প্রণিতরঞ্জন দেবনাথ
আপডেট: ১৮:৩৫, ২৮ আগস্ট ২০২২
কোমরে বাশি, হাতে তালি — গানই মদিনা ভাই’র জীবন-মরণ
বাঁশির জাদুকর মদিনা ভাই
অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। প্রতিদিন দেশ-বিদেশের পর্যটকসহ স্থানীয় লোকজনের সমাগম ঘটে এখানে। সবুজ প্রকৃতি দেখে মুগ্ধ পর্যটকদের জন্য সেখানে বাড়তি পাওনা হচ্ছে ‘মদিনা ভাই’য়ের বাঁশির সুর ও হাতের তালি, গলার গান। খালি হাতে তালি দিয়ে গান গেয়ে মদিনা ভাই তাক লাগিয়ে দেন লাউয়াছড়া উদ্যানে ঘুরতে আসা পর্যটকদের চোখে-কানে।
মদিনা ভাই পেশায় তিনি আইসক্রিম ও আচার বিক্রেতা। বাঁশি বাজানো তাঁর নেশা। কোমরে সব সময় দুই থেকে তিনটি বাঁশি থাকে। আবার ঘুমানোর সময়েও বাঁশি থাকে বালিশের নিচে। পরিচিতজন ও পর্যটকেরা আবদার করলে আনন্দের সঙ্গে হাতে তুলে নেন বাঁশি তার সাথে গানও করেন।
তিন সন্তানের জনক মদিনা ভাই ভাটিয়ালি, দেশাত্ববোধক পল্লিগীতি, ভাওয়াইয়া ও মুর্শিদি গান ভালোবাসেন। এই গানগুলোরই সুর তোলেন বাঁশিতে ও হাতের তালিতে।
আলাপকালে মদিনা জানান, লোকজন মদিনা ভাই ডাকতে ডাকতে এখন ‘মদিনা ভাই’ নামেই তাঁকে সবাই চেনে। জানালেন, তাঁর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে। ১৫ বছর বয়সে তিনি চলে আসেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামে। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে তিনি এই উপজেলায় বসবাস করছেন। ভ্যান, রিকশা চালিয়ে কিংবা দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন একসময়।
বয়স হয়ে যাওয়ায় আইসক্রিম বিক্রি ও আচাঁরকেই এখন পেশা হিসেবে নিয়েছেন।কিন্তু আইসক্রিম ও আচার আর এখন চলে না। মানুষ খায় না। তাই হাতে বাঁশি নিয়েই ঘোরেন। বাঁশি বাজিয়ে পর্যটকদের আকৃষ্ট করেন। তাঁদের অনেকে মুগ্ধ হয়ে একপর্যায়ে আইসক্রিম কিনে নেন। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেছেন জাদু প্রদর্শন।
ঢাকা থেকে আগত পর্যটক জিনাত রায়হানা ও আকাশ জামান বলেন, চারপাশে সবুজ গাছ, পাখির কলকাকলি আর মদিনা ভাইয়ের বাঁশির সুর এক অনন্য পরিবেশ তৈরি হয়েছে এখানে। বিষয়টি মুগ্ধ করার মতো। বেড়াতে আসাটাই অনেক বেশি উপভোগ্য হয়েছে বাঁশির সুরে।
তিনি আরো বলেন,আমরা এর আগেও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে এসেছি কিন্তু মদিনা ভাইয়ের গান শুনিনি,আজ আরো ভালো লাগছে আমাদের সাথে খুলনা থেকে আমার মামা মামীরা আসছেন তাদের কাছে খুুবই ভালো লাগছে এখানকার পরিবেশ।
কমলগঞ্জ ট্যুর গাইডার আহাদ জানান,কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ায় দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা প্রায়ই ভিড় করে মদিনা ভাইয়ের বাঁশির সুর ও গান শোনেন। পর্যটকদের বাড়তি আনন্দ দেন তিনি।
মদিনা জানান, বড় ভাই আবদুর রহিমের কাছ থেকে বাঁশি বাজানো শিখেছেন। ভানুগাছ বাজারে যাদু প্রদর্শনকারীদের কাছ থেকে যাদুগুলো শিখেছেন। গান গেয়ে ও বাঁশি বাজিয়ে মানুষকে আনন্দ দিয়ে নিজেরও খুব আনন্দ হয়। সংসারে অনেক টানাপোড়েন, রোজগারও কম। তবে রোজগার কম হলে যে আনন্দ থাকবে না, এমন কোনো কথা তো নেই।
তিনি আরো বলেন,এখন গানই জীবন গানই মরন। হয়তো কোনো একদিন বড় কোনো মঞ্চে উঠে বাঁশি বাজাবেন এমন আকাঙ্খা তাঁর।
আইনিউজ/এইচএ
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ