ফিচার
আপডেট: ১৪:১০, ২৩ জুন ২০২২
একটি প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে ২`শ বছরের জন্য ডুবেছিলো বাংলার স্বাধীনতার সূর্য

আজ ২৩ জুন, ঐতিহাসিক পলাশী ট্র্যাজেডি দিবস। বাংলার ইতিহাসে আজকের এই দিনে ইংরেজদের কাছে হেরে ২০০ বছরের জন্য ডুবে গিয়েছিলো বাংলার স্বাধীনতার সূর্য। ধনৈশ্বর্যে ভরপুর বাংলাকে দখল করে নিয়েছিলো ইংরেজরা। সহকর্মীদের চাতুরির জন্য বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব কিশোর সিরাজদ্দৌলার পরাজয় ঘটে।
১৭৫৭ সালের এই দিনে প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে এক প্রহসনমূলক যুদ্ধ হয়েছিল পলাশীর আম্রকাননে । সেদিন ইংরেজদের সঙ্গে তরুণ নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়।
মীর জাফর আর ঘসেটি বেগমদের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বাধীনতার সেই সূর্য অস্তমিত হলেও ঐতিহাসিক পলাশীর কথা জাতিগতভাবেই সবার স্মরণে রয়ে গেছে। সেদিন পলাশীতে যে বিশ্বাসঘাতকতার নজির রচিত হয়েছিল, তা আজো বিশ্বাসঘাতকতার উদাহরণ হিসেবেই ব্যবহার করেন বাঙালিরা। নবাব সিরাজউদ্দৌলার নাম বাংলার স্বাধীনতার জন্য জীবন বিসর্জনকারী হিসেবে আজো গেঁথে আছে মানুষের হৃদয়ের কন্দরে অন্তরের মনিকোঠায়।
বেদনাবহ সেই স্মৃতিকে স্মরণ করে প্রতি বছর এ অঞ্চলের মানুষ দিনটিকে পালন করে আসছে ‘পলাশী ট্র্যাজেডি দিবস’ হিসেবে। দিবসটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৭১৯ খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদ কুলি খাঁ বাংলার সুবেদার নিযুক্ত হন। তার মৃত্যুর পর সুজাউদ্দিন খাঁ বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার সিংহাসন লাভ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আলীবর্দি খাঁয়ের পর ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল সিরাজউদ্দৌলা এই পদে আসীন হন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২২ বছর।
এ সময় তরুণ নবাবের সঙ্গে ইংরেজদের বিভিন্ন কারণে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এছাড়া মসনদের জন্য লালায়িত ছিলেন সিরাজের পিতামহ আলীবর্দি খাঁর বিশ্বস্ত অনুচর মীর জাফর ও খালা ঘষেটি বেগম। এরই প্রেক্ষিতে ইংরেজদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে নীলনকশা পাকাপোক্ত করেন তারা।
১৭৫৭ সালের ২৩ এপ্রিল কলকাতা পরিষদ নবাবকে সিংহাসনচ্যুত করার পক্ষে প্রস্তাব পাস করে। এই প্রস্তাব কার্যকর করতে ইংরেজ সেনাপতি লর্ড ক্লাইভ রাজ দরবারের অভিজাত সদস্য উমিচাঁদকে ‘এজেন্ট’ নিযুক্ত করে।
ওই বছরের ২৩ জুন ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশী প্রান্তরের আম্রকাননে সকাল সাড়ে ১০টায় ইংরেজ ও নবাবের বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
মীর মদন ও মোহন লালের বীরত্ব সত্ত্বেও প্রধান সেনাপতি মীর জাফরসহ জগৎশেঠ, রায়দুর্লভ, উমিচাঁদ ও ইয়ার লতিফ প্রমুখ প্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারীর বিশ্বাসঘাতকতায় নবাবের পরাজয় ঘটে। সেই সঙ্গে প্রায় পৌনে ২০০ বছরের জন্য অস্তমিত হয় বাংলার স্বাধীনতার লাল সূর্য।
পরাজয়ের পর নবাব সিরাজউদ্দৌলার বেদনাদায়ক মৃত্যু হয়। উপমহাদেশের মানুষ তাকে আজও শ্রদ্ধাভরে স্মরন করে। সেদিন নবাবের সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি।
পলাশী বিপর্যয়ের পর শোষিত বঞ্চিত শ্রেণি একদিনের জন্যও স্বাধীনতা সংগ্রাম বন্ধ রাখেনি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র জন্মলাভ করে। এরপর ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম আর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতাকামী বাঙালি তাঁদের হৃত গৌরব ফিরে পায়। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
আইনিউজ/এইচএ
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!