নিজস্ব প্রতিবেদক
তরুণদের ভাবনায় বিজয় দিবস (পর্ব-৩)
আব্দুল্লাহ মুনাব্বির
স্বাধীনতার পর ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ আখ্যায়িত করে যারা অপমান করেছিল, সেই তাদের কণ্ঠেই এখন বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভ তরুণদের ফসল। তাদের সক্রিয় ভূমিকা পালনের মধ্য দিয়েই আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পথ সহজ হয়েছে। বিজয়ের পর স্বাধীন দেশের অনেক কিছুই অর্জন করেছে বাংলাদেশ, বিজয়ের সূবর্ণ জয়ন্তীকে সামনে রেখে পূরণ হয়েছে স্বপ্নের পদ্মাসেতু।
কিন্তু বিজয়ের এতবছর পরেও কি আমরা মুক্ত হয়েছি বিভিন্ন বৈষম্য থেকে? এ নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মত তুলে ধরছেন আইনিউজের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি খালেদুল হক-
দুই যুগের পাকিস্তানি শাসনের অবসান ঘটিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান করে নিয়েছিল যে বাংলাদেশ, তা পার করল ৪৯ বছর। নিঃসন্দেহে একজন বাংলাদেশী হিসেবে এই বিজয়ের রক্তিম সূর্য আমাদের জন্যে সবচেয়ে বেশি সুখের।
বিজয়ের এই ৪৯ বছরে প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির খাতা কষতে গেলে দেখব দেশ যেমন উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে একইভাবে লক্ষ্য করব যে শিক্ষা গবেষণায় যেমনি রয়েছি পিছিয়ে তেমনি দারিদ্রতা ও বেকারত্বের হারও অনেক। কংক্রিটের উন্নয়ন যেমন প্রয়োজন তেমনি ভাবে তার থেকেও বেশি প্রয়োজন শিক্ষা গবেষনায় নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন,বেকারত্ব ও দারিদ্রতা মোচন ।
১৯৭০ সালে নির্বাচনী বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধু সুষ্ঠু সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শিক্ষা খাতে বিনিয়োগকে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ বলে অভিহিত করেন।তবে স্বাধীনতার এতো বছর পরেও আমরা শিক্ষা গবেষনায় রয়েছি অনেক বেশি পিছিয়ে,গবেষণায় আমাদের বিনিয়োগও তেমন আশানুরূপ নয়।অপরিকল্পিত ব্যাবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে দারিদ্রতা ও বেকারত্বও আমাদের পিছু ছাড়ছেনা।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা ৩ কোটি। প্রতিষ্ঠানটি আভাস দিয়েছে, কয়েক বছরে তা দ্বিগুণ হয়ে ৬ কোটিতে দাঁড়াবে, যা মোট জনসংখ্যার ৩৯.৪০ শতাংশ হবে। দুর্নীতি দমন ও সুষ্ঠ পরিকল্পনায় আমাদেরকে এই সমস্যাগুলো মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হবে নচেৎ দিনে দিনে পিছিয়েই যেতে হবে।
আরেকটি কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই ,যেমনটি ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ারের বলেছিলেন৷ আমি তোমার কথার সাথে বিন্দুমাত্র একমত না হতে পারি, কিন্তু তোমার কথা বলার অধিকার রক্ষার জন্য আমি জীবন দেবো, এটাই আমার বড় বিজয়। আশাকরি এই বিজয়ের পথেও হাটবে আমার দেশ।
প্রাপ্তির খাতায়ও রয়েছে আমাদের অনেক অর্জন। স্বাধীনতার পর থেকেই আমরা ছিলাম নিম্ন আয়ের দেশ হিসেবে তবে কিছুদিন আগেই আমরা তা মাড়িয়ে নিম্ন মাধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে উন্নীত হয়েছি যা নিঃসন্দেহে আমাদের দেশের জন্যে অনেক বড় বিজয়।
সময়ের পরিক্রমায় উদ্ভাবন হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোগ, যার মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মক্ষেত্রের। সেই সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে উদ্যোক্তার, যারা সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে অনেক বেশি ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদী।
স্বাধীনতার পর ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ আখ্যায়িত করে যারা অপমান করেছিল, সেই তাদের কণ্ঠেই এখন বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা। দারিদ্র্য আর দুর্যোগের বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পথে।
পরিশেষে এই আশা ব্যাক্ত করতে চাই। বাঙালির মুক্তি এসেছিল অনেক রক্ত ঝরিয়ে, শোষণ-বঞ্চনা আর যন্ত্রণার শেষে লাখো মানুষের আত্মহুতি ও বাংলা মায়ের আত্মদানের বিনিময়ে।বাঙালি জাতি যে প্রাণ, যে অনুপ্রেরণা নিয়ে লাখো শহীদের আত্মহুতির বিনিময়ে বিজয় অর্জন করেছে,সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়েই শিক্ষা গবেষনায় আরো উন্নতি লাভ করে,দারিদ্রতা বেকারত্ব ও দুর্নীতির অবসান ঘটিয়ে পূর্ণ বাক স্বাধীনতার ভিত্তি স্থাপন করে পরিপূর্ণ বিজয় অর্জন করবে আমার প্রিয় বাংলাদেশ।
আব্দুল্লাহ মুনাব্বির , শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ