Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, রোববার   ১৩ এপ্রিল ২০২৫,   চৈত্র ৩০ ১৪৩১

হেলাল আহমেদ

প্রকাশিত: ১২:৫৮, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০
আপডেট: ১৩:০২, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০

তরুণদের ভাবনায় বিজয় দিবস (প্রথম পর্ব)

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভ তরুণদেরই স্বপ্ন এবং সাহসিকতার ফসল। তরুণরা সক্রিয় ভূমিকা পালনের মধ্য দিয়েই আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পথ সহজ হয়েছে। বিজয়ের পর স্বাধীন দেশের অনেক কিছুই অর্জন করেছে বাংলাদেশ, বিজয়ের সূবর্ণ জয়ন্তিকে সামনে রেখে পূরণ হয়েছে স্বপ্নের পদ্মাসেতু।

কিন্তু বিজয়ের এতবছর পরেও কি আমরা মুক্ত হয়েছি বিভিন্ন বৈষম্য থেকে? এ নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিমত নিয়ে বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশেষ প্রতিবেদন তোলে ধরছেন আইনিউজের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি খালেদুল হক।

বিজয় দিবসের প্রাপ্তি, হতাশা ও প্রত্যাশা হেলাল উদ্দিন, শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে সর্বোচ্চ অর্জনের ও আত্মগৌরবের একটি দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি বিজয় ছিনিয়ে আনে। বিজয় যেহেতু আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছে, সুতরাং এ দিনটি চিরকালই বাংলাদেশের ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল হয়ে থাকবে।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের দ্বারপ্রান্তে দেশ। ইতিহাসের এমনই এক সন্ধিক্ষণে উপনীত এবারের বিজয় দিবস। বিজয়ের ৪৯ বছরে প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে। অবশ্য প্রাপ্তিও কম নয়। তবে প্রাপ্তির তুলনায় প্রত্যাশা অনেক বেশি। আর এ কারণে বিজয়ের দিনে প্রত্যাশা, প্রাপ্তি ও হতাশার সমীকরণটা সামনে আসছে আমাদের।

সময়ের তুলনায় বাংলাদেশ খুব বেশি অগ্রসর কিংবা অগ্রগতির স্বাদ না পেলেও এগিয়ে চলেছে ধাপে ধাপে। বর্তমানে আমাদের দেশের কতগুলো অর্থনৈতিক টার্গেট ঘোষণা করা হয়েছে। তা হলো আমরা ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হবো। সারা বিশ্ব এখন বাংলাদেশের এগিয়ে চলা মনোযোগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে।

২০২০ সালে বিজয় দিবসে সব থেকে বড় প্রাপ্তি হল ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে দৈর্ঘ ও ফাউন্ডেশনের গভীরতার দিক থেকে নদীর উপর নির্মিত পৃথিবীর প্রথম স্থান অধিকারকারী ৬.১৫ কিলোমিটারের পদ্মাসেতু।

যা বিশ্ববাসী কে দেখিয়ে দিয়েছে যে, আমরা স্ব-অর্থায়নে বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সক্ষম। প্রাপ্তির সাথে সাথে কিছু হতাশাও রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট স্বাধীনতার দুটো অর্থ করেছিলেন। প্রথমত, ক্ষুধা থেকে মুক্তি বা স্বাধীনতা। দ্বিতীয়ত, ভীতি থেকে মুক্তি বা স্বাধীনতা।

সরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিইএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী স্বাধীনতার ৪৯তম বছরেও দেশে শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে সম্পূর্ণ বেকার ৩৩দশমিক ৩২শতাংশ। এতে আমরা উদ্বিগ্ন না হয়ে পারিনা। যা স্বাধীনতার প্রথম অর্থের পরিপন্থী।

অপরদিকে পুলিশি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ৫ হাজার ৪০০ নারী ও ৮১৫ টি শিশু ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও শালিশ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী ২০২০ সালে আগস্ট মাস পর্যন্ত ৮ মাসে সারাদেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনির হাতে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে ২০৫ জন এবং গুম হয়েছে ৬০৬ জন। যা স্বাধীনতার দ্বিতীয় অর্থের পরিপন্থী।

১৯৭১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক শাসনে বর্ণনা দেখে আমরা বুঝতে পরব যে, বিজয়ের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি আমাদের কতটা পূর্ণ হয়েছে আর কতটা পূর্ণ হয়নি। এ ক্ষেত্রে প্রথমে আমরা রুজভেল্ট কথিত স্বাধীনতার দুটো মানদণ্ড- ক্ষুধা ও ভীতি দ্বারা বিগত ৪৯ বছর পর্যালোচনা করেছি।

এই বছরের স্বাধীনতা দিবসে আমার প্রত্যাশা হল বেকারত্ব, ধর্ষণ, গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গিকার।

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়