারতে এসে উপমহাদেশ ভাগ করার পরিকল্পনা পেশ করেন।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী দেখা করলেন শরৎচন্দ্র বসুর (কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য, পেশায় ব্যারিস্টার) সঙ্গে। দুজনেই অবিভক্ত বাংলার ব্যাপারে একমত হলেন। কিন্তু বাদ সাধলেন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী এবং কংগ্রেসের অন্য সদস্যরা। ভারত ভাগ হলো, ভাষার ভিত্তিতে নয়, ধর্মের ভিত্তিতে।
কলকাতা শহরে ১৯৪৬ এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলে ৫ দিন ধরে। মারা যায় অন্তত ২০০০ মানুষ, আহতের সংখ্যা ছিল চার হাজারের বেশি।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর কলকাতায় থেকে গেলেন। খাজা নাজিমউদ্দীন তখন এখানকার (পূর্ব পাকিস্তানের) প্রধানমন্ত্রী। তিনি চাননি যে সোহরাওয়ার্দী সাহেব এখানে আসুন। তারপর ১৯৪৮ সালে তিনি আসলেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে স্টিমার থেকে তাকে নামতে দেওয়া হয়নি। বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রয়োগ করে, সেখান থেকে ফিরতি স্টিমারে তাকে কলকাতা ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিগ লীগ গঠিত হল ১৯৪৯ সালে, যা ১৯৫৩ সালে রূপান্তরিত হয় আওয়ামী লীগ নামে। বাংলা ভাষার মর্যাদার প্রশ্নে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ইতোমধ্যেই আন্দোলনে মুখর হয়ে উঠেছে।
পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে বৈষম্যের কথাও তখন তুলছেন কেউ কেউ। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তখন পাকাপাকিভাবে চলে গেছেন পূর্ব পাকিস্তানে। মুসলিম লীগকে ক্ষমতা থেকে হঠানোর জন্য তিনি ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠনে উদ্যোগী হলেন। তার উদ্যোগের ফলেই এই যুক্তফ্রন্ট বহুবার ভেঙে যেতে যেতেও টিঁকে গেছে।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন একবছরের সামান্য কিছু বেশি সময়। এরপর ১৯৫৮ সালে জারি করা হয় সামরিক শাসন। স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান মি. সোহরাওয়ার্দী।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মারা যান বৈরুতে ১৯৬৩ সালের ৫ই ডিসেম্বর। তবে তার আগেই তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন পাকিস্তানে গণতন্ত্রের অগ্র-পুরুষ হিসাবে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ