হেলাল আহমেদ
আপডেট: ১১:৪২, ১৩ জুলাই ২০২২
আষাঢ়ী পূর্ণিমা এবং গৌতম বুদ্ধকে ঘিরে তিনটি ঘটনা...
বৌদ্ধদের অন্যতম সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথি আজ বুধবার (১৩ জুলাই)। এই শুভানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা জীবনকে আরও সাবলীল, সুন্দর আর ঋদ্ধ করার প্রচেষ্টাকে ফের একবার নবায়ন করে থাকেন। শুধু সাধারণ বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরাই নয়, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের জন্যও আষাঢ়ী পূর্ণিমা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। বৌদ্ধরা এদিনটিকে সচরাচর শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা হিসেবে অভিহিত করে থাকে।
বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধের সময়ে আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথিকে কেন্দ্র করে তিনটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে। এক আষাঢ়ে পূর্ণিমায় গৌতম বুদ্ধ সিদ্ধার্থরূপে মাতৃগর্ভে প্রবিষ্ট হয়েছিলেন। আরেক পূর্ণিমায় তিনি গৃহত্যাগ করে সন্নাসব্রত ধারণ করেন। এবং ছয় বছর কঠোর সাধনা করে মোক্ষ লাভ করেন। আর শেষে আরেক পূর্ণিমায় তিনি মহাঅনির্বাণ লাভ করেন।
জনশ্রুতি আছে, এক আষাঢ়ী পূর্ণিমায় রাজা শুদ্ধোধনের মহিষী রাণী মহামায়া উপোমথ ব্রত গ্রহণ করলেন। সে রাত্রে রাণী মহামায়া স্বপ্নমগ্না হয়ে দেখলেন যে চার দিক থেকে পাল দেবগণ এসে পালঙ্কসহ তাকে নিয়ে গেল হিমালয়ের পর্বতোপরি এক সমতল ভূমির ওপর। সেখানে মহামায়াকে সুউচ্চ এক মহাশাল বৃক্ষতলে রেখে দেবগণ সশ্রদ্ধ ভঙ্গিমায় এক পাশে অবস্থান দাঁড়িয়ে পড়ল। পরে দেবগণের মহিষীরা এসে মায়াদেবীকে হিমালয়ের মানস সরোবরে স্নান করিয়ে দিব্য বসন-ভূষণ ও মাল্যগন্ধে সাজিয়ে দিলেন। অনতিদূরে একটি শুভ্র রজতপর্বতে ছিল একটি সুবর্ণ প্রাসাদ। চারিদিক থেকে পাল দেবগণ মহারাজা পুনঃপালঙ্কসহ দেবীকে সেই প্রাসাদে নিয়ে গিয়ে দিব্যশয্যায় শুইয়ে দিল। তখন অদূরবর্তী সুবর্ণ পর্বত থেকে এক শ্বেতহসত্মী নেমে এসে উত্তরদিক থেকে অগ্রসর হয়ে রজতপর্বতে আরোহণ করলেন। রজত শুভ্রশু একটি শ্বেতপদ্মের রূপ পরিগ্রহ করে কবীবর মহাক্রোষ্ণনাদে সুবর্ণ প্রাসাদে প্রবেশ করলেন।
তারপর ধীরে ধীরে তিনবার মাতৃশয্যা প্রদক্ষিণপূর্বক মায়ের শরীরের দক্ষিণ পার্শ্বভেদ করে মাতৃজঠরে প্রবেশ করলেন। পর দিন প্রত্যুষে রাণী মহামায়া রাজা শুদ্ধোধনকে স্বপ্ন বৃত্তান্ত অবহিত করলেন। কালবিলম্ব না-করে রাজা শুদ্ধোধনকে চৌষট্টিজন জ্যোতির্বিদ এনে স্বপ্নের ফল জানতে চাইলেন। তারা বললেন, "মহারাজ চিন্তা করবেন না, আপনার মহিষী সন্তানসম্ভবা। তিনি এমন এক পুত্ররত্ন লাভ করবেন যার ফলে বসুন্ধরা ধন্য হবে।"
আরেক আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা রাতে মাত্র ২৯ বৎসর বয়সে তিনি স্ত্রী-পুত্র-রাজ্য সব মায়া ছেড়ে গৃহত্যাগ করেন। গয়ার বোধিদ্রুম মূলে একাধারে ছয় বছর কঠোর তপস্যার পর পরম জ্ঞান "মহাবোধি" লাভ করেন। নবলব্ধ ধর্ম প্রকাশের উদ্দেশ্যে তিনি আরেক আষাঢ়ী পূর্ণিমাতে সারানাথের ঈষিপত্তন মৃগদাবে আগমন করেন। বুদ্ধ এক আষাঢ়ী পূর্ণিমার রাতে ঈষিপত্তন মৃগদাবে সেই পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদেরকে প্রথম ধর্মদেশনা "ধর্মচক্র প্রবর্তন সূত্র" দেশনা করলেন। কৌণ্ডণ্য, বপ্প, ভদ্দীয়, মহানাম ও অশ্বজিত্—এ পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদের কাছে তার নবলব্ধ সদ্ধর্মকে প্রকাশ করেন।
পরে আরো এক পূর্ণিমা তিথিতে তিনি মাতৃদেবীকে সদ্ধর্ম দেশনার জন্য তাবৎিংস স্বর্গে গমন করেন। অনুরূপ পূর্ণিমার তিথিতেই বৌদ্ধ ভিক্ষুসংঘ ত্রৈমাসিক বর্ষাব্রত অধিষ্ঠান গ্রহণ করে।
বর্ষাবাস
ভিক্ষুদের অন্যতম বাৎসরিক আচার বর্ষাবাস শুরু হয় আষাঢ়ী পূর্ণিমাতে; শেষ হয় আশ্বিনী পূর্ণিমাতে। বর্ষাকালে সিক্ত বসনে এদিক-ওদিক ঘোরা-ফেরা করা, বস্ত্র তুলে চলা-ফেরা করা মানায় না বিধায় যেখানে-সেখানে ভিক্ষুদের বাস না করে গৌতম বুদ্ধ বর্ষাবাস গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। বৌদ্ধ বিনয় মতে যে ভিক্ষু বর্ষাবাস যাপন করেন তিনিই কঠিন চীবর লাভের যোগ্য হন।
বর্ষাবাস যাপন ব্যতিরেকে চীবর লাভ করা যায় না। যে বিহারের ভিক্ষু বর্ষাবাস যাপন করবে না, সেই বিহারে কঠিন চীবর দানানুষ্ঠানও করা যাবে না। বর্ষাবাসের জন্য ভিক্ষুরা সংঘারাম, বিহার ও সাধনাকেন্দ্র বেছে নেয়।
- একটি প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে ২`শ বছরের জন্য ডুবেছিলো বাংলার স্বাধীনতার সূর্য
- মানুষের নিমর্মতার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি ‘সতীদাহ মঠ’
- এক রাতেই পরিবারের ৬ সদস্যসহ ৮ খুনের সেই ঘটনা আজও রহস্যে ঘেরা
আইনিউজ/এইচএ
আইনিউজ ভিডিও
নিরাপদ আশ্রয়ের খুঁজে ছুটছেন সিলেটবাসী
মৌলভীবাজারে বন্যা, জলমগ্ন টিবি হাসপাতাল রোড
ঘরে থৈ-থৈ পানি, নেই খাবার পানি, বিদ্যুৎ নেই, নেটওয়ার্ক নেই
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ