শ্যামলাল গোঁসাই
কাক নিয়ে দরকারি কথা
কাক, আমাদের প্রত্যহ দেখা পাখি জগতের সবথেকে পরিচিত পাখি। কিন্তু এর কালো হওয়ায় এর সৌন্দর্য নিয়ে মানুষের আগ্রহ কম। তাও কাকের কালো পাখায় ধূসর সন্ধ্যা নেমেছে অনেক কবির কবিতায়। শুধু কি তাই?
শুধু তাই নয়, পাখিজগতের সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান পাখি বলে মনে করা হয় কাককে। প্রাণীজগতের অন্যতম বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে এদের গণ্য করা হয়। আধুনিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কাক যে কেবল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারে তাই নয়, যন্ত্রপাতি নির্মাণেও এরা পারদর্শী। তাই একবার ভেবে দেখুন কাকের চিন্তাশক্তি!
খুব বেশিদিন নয়, রাশিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ কবুতর, কাক ও ডলফিন ব্যবহার করতো গুপ্তচর হিসেবে। কাকের গুরত্ব বুঝে অনেকেই একে অতীতে এভাবে ব্যবহার করতেন এমন ইতিহাস পাওয়া যায়।
এ পর্যন্ত বহুভাবে বিজ্ঞানীরা কাকের বুদ্ধিমত্তার ওপর পরীক্ষা চালিয়েছেন।
রাশিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ কাক পাঠাতো জানালায় গোপন মাইক ফেলে আসার জন্য।
সিআইএ একটি কাককে ৪০ গ্রাম পর্যন্ত ওজনের কোন বস্তু জানালার ধারে ফেলে আসা বা নিয়ে আসার জন্য প্রশিক্ষণ দিতো। যেসব ভবনে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকতো সেখানেই কাককে পাঠানো হতো সমরাঙ্গণের আরেক যোদ্ধা হিসেবে!
লেজার তাক করে কোথায় নির্ধারিত বস্তুটি ফেলতে হবে সেই টার্গেট বুঝিয়ে দেয়া হতো কাককে। আর ছোট বাতির মাধ্যমে সংকেত দিয়ে তাকে ফিরে আসতে সাহায্য করা হতো।
উষ্ণমণ্ডলীয় সব মহাদেশে প্রায় ৪০ প্রজাতির কাক দেখা যায়। অধিকাংশ কাকের দেহ বর্ণ কালো রঙের। পক্ষিকুলে এরা ‘করভিড’ পরিবারের সদস্য। এদেরকে দলবদ্ধভাবে থাকতে দেখা যায়। কাক সর্বভূক পাখি। এরা সাধারণত ২০-৩০ বছর বাঁচে।
জ্ঞান ও বুদ্ধির দৌড়ে মানুষ ছাড়া অন্যান্য প্রাইমেটদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে অন্যতম কাক
তবে উত্তর আমেরিকান কিছু কিছু কাক প্রায় ৫৯ বছর পর্যন্তও বাঁচে। এদের বৈজ্ঞানিক নাম ‘Corvus Brachyrhynchos’ । নানা প্রজাতির কাক থাকলেও আমাদের দেশে সাধারণত পাতি কাক, দাঁড় কাক ও পাহাড়ি কাক দেখতে পাওয়া যায়।
বেশ কিছু বছর আগে নাথান জে এমারি ও নিকোলা এস ক্লেটন নামক দুই গবেষকের প্রকাশিত ‘The Mentality Of Crows: Convergent evolution Of Intelligence in Corvid and Apes’প্রবন্ধে তারা বলেছেন, ‘বুদ্ধির দিক থেকে কাক শুধু পাখিদের পেছনে ফেলেছে এমন নয়। জ্ঞান ও বুদ্ধির দৌড়ে মানুষ ছাড়া অন্যান্য প্রাইমেটদের প্রতিদ্বন্দ্বী হলো কাক ও করভিড পরিবারের সদস্যরা।‘
ঈশপের 'কাক ও কলসি' গল্পের কথা কে না জানেন! সেই যে তৃষ্ণার্ত কাক, যে কি না কলসির তলানিতে পড়ে থাকা পানি পান করার জন্য বুদ্ধি করে কলসিতে একটির পর একটি নুড়ি পাথর ফেলেছিল। অনেক চেষ্টার পর কাকটি তার কাজে সফল হয়েছিল।
ঈশপের এই গল্পেও একটি কাকের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়।
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ