সীমান্ত দাস, নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট: ০০:১২, ১৮ জুলাই ২০২১
হোমিকরসিন: পাট থেকে বাংলাদেশি বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত নতুন অ্যান্টিবায়েটিক
পাটকে সোনালী আঁশ বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণও রয়েছে। এই পাটই আমাদের দিচ্ছে পলিথিনের বিকল্প। পাটজাত দ্রব্য আনছে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রাও। এবার এই পাট থেকেই একদল বিজ্ঞানী একেবারে নতুন ধরনের একটি অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান পেয়েছেন।
বর্তমানে সংক্রামক নানা ধরনের অসুখে ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ কাজ না করার বিষয়টি বিশ্বজুড়েই চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিচ্ছে। সর্বশেষ আবিষ্কৃত মেরোপিনামেরও অনেক ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে অকার্যকারিতার তথ্য পাওয়া গেছে। এমন অবস্থায় আশার আলো দেখাচ্ছে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত নতুন অ্যান্টিবায়োটিক ‘হোমিকরসিন’। অ্যানিমেল (প্রাণী) ও মানবদেহে এটি প্রয়োগের পর সফলতা পাওয়া গেলে নতুন এই অ্যান্টিবায়োটিক জীবন বাঁচাবে অসংখ্য মরণাপন্ন মানুষের।
হোমিকরসিন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানীর এই আবিষ্কার নিয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই অ্যান্টিবায়োটিকের গঠন ও বৈশিষ্ট্য দেখে মনে হচ্ছে যে এটি শক্তিশালী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে মানুষের জীবন বাঁচাতে পারবে বলে তারা আশা করছেন।
পাট থেকে এই অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করা হয়েছে যার নাম দেওয়া হয়েছে হোমিকরসিন। প্রাপ্ত ব্যাকটেরিয়া ও পাটের বৈজ্ঞানিক নাম মিলিয়ে এই অ্যান্টিবায়োটিকটির নামকরণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞান বিষয়ক আন্তর্জাতিক সাময়িকী নেচারের সায়েন্টিফিক রিপোর্টসে সম্প্রতি এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
যাদের অবদানে এই আবিষ্কার
পাট নিয়ে গবেষণা করতে গিয়েই এমন সফলতা পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী। এ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসিনা খান। যৌথভাবে কাজ করেছেন একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম ও জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আফতাব উদ্দিন। গবেষণা কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন শাম্মী আক্তার, মাহবুবা ফেরদৌস, বদরুল হায়দার চৌধুরী ও আল আমিন নামের চার শিক্ষার্থী।
বিবিসি বাংলা এই বিষয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে ড. হাসিনা জানান, পাটের জীবন রহস্য উদঘাটনের সময় তিনি এর ভেতরে বিভিন্ন ধরনের অণুজীবের সন্ধান পেয়েছিলেন। এদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানার আগ্রহ থেকেই তিনি বিভিন্ন অণুজীবের ওপর গবেষণা শুরু করেছিলেন। তার এক পর্যায়ে অনেকটা আকস্মিকভাবেই তিনি এই অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান পান।
নতুন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারে গবেষণা দলের সদস্যরা।
হাসিনা খান বলেন, "এটা অনেকটা অপ্রত্যাশিতই বলবো। পাট নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমি পাটের অণুজীবের সন্ধান পেলাম। তখন সেগুলোকে খুব ইন্টারেস্টিং বলে মনে হলো।"
এছাড়াও অ্যান্টিবায়োটিকটির গঠন জানতে জাপানের টোকিও ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. কাজুহিসা সেইকিমিজু এবং যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব অ্যাবারডিনের অধ্যাপক ড. মার্সেল জাসপারস যথেষ্ট সাহায্য করছেন। অধ্যাপক সেইকিমিজু ইনফেকশন মডেলের মধ্যে হোমিকরসিনের কার্যকারিতা এবং NMR-এর মাধ্যমে এই কম্পাউন্ডের গঠন বুঝতে সাহায্য করছেন। অধ্যাপক মার্সেল তাঁর ল্যাবে এই অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক গঠন বিশ্লেষণ করতে সহায়তা করছেন।
আবিষ্কারের গল্প
আবিষ্কারের পুরো গল্পটা বলেছেন অধ্যাপক ড. হাসিনা খান। তিনি বলেন, দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে পাট নিয়ে গবেষণা করছি। পাটের জীবনরহস্য বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এর বিভিন্ন অংশে নানা ধরনের অণুজীবের সন্ধান পেয়েছি। দেখলাম, সেখানে উদ্ভিদের ডিএনএ তো আছেই, সঙ্গে অণুজীবের ডিএনএও আছে। প্রথম দিকে ভেবেছি হয়তো ল্যাবে ছেলে-মেয়েরা পাটের ডিএনএ বের করতে গিয়ে অণুজীবের ডিএনএ মিশিয়ে ফেলেছে। পরে এ নিয়ে বিশদ পড়াশোনা করলাম। আসলে আমিই ভুল ছিলাম। যেকোনো জীবের মধ্যে ওতপ্রোতভাবে বাস করে অনেক অণুজীব।
'অনুসন্ধানে দেখলাম, গাছের যে বৈশিষ্ট্যগুলোর কথা আমরা জানি, আসলে সেগুলো অণুজীবের গুণাবলি থেকেও কিছু কিছু আসে। এসব অণুজীবের প্রকার আর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কী হতে পারে তা জানার আগ্রহ থেকেই নতুন গবেষণায় মনোযোগী হলাম। এগুলো চিহ্নিত করে শ্রেণিবিন্যাস করতে চাইলাম। পরে আমার সঙ্গে যুক্ত হলেন সহকর্মী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম। অণুজীব নিয়ে কাজ করার অনেক অভিজ্ঞতা আছে তাঁর।'
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন,
প্রত্যেক উদ্ভিদের সাথেই বসবাস করে কোটি কোটি অণুজীব। এরা উদ্ভিদের জন্য নানা ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরি করে। এছাড়াও আরো কিছু অণুজীব আছে যারা আমাদেরও কাজে আসে। তো আমরা এরকম এক অণুজীবের সন্ধান পেলাম যা অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পাটের তন্তুর খাঁজে খাঁজে বহু অণুজীব বা ব্যাকটেরিয়া বাস করে। এদের মধ্যে তারা একটি ব্যাকটেরিয়ার খোঁজ পান যা তার নিজের শরীর থেকে এমন কিছু তৈরি করে, যাতে অন্য ব্যাকটেরিয়াগুলো মারা যায়।
যে অণুজীবের ভেতরে তারা অভিনব এই ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পান সেটি তারা পেয়েছেন পাটের বীজের ভেতরে। তারা দেখলেন স্টেফাইলোকক্বাস হোমিনিস নামের এই ব্যাকটেরিয়াটি একটি অ্যান্টিবায়োটিকের মতো কাজ করছে।
ল্যাবরেটরিতে গবেষণা।
একটু পিছনের গল্প
দেশের জনপ্রিয় গণমাধ্যম কালের কণ্ঠকে দেওয়া তথ্যে বিজ্ঞানী হাসিনা খান জানান, মোটাদাগে এই কর্মযজ্ঞের শুরু হয় ২০১৪ সালে। ইউজিসির হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহেন্সমেন্ট প্রজেক্টের (HEQEP) অধীনে। এই প্রকল্পে আমাদের একটা উদ্দেশ্য ছিল পাটের মধ্যে যেসব অণুজীব বাস করে সেগুলো চিহ্নিত করে শ্রেণিবিন্যাস করা। শুরুর দিকে পাটের বীজ, পাতা, শিকড়, বাকলের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অণুজীবের উপস্থিতি দেখতে পাই। সেই অণুজীবগুলো বিশ্লেষণ করতে গিয়েই প্রায় ৫০টির বেশি ব্যাকটেরিয়া এবং ৩৫টির মতো ছত্রাকের সন্ধান পেলাম। যেগুলোকে আমরা এন্ডোফাইট বলি। উদ্ভিদের বৃদ্ধি, পুষ্টি উপাদানের উপস্থিতি, ইমিউনিটি রক্ষাসহ উদ্ভিদকে তারা নানাভাবে সাহায্য করে। অণুজীবগুলো আবার উদ্ভিদ থেকে রসদও সংগ্রহ করে। মানে পরস্পরের মধ্যে একটা মিথস্ক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পরে এগুলোকে আমরা আলাদা করলাম। নানাভাবে বিশ্লেষণ করলাম।
পৃথিবীজুড়েই চিকিৎসাবিজ্ঞানে এখন একটা বড় সমস্যা অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স। আমাদের একটা আগ্রহ ছিল, এই অণুজীবগুলোর মধ্যে থেকে নতুন কোনো অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যায় কি না দেখা। সেই সঙ্গে এটা কোনো এনজাইম তৈরি করে কি না, ক্যান্সার প্রতিরোধী কোনো যৌগ আছে কি না ইত্যাদিও দেখতে চাইলাম। কাজ করতে গিয়েই দেখলাম, পাটের মধ্যে বসবাসকারী অনেক ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল কম্পাউন্ড তৈরি করে। কিন্তু এর মধ্যে কোনটা যে ইউনিক (অনন্য) তখনো জানতাম না।
কেন এটি আলাদা?
সুপারবাগ নামে পরিচিত যেসব ব্যাকটেরিয়া প্রচলিত কোনো অ্যান্টিবায়োটিকেই কাবু হয় না, তাদের সাথে লড়াই-এ হোমিকরসিন সফল হবে বলে তারা আশা করছেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানে বর্তমানে যেসব অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে তার অনেকগুলোই জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে এবং দিনে দিনে আরো অনেক অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধেই প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠছে। অর্থাৎ অনেক অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গেই অনেক জীবাণু খাপ খাইয়ে নিয়েছে।
এ কারণে সারা বিশ্বেই অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানান, তারা যে হোমিকরসিন অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান পেয়েছেন সেটি বেশ কিছু শক্তিশালী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে ভালো কাজ করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুপরিচিত হাসিনা খান।
হাসিনা খান বলেন, "এটার গঠনটা এমন যে তার বিরুদ্ধে অণুজীবরা তাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে না। একেবারেই যে পারে না সেটা বলবো না, সহজে পারে না। আমরা দেখেছি সুপারবাগের বিরুদ্ধেও এটা ভালো কাজ করে। আমাদের মনে হয় যে এর বিরুদ্ধে তারা সহজেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে না। এনিয়ে আমাদের ভয়ও খুব কম।"
তিনি জানান, নতুন এই অ্যান্টিবায়োটিকের নাম ‘হোমিকরসিন’। ব্যাকটেরিয়া (Staphylococcus hominis) এবং পাটের (Corchorus olitorius) জাত উেসর কথা বিবেচনা করেই এমন নাম দিয়েছি। এর পাঁচটা ধরন আছে। আপাতত দুটি ধরন Homicorcin এবং এর একটি ভিন্ন রূপ ‘Homicorcin-1’-এর বিশুদ্ধকরণ, অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে তাদের কার্যকারিতা দেখা, প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে এদের তুলনামূলক চিত্র, নতুন এই অ্যান্টিবায়োটিকের বিক্রিয়া কৌশল জানা এবং কেন এরা উচ্চতাপ কিংবা উচ্চমাত্রার অম্ল বা ক্ষারেও সক্রিয় থাকে—তা দেখা হয়েছে। আমাদের আবিষ্কৃত অ্যান্টিবায়োটিকের গঠন বেশ শক্তিশালী।
ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স নিয়ে সারা পৃথিবীর উদ্বেগ—MRSA (মেটিসিলিন রেজিস্ট্যান্স স্টেফাইলোকক্কাস অরিয়াস) ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধেও এটা ভালো কাজ করছে। এটি গ্রাম-পজিটিভ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রামিত রোগের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
পাঁচ ভ্যারিয়েন্ট
বিজ্ঞানীরা তাদের আবিষ্কৃত অ্যান্টিবায়োটিকের পাঁচটি ভ্যারিয়্যান্ট বা ধরনের সন্ধান পেয়েছেন। এর মধ্যে দুটো ভ্যারিয়্যান্টের কথা সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জর্নালে উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি তিনটি ভ্যারিয়্যান্টের কার্যকারিতা নিয়ে এখনও গবেষণা অব্যাহত রয়েছে।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এই পাঁচ রকমের ভ্যারিয়্যান্ট থেকে অন্তত পাঁচটি অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করা যেতে পারে যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে তৈরি করতে পারে নতুন এক ইতিহাস।
তবে এই হোমিকরসিন অ্যান্টিবায়োটিক এখনই চিকিৎসায় ব্যবহার করা যাবে না। এনিয়ে আরো গবেষণা ও পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।
প্রয়োজন উৎপাদন
ড. হাসিনা খান বলেন, এটা নিয়ে আরো কাজ করতে হলে যেটা প্রথমেই দরকার সেটা হলো এর প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন। যে অণুজীবের জেনেটিক্স আমাদের জানা এবং যা আমরা সহজেই জন্মাতে পারি তার ভেতরে অ্যান্টিবায়োটিকের জিনগুলো প্রবেশ করানো হবে। সেই অণুজীবের মধ্যেই অ্যান্টিবায়োটিকটির উৎপাদন আমরা বাড়াবো।
তিনি জানান যে অনেক ওষুধ এভাবেই তৈরি করা হয়েছে। ইনসুলিন এভাবেই তৈরি হয়। অ্যান্টিবায়োটিকটি বেশি পরিমাণে পেলে সেটি ইঁদুরে বা সিল্ক ওয়ার্মের দেহে পরীক্ষা করে দেখতে হবে এটি কতোটা কার্যকর।
তিনি বলেন, এর যে গঠন তার কারণে এটি মানুষের শরীরে প্রবেশের পর দেহের এনজাইম এটিকে ভেঙে ফেলতে পারে। আমাদের এটাও ভেবে দেখতে হবে এই অ্যান্টিবায়োটিক কিভাবে শরীরে প্রবেশ করানো যায় যাতে এটি শরীরের ভেতরে গিয়ে না ভাঙে।
তিনি জানান যে ইতোমধ্যে তারা নতুন অ্যান্টিবায়োটিকটিকে বিশুদ্ধ করেছেন এবং এর গঠন সম্পর্কে সম্যক ধারণা পেয়েছেন।
এধরনের অ্যান্টিবায়োটিকগুলোকে কিন্তু খুব সহজেই ল্যাবরেটরিতে পরিবর্তন করা যায়। পরিবর্তন করে এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা যায়। এরকম কিছু কাজ আমরা পরে করবো। কিন্তু এমুহূর্তে কাজ হচ্ছে- এর প্রচুর উৎপাদন এবং শরীরের ভেতরে এটা কিভাবে কাজ করবে সেটা দেখা।
এটি আবিষ্কারের তাৎপর্য
১. বিশেষ গঠনের কারণে এই অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা
২. এটি প্রতিরোধ করা কঠিন
৩. ল্যাবরেটরিতে এটি পরিবর্তন করা সহজ
৪. পরিবর্তন করে কার্যাকারিতা বাড়ানো যাবে এবং
৫. প্রাকৃতিকভাবে এর উৎপাদন হবে সাশ্রয়ী।
বহির্বিশ্বে এই আবিষ্কারের প্রতিক্রিয়া
হাসিনা খান জানান, এক পর্যায়ে অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে গবেষণাপত্র লিখলাম। সেটা বিশ্বখ্যাত নেচার পাবলিশিং গ্রুপের জার্নাল ‘সায়েন্টিক রিপোর্টসে’ সাবমিট করেছি ফেব্রুয়ারিতে। রিভিউ শেষে এটা প্রকাশিত হয়েছে ২৭ মে। গবেষণাপত্রটির শিরোনাম A plant endophyte Staphylococcus hominis strain MBL_AB63 produces a novel lantibiotic, homicorcin and a position one variant.
সায়েন্টিফিক রিপোর্টসে হোমিকরসিন
এই গবেষণাকাজে আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থী শাম্মী আক্তার, মাহবুবা ফেরদৌস, বদরুল হায়দার চৌধুরী ও আল আমিন সহযোগিতা করেছে। সহযোগিতা পেয়েছি বিসিএসআইআরের কাছ থেকেও।
উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ
এখন বিজ্ঞানীরা নতুন অ্যান্টিবায়োটিকের খোঁজে হয়রান। সর্বশেষ অ্যান্টিবায়োটিক মেরোপিনামও এখন ব্যবহার করছেন চিকিৎসকরা। মেরোপিনামের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়েছে বলে খবর মিলছে। মানে চিকিৎসকদের হাতে এখন নতুন কোনো অ্যান্টিবায়োটিক নেই।
হাসিনা খান বলেন, আইসিডিডিআরবিতে সংরক্ষিত আছে এমন কিছু ব্যাকটেরিয়ার নাম জানি, যেটা ১২টি অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্যান্স। এ ধরনের একটি সুপারবাগ দ্বারা যদি কেউ আক্রান্ত হয়, তাহলে কোনো অ্যান্টিবায়োটিকই তার শরীরে কাজ করবে না। এসব দিক বিবেচনায় নতুন এই অ্যান্টিবায়োটিক অদূর ভবিষ্যতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তে উন্মোচন করতে পারে। নব আবিষ্কৃত অ্যান্টিবায়োটিকটি একটি পেপটাইড (ছোট প্রোটিন) হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধ গড়ে তোলার আশঙ্কা কম। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো ‘হোমিকরসিন’ অ্যান্টিবায়োটিকের সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা, গুগল, কালের কণ্ঠ
আইনিউজ/এসডি
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ