সীমান্ত দাস
আপডেট: ১৪:১৪, ৫ এপ্রিল ২০২২
ফটোফিচার: মণিপুরিদের নববর্ষ উৎসব ‘চৈরাউবা কুম্মৈ’
মণিপুরিদের নববর্ষ চৈরাউবা উৎসব। রনজিৎ জনি
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মণিপুরিদের নববর্ষ বা চৈরাউবা কুম্মৈ উৎসব দিনব্যাপি বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। গত শনিবার (২ এপ্রিল) মণিপুরি চৈরাউবা উৎসব উদযাপন পর্ষদের আয়োজনে উপজেলার আদমপুর তেতইগাঁও মণিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় এ উৎসব।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে এ উৎসব। আইনিউজের নিজস্ব ফটোসাংবাদিক রনজিৎ জনির ক্যামেরায় উঠে আসে এর দৃশ্য।
সকালে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা। রনজিৎ জনি
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় ও মণিপুরিদের ঐতিহ্যবাহী পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উৎসব উদ্বোধনের পর এক বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়।
মণিপুরিদের তৎকালীন রাজা মোরিয়া ফমবালচা এই বর্ষগণনার পদ্ধতি চালু করেন। মণিপুরি সন গণনার হিসাব অনুযায়ী বারো মাসের নাম হলো শজিবু, কালেন, ইঙা, ইঙেন, থরান, লাংবন, মেরা, হিয়াঙ্গৈ, পোইনু, রাকচিং, ফাইরেন ও লমতা।
রনজিৎ জনির ফ্রেমে নিজস্ব পোশাকে মণিপুরি কিশোরী।
ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, মণিপুরিদের নিজস্ব একটি বর্ষগণনা রীতি রয়েছে। ‘মালিয়াকুম’ নামের এই চান্দ্রবর্ষের হিসাবে ৩৪২০তম বর্ষ ২ এপ্রিল শুরু হলো। অন্যান্য বছরের মতো এবারও এই দিন মণিপুরি নববর্ষ উৎসব ‘চৈরাউবা কুম্মৈ ৩৪২০’ উদ্যাপনের লক্ষ্যে কমলগঞ্জে মণিপুরিপাড়ার প্রতিটি ঘরে আনন্দ ও উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।
নিজেদের এই উৎসবে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন মণিপুরিরা।
উৎসবের আগের রাত জেগে মণিপুরি যুবক যুবতীরা কড়ি খেলে হাসি আনন্দে কাটায়। মণিপুরি লোকবিশ্বাসে এই রাতকে বলা হয় ভাগ্য রজনী। এই রাতেই দেবতারা মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করে থাকেন। উৎসবের পরের পাঁচ দিন তাঁরা খেলাধুলা করে হাসি আনন্দে কাটান বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত মণিপুরিরা এ উৎসবে এসে অংশগ্রহণ করে।
উৎসবে পসরা সাজিয়ে বসে বিভিন্ন খাবারের দোকানও
শোভাযাত্রা শেষে মহিলাদের 'লিকোন শান্নবা' (কড়ি খেলা) প্রতিযোগিতা এবং শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল সাড়ে ৫টায় শুরু হয় আলোচনা সভা, গুণীজন সংবর্ধনা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
নিজস্ব সংস্কৃতির নাচে-গানে মেতে ওঠেন তাঁরা। রনজিৎ জনি
এরপর ছিল সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মণিপুরিদের ঐতিহ্যবাহী নাচের পোশাকে সজ্জিত কিশোরী-তরুণী শিল্পীদের অপরূপ পরিবেশনায় মুখর হয়ে ওঠে অনুষ্ঠান।
চৈরাউবা উৎসবের সবশেষ আয়োজন ছিল মণিপুরিদের ঐতিহ্যবাহী লোকনৃত্য 'থাবল চোংবা'।
- আরও পড়ুন- রনজিৎ জনির চোখে আদিবাসী সংস্কৃতি
খোলা মাঠে প্যান্ডেল সাজিয়ে বৈদ্যুতিক বাল্বের কৃত্রিম আলোয় অনুষ্ঠিত থাবল চোংবাতে অংশ নেয় বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী ও যুবক-যুবতী।
জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অসংখ্য নবীন-প্রবীণের উপস্থিতিতে এই থাবল চোংবা অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে প্রাণের আবেগ আর আনন্দে মুখর।
নিজস্ব ধারার নাচের সাথে ছিলো তাঁদের ঐতিহ্যবাহী গানও। রনজিৎ জনি
এক আনন্দিত আবেগ আর প্রাণোচ্ছল পরিবেশে বিশ্বমানবতার কল্যাণ কামনায় সমাপ্তি টানা হয় মণিপুরি চৈরাউবা উৎসবের অনুষ্ঠানমালার।
আইনিউজ/এসডি
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ