Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, রোববার   ২৭ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ১৪ ১৪৩২

শ্যামলাল গোসাঁই

প্রকাশিত: ১৫:১৭, ১ সেপ্টেম্বর ২০২২
আপডেট: ১৫:১৯, ১ সেপ্টেম্বর ২০২২

প্রেম-ভালোবাসার ১০ উপকারিতা : শ্রেষ্ঠ কিছু প্রেমের গল্প

প্রচ্ছদ- আইনিউজ

প্রচ্ছদ- আইনিউজ

মানুষ মাত্রই প্রেমে পড়বে, একজন আরেকজনকে ভালোবাসবে। নারী পুরুষের প্রেম-ভালোবাসা সেই আদম-হাওয়া থেকে শুরু হয়েছে। মানবসমাজে আজও প্রেম-ভালোবাসার স্থান সবার ঊর্ধে। এমন কাওকে খুঁজে পাওয়া যাবে না যিনি জীবনে প্রেম করেন নি বা কাওকে ভালোবাসেন নি।

প্রেমে আছে সুখ, আছে দুঃখ। কাওকে ভালোবাসলে যেমন বুক ভরা হাসি থাকে, তেমনি প্রেমে থাকে চোখ ভরা জলও। তদুপরি প্রেম মানব জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু প্রেম মনের অনুভূতি হলেও চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে- প্রেম-ভালোবাসার রয়েছে অনেক শারিরীক-মানসিক উপকারিতাও। আজকের আইনিউজের প্রতিবেদনে জানবো প্রেম ভালোবাসার ১০ উপকারিতা সম্পর্কে।

  • প্রেমে পড়লে বা কাউকে ভালোবাসলে মানুষের মন, মস্তিষ্ক, শরীর তিনই শান্ত থাকে। আর এতে নতুন ব্রেইন সেল তৈরি হয়। যা একজন মানুষের স্মৃতিশক্তিকে অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়।
  • আমরা এটা প্রায়শই দেখি কারো ভালোবাসার মানুষ যখন তার কাছে আসে এবং তাকে ছুঁয়ে দেয় বা স্পর্শ করে তখন প্রেমিকের হার্টবিট বেড়ে যায়। আর হার্টবিট বাড়ার ফলে শরীরে রক্ত সঞ্চালনও বৃদ্ধি পায়।
  • ভালোবাসার সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হলো যার মনে সত্যিকারের ভালোবাসা থাকে তিনি কখনো বদরাগী, ক্রোধ কিংবা হিংসুক হন না। তিনি কোমল মনের অধিকারী হন।
  • প্রেমিক-প্রেমিকা যারা একসাথে বসে ভালোবাসার কথা বলে তাদের শরীরে একপ্রকার অক্রিটক্সিন নামক উচ্চমাত্রার হরমোন নিঃসৃত হয়, যার ফলে শরীরের ব্লাড প্রেসার কমে যায়।
  • যারা ভালো না বাসে তারা একাকিত্বে ভোগে, যার ফলে অকাল মৃত্যুর আশংকা পাঁচ গুন বেড়ে যায়।
  • ভালোবাসার কারনে দুঃচিন্তা কমে যায়, আয়ু বেড়ে যায়। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এবং হতাশা দুর হয়।
  • যারা ভালোবাসার কথা শোনে বা লেখে তাদের শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে থাকে।
  • ভালোবাসলে শরীরে এন্ডোরফিন নামক একপ্রকার হরমোন তৈরী হয়, যা শরীরের চামড়া মসৃন ও নরম রাখে এবং মুখে আভার সৃস্টি হয়।
  • নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবাসলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • ভালোবাসা মানুষের মনে রোমাঞ্চকর অনুভূতির সৃষ্টি করে।
  • প্রেমে পরলে মানুষের মন ও শরীর শান্ত হয়। এতে নতুন ব্রেইন সেল তৈরি হয়, ফলে স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি পায়।

কোমরে বাশি, হাতে তালি — গানই মদিনা ভাই’র জীবন-মরণ

কিছু শ্রেষ্ঠ প্রেমের গল্প-
পৃথিবীর ইতিহাসে এমনকিছু প্রেম-ভালোবাসার গল্প আছে যা আজও প্রজ্জ্বলিত নক্ষত্রের মতো মানুষের মনকে নাড়া দেয়; মানুষের মনে পুলক সৃষ্টি করে। জানবো তেমনি কিছু প্রেমিক জুটির কথা-

প্রেমের কথা বললেই যে দুইটি জুটির কথা সবার আগে মানুষের মনে আসে তারা হলেন রোমিও-জুলিয়েট। বিশ্ব বিখ্যাত ইংরেজ লেখক উইলিয়াম শেক্সপিয়র এর কালজয়ী ট্রাজেডি হলো রোমিও-জুলিয়েট। সারা বিশ্বে যুগ যুগ ধরে পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে এ বিয়োগান্ত প্রেম কাহিনী।
রোমিও আর জুলিয়েটের পরিবারের মধ্যে শত্রুতার সম্পর্ক ছিল।

দুটি ভিন্ন পরিবারের পূর্ববর্তী রেষারেষি, বংশীয় অহংকার ভেদ করে দুজন তরুণ-তরুণী প্রথম দর্শনে প্রেমে পড়ে যায়। পরবর্তীতে পরিবারের শত বাঁধা উপেক্ষা করে নানা নাটকীয়তার মাঝে তারা বিয়ে করে। সবশেষে, দুই পরিবারের শত্রুতার জেরে এবং ভুলবোঝা-বুঝি জনিত কারণে বিষপানে আত্মহত্যা করে এই প্রেমিক যুগল। তাই পৃথিবীতে যখনই প্রেমের জন্য ত্যাগ- তিতিক্ষার কথা বলা হয়, সবার আগেই উঠে আসে এই তরুণ যুগলের নাম!

তারপর বলতে হয় মধ্যযুগের ইরানী কবি নিজামীর অমর সৃষ্টি লাইলি-মজনুর প্রেমের কথা। আরব মিথ ‘লায়লা-মজনু’ অবলম্বনে তিনি তার কাব্য রচনা করেন। অধরা প্রেমের এক বিয়োগন্ত গাথা এ কাব্য। কাব্য লিখিত হওয়ার আগে শতাব্দী থেকে শতাব্দীতে এই মিথ আরবে প্রচলিত ছিল। প্রেমের ইতিহাসে, বিশেষ করে এই উপমহাদেশীয় মুসলিম সমাজে কালজয়ী হয়ে উঠে দুটি চরিত্র, লায়লী ও মজনু।

স্বর্গীয় প্রেমের প্রতীক মানা হয় এই জুটিকে। বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে অর্থাৎ বাল্যকাল থেকেই লায়লা এবং কায়েস একে অপরের প্রেমে পড়েন। তাদের প্রেম সমাজের নজরে এলে দুজনের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করা হয়। বলা আছে, লায়লার পিতা মজনুকে আহত করলে লায়লারও আহত হতো, এমননি ছিল তাঁদের সেই স্বর্গীয় প্রেম।

নিঃসঙ্গ কায়েস মরুপ্রান্তরে নির্বাসনে যান। বিরহকাতর কায়েসের ক্ষ্যাপাটে আচরণের জন্য তাকে ডাকা হতো মজনুন (পাগল) নামে। পরে বেদুঈনের দল মজনুর হার না মানা ভালোবাসা দেখে তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে এবং তাদের মধ্যে এক বৃদ্ধ বেদুইন লড়াই করে লায়লাকে পাওয়ার জন্য কায়েসকে প্রেরণা দেন। তাদের সহযোগিতায় যুদ্ধে লায়লার গোত্র ক্ষমতাচ্যুত হয়, তারপরও লায়লার বাবা কায়েসের সঙ্গে লায়লার বিয়েতে সম্মতি দেন না।

লায়লাকে তাঁর পিতা জোর করে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেয়। স্বামী মারা যাবার পর, যদিও লায়লা মজনুর কাছে ফিরে আসে, কিন্তু প্রচণ্ড দুঃখ আর অনাহারে মজনু মারা যায়। লায়লাও তাঁর ভালোবাসা মজনুর পথ অনুসরণ করে। মৃত্যুর পর তাদের পাশাপাশি সমাধিস্থ করা হয়। “দুই দেহ এক আত্মা,” নামক বহুল প্রচলিত কথা এই যুগলের অনুপ্রেরণায় পাওয়া। স্বর্গে গিয়েও ভালবাসার মানুষকে চাওয়ার তৃষ্ণার্ত হৃদয়ের আকুতি এই কাহিনীকে অমর করে রেখেছে।

নর্তকী আনারকালি আর মুঘল সম্রাট আকবরের পূত্র সেলিমের নির্মম প্রেম পরিণতি। আনারকলির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রথম দর্শনেই তার প্রেমে পড়েন সম্রাটপুত্র সেলিম। সম্রাট আকবর এই সম্পর্ক কখনোই মেনে নেন নি। সম্রাট আনারকলিকে সেলিমের চোখে খারাপ প্রমাণ করতে নানা ধরনের চক্রান্ত করেন। পিতার এ কৌশলের কথা জানামাত্র সেলিম নিজ পিতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।

কিন্তু শক্তিশালী আকবর বাহিনীর কাছে সেলিম খুব সহজেই পরাজিত নিজ সন্তানের মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করেন আকবর। তখন প্রিয়তম সেলিমের জীবন বাঁচাতে আনারকলি নিজের জীবনের বিনিময়ে সেলিমের জীবন ভিক্ষা চান। তখন সম্রাট সেলিমের চোখের সামনে প্রিয়তমা আনারকলিকে জ্যান্ত কবর দেয়া হয়!

পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্জের মধ্যে অন্যতম ভারতের অনিন্দ্য সুন্দর তাজমহলের জন্ম হতো না যদি না সম্রাজ শাহজাহান এবং মমতাজ প্রেম করতেন। ১৬১২ খ্রিষ্টাব্দে আরজুমান বানু নামক এক বালিকার সঙ্গে ১৫ বছরের শাহজাহানের বিয়ে হয়। পরে যিনি মোঘল সম্রাজ্য পরিচালনা করেন এবং ইতিহাসে স্মরণীয় হন।

সম্রাট শাহজাহান তাঁর ১৪ সন্তানের জননী এবং প্রিয়তম স্ত্রীর নাম পরিবর্তন করে রাখেন মমতাজ মহল। তিনি মমতাজ মহলকে প্রচণ্ড ভালোবাসতেন। কিন্তু হঠাৎ একদিন মমতাজের মৃত্যু হলে, স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার প্রতীক হিসাবে শাহজাহান একটি স্থাপত্য নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। যাতে প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক কাজ করেছিল, প্রায় ১ হাজার হাতী ব্যবহার করা হয়েছিল শোনা যায়।  

সেই স্থাপতের নির্মাণ কাজ শেষ হতে প্রায় ২০ বছর সময় লেগেছিল। তাজমহলের নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই শাহ জাহান তাঁর পুত্র আওরঙ্গজেব দ্বারা ক্ষমতাচ্যুত ও আগ্রার কেল্লায় গৃহবন্দী হন। তাই সেই অনিন্দ্য সুন্দর কালো মার্বেল পাথরের সৌন্দর্য তিনি সম্পূর্ণ দেখে যেতে পারেননি।

যমুনাতীরে যেখানে “তাজমল” গড়ে ওঠেছিল, শেষ জীবনে শাহজাহান ওখানে একাকী সময় পার করেছেন। মৃত্যুর পর তাঁকে সেখানে সমাহিত করা হয়। তাঁর ভালোবাসার নিদর্শনে তিনি রেখে যান, পৃথিবীর সপ্তাচার্যের মাঝে একটি “তাজমল”।

আইনিউজে আরও পড়ুন-


দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি

চা শ্রমিক মা কিভাবে ছেলেকে পড়ালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, শুনুন সেই সংগ্রামের গল্প || Eye News

দিনমজুর বাবার ছেলে মাহির বুয়েটে পড়ার সুযোগ || BUET success story of Mahfujur Rhaman || EYE NEWS

নৌযান বানিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ছোট কিশোর হাকিমুল || Eye News || Moulvibazar || Bout

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়