সৈয়দ আমিরুজ্জামান
কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কার এবং অজানা নৃশংস কাহিনী
কলম্বাস ১৪৯২ সালে আমেরিকা মহাদেশ খুঁজে পান
কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের ৫৩০ বছর পূর্ণ হয়েছে ১২ অক্টোবর। আজকে থেকে পাঁচশত ত্রিশ বছর আগে ভারতে প্রবেশের রাস্তা খুঁজতে গিয়ে নিজের অজান্তেই আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন এক ভূখণ্ড। কালের চাকায় পথ চলে আজ যেই ভূখণ্ডটি পৃথিবীর অন্যতম শক্তিধর এবং প্রভাবশালী। যাদেরকে আজ বলা হয় বিশ্বের বুকে সুসভ্য জাতি। আমেরিকা নামের এই ভূখণ্ডটি কীভাবে আবিষ্কার করেছিলেন অভিযাত্রী কলাম্বাস? কীভাবেই বা সেই ভূখণ্ডটির নাম হয়েছে আমেরিকা?
১৪৯২ সাল। সময়টা ক্যাথলিকদের জন্য অত্যন্ত শুভ। গ্রানাডা বিজয়ের আনন্দে তারা তখন স্পেনে উল্লাসে মশগুল। রানী ইসাবেলা এবং রাজা ফার্ডিনান্ডের নেতৃত্বে ক্যাথলিকরা অবশেষে পরাভূত করতে পেরেছে মুসলমানদের। মুসলমানদের যে নেতৃত্ব গ্রানাডাতে টিম টিম করে জ্বলছিল, তা সম্পূর্ণ নির্বাপিত হয়ে স্পেনে আলোকিত হয়েছে ক্যাথলিকদের বিজয়।
ক্যাথলিক নাবিক কলম্বাস দেখা করতে চাইলেন রানী ইসাবেলার সাথে। রানীর সাথে কয়েক বছর আগেও তিনি দেখা করেছিলেন। কিন্তু সেবার রানীকে রাজী করাতে পারেন নি। কিন্তু এখনকার কথা তো আলাদা। এখন তো আমরা বিজয়ী। এখন নিশ্চয়ই রানী রাজী হবেন।
রানী সত্যিই রাজী হলেন কলম্বাসের কথায়। কলম্বাস তাকে আশা দিলেন পশ্চিমের নূতন গতিপথ দিয়ে ভারত আবিষ্কার করতে পারলে প্রচুর সম্পদ পৌছে যাবে রানীর কাছে। পশ্চিমের এ পথ হবে পূর্বের জ্ঞাত পথের চেয়ে সহজতর। এতে করে ক্যাথলিজম আরো কয়েক গুণ বেশী প্রসারিত হবে। রানী যেন এ যাত্রায় সম্মতি দেন। তার যাত্রা পথের খরচ বহন করেন। রানীর পৃষ্ঠপোষকতার যে বড়ই প্রয়োজন।
আটলান্টিকে ভাসলো কলাম্বাসের জাহাজ
কলাম্বাসের রানী রাজি হলেন জাহাজের খরচ দিতে। প্রস্তুতি শেষ হল সান্তা মারিয়া, পিন্টা ও নিনার এবং সাথে সাথে সহযাত্রী ৮৭ জন নাবিকের। শুরু হল তাদের যাত্রা। আটলান্টিকের অসীম জলরাশি তাদের স্বাগত জানাল।
কিন্তু হায়! যাত্রাপথের প্রতিকূলতা নাবিকদের সম্পূর্ণ হতাশ করে দেয়। চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। কোথাও স্থলভাগের চিহ্ন পর্যন্ত নেই। কলম্বাস দুটো লগ বুক রাখতেন। গুপ্ত লগবুকে সত্যিকারের দূরত্ব লিপিবদ্ধ করতেন। আর প্রকাশ্য লগবুকে অনেক কম দূরত্ব দেখানো হত।
কিন্তু এভাবে করে নাবিকদের খুব বেশী দিন ফাকি দেয়া গেল না। ১০ ই অক্টোবর নাবিকেরা বিদ্রোহ করে বসল। কলম্বাস বিদ্রোহী নাবিকদের কথা দিলেন দুইদিনের মধ্যে ডাঙা (তীর) দেখা না গেলে তিনি ফিরে যাবেন।
অবশেষে তীরের দেখা মিলল!
সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। আগের চেয়েও আরো বেশী পানি, চারিদিকে পানি, শুধু পানি। হঠাৎ একজন নাবিক দেখল পানিতে গাছের ডাল ভেসে আসছে। ডালে একদম সরস বেরী। ডাং খুব কাছে কোথাও রয়েছে ডাঙা! তাদের হতাশ মনে আবারও জেগে উঠল আশা। কলম্বাস ঘোষণা দিলেন যে প্রথমে ডাঙা দেখবে, সেই লাভ করবে মূল্যবান উপহার সামগ্রী। সবাই অধীর হয়ে আছে ডাঙার জন্যে।
রেড ইন্ডিয়ানদের সাথে দেখা
অক্টোবরের ১২ তারিখ, শুক্রবার ভোর দুইটা। নাবিক রডরিগোয়েজ প্রথম ডাঙা দেখেন। কলম্বাস তার দলবল নিয়ে সেখানে অবতরণ করে দ্বীপটির নামকরণ করেন সান সালভাডোর দ্বীপ। এটি আজকের বাহামা দ্বীপপুঞ্জের একটি।
কলম্বাস ভাবলেন তিনি ভারতের কোথাও অবতরণ করেছেন। কিন্তু এই ভারতীয়দের গায়ের রং যেন আলাদা - লাল বর্ণের। তাই এদের ডাকলেন রেড ইন্ডিয়ানস। আমেরিকার আদিমতম অধিবাসীরা এভাবেই রেড ইন্ডিয়ান নামটি পেল।
দ্বীপের অধিবাসীরা নাবিকদের বেশ সম্মান জানালেন। কলম্বাস তার ডায়েরীতে লিখেছিলেন, "দ্বীপের অধিবাসীদের কোন ধর্ম নেই বলে মনে হচ্ছে, তাই তাদের খুব সহজে খ্রীষ্টান করা যাবে। আমি এখান থেকে ছয়জনকে নিয়ে যেতে চাই।"
কলাম্বাসের স্পেনে প্রত্যাবর্তন
কলম্বাস যখন পৌছুলেন স্পেনে তার দলবল, রেড ইন্ডিয়ান এবং সেখান থেকে নেয়া দ্রব্যাদি নিয়ে, ইসবেলা এবং ফার্ডিনান্ড তাদের আনন্দ চিত্তে বরন করলেন। এভাবে আবিষ্কৃত হল পশ্চিমের আরেকটি মহাদেশ, যোগসূত্র স্থাপিত হল ইউরোপের সাথে।
দুটি ভুলের কারণেই কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করতে পেরেছিলেন। এক, তিনি ভেবেছিলেন পশ্চিম পথে ভারতের দূরত্বে পূর্ব পথে ভারতের দূরত্বের চেয়ে কম। দ্বিতীয়ত, তিনি ভাবতে পারেননি পশ্চিমে আটলান্টিকের পরে আরেকটি মহাসাগর অপেক্ষা করছে। প্যাসিফিক পাড়ি দিয়ে ভারতে যেতে হবে। তাই তিনি যার দূরত্ব ৩০০০ মাইল ভেবেছিলেন, তা আসলে ১০০০০ মাইল।
ইন্ডিয়ানদের উদ্দেশ্যে দেয়া কলম্বাসের বক্তৃতার অংশ:
"ইয়োর হাইনেস, যারা স্ক্রীশ্চানিজমকে ভালবাসেন, এবং তাকে বিস্তৃত দেখতে চান, যারা মোহাম্মদীয় বিশ্বাস এবং মূর্তিপূজার শত্রু, তারা আমাকে পাঠিয়েছেন ভারতের এই প্রান্তে, যাতে করে আমাদের পবিত্র বিশ্বাসে অধিবাসীরা ধর্মান্তরিত হতে পারে। আমাকে আদেশ দেয়া হয়েছে যাতে আমি পূবে না যাই, যা প্রচলিত এবং জ্ঞাত একটি পথ। আমি যাতে পশ্চিম ধরে এগোই, যা আজ পর্যন্ত হয়ে রয়েছে অজানা, যে পথে আমার আগে কেউ ভ্রমণ করেনি।"
কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করেন ১২ই অক্টোবর। এই দিনটিকে প্রথম স্বীকৃতি দেন প্রেসিডেন্ট ফ্রাংকলিন রুজভেল্ট। যা আমেরিকাতে কলম্বাস ডে নামে পরিচিত। এই দিনটি নিয়ে অবশ্য বিতর্কও উঠেছে। অনেকে দাবী করেছেন এরিক লীফ নামে অন্য একজন সত্যিকারের আবিষ্কারক।
কলাম্বাসের আগে মুসলমানরা আমেরিকা আবিষ্কার করেছিলো?
কলম্বাস ১৪৯২ সালে আমেরিকা মহাদেশ খুঁজে পান। তবে এরও ৩০০ বছর আগেই মুসলমানরা আমেরিকা মহাদেশ আবিষ্কার করেছিলেন বলে ধারণা অনেকের।
আবার অনেক ইতিহাসবিদ দাবি করেন, তিন হাজার বছর আগে মিশরের রাজা দ্বিতীয় রামেসিন আবিষ্কার করেছিলেন আমেরিকা। কলম্বাসের গল্পটা শুধুই আমেরিকাকে কলোনি বানানোর।
তবে গবেষকদের দাবি কলম্বাসের আবিষ্কারের ৩০ হাজার বছর আগেই ছিল আমেরিকার অস্তিত্ব। সেখানে পাওয়া যায় মানুষের বসবাসের চিহ্ন। সম্প্রতি এমনই তথ্য উঠে এসেছে একদল গবেষকের গবেষণায়। এর প্রমাণ মিলছে এক টুকরো চুনা পাথরেই। উত্তর আমেরিকায় সর্বশেষ গ্লাসিয়াল যুগের আগেও মানুষের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে সম্প্রতি।
সেটা প্রায় ১৯ হাজার থেকে ২৬ হাজার বছর পূর্বের সময়ের কথা। ধারণা করা হয়, এই এলাকা খুব বেশি জনবহুল না হলেও বসতি স্থাপন করেছিল কিছু মানুষ। ২৯ থেকে ৫৭ হাজার বছর আগে হিমবাহ গলে আমেরিকা ডুবেছিল বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। তবে সঠিক সময়টা এখনো জানা না গেলেও স্পষ্ট যে, কলোম্বাসের আবিষ্কারের বহু বছর আগেও এখানে মানুষের অস্তিত্ব ছিল।
কলাম্বাসের জন্ম ও শিশুকাল
ইতালির জেনোয়া শহরে এক তাঁতির ঘরে ১৪৫১ সালে জন্ম ক্রিস্টোফার কলম্বাসের। আসল নাম ক্রিস্টোবাল কলোন। সুইডিশ ভাষায় এটি ক্রিস্টোফার কলম্বাস। তরুণ বয়স থেকেই তিনি সমুদ্রযাত্রা করেন। ১৪৭৭ সালের দিকে তিনি পর্তুগালের লিসবনে চলে যান। সেখান থেকে তিনি ভূমধ্যসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগরীয় বাণিজ্যিক বন্দরগুলোতে নৌ অভিযান পরিচালনা করেন।
১৪৮৩ সালে পর্তুগালের রাজা জন দ্বিতীয়র কাছে কলম্বাস তার পরিকল্পনা জমা দেন। তাতে ছিল আটলান্টিক হয়ে পশ্চিমের দিকে ইন্ডিজে যাওয়ার পরিকল্পনা। বর্তমান এশিয়া মহাদেশের পুরোটাকেই তখন ইন্ডিজ বলা হতো।
রাজা যখন তার পরিকল্পনায় রাজি হলেন না, তখন তিনি স্পেনের রাজা ও রানির কাছে পেশ করেন। স্পেনের রাজদরবার তার অভিযান অনুমোদন করেন। তাকে ইন্ডিজ দ্বীপপুঞ্জের ভাইসরয় হিসাবে নিযোগ দেন।
কলাম্বাসের ‘রহস্যময়’ মানচিত্র
১৪৯১ সালে আটলান্টিক অভিযানে কলম্বাস ব্যবহার করেছিলেন ‘রহস্যময়’ এক মানচিত্র। অভিযানের শুরু থেকে পুরো সময়টায় তাকে আলোর দিশা দিয়েছে এই মানচিত্রটি। অন্যকথায় বলা যায়, এই মানচিত্রটিকে ঘিরেই পরিকল্পনা নির্ধারণ করতেন ক্রিস্টোফার কলম্বাস।
এই মানচিত্রটি ছিল জার্মান মানচিত্রকার হেনেরিকাস মারটেলাসের তৈরি করা। অবশ্য এই মানচিত্র প্রস্তুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল আরো কিছু কিংবদন্তীর। বহু পুরনো সেই মানচিত্রটি সময়ের ব্যবধানে এক সময় অনেকটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কলম্বাস কিউবা আবিষ্কার করেন। আমেরিকা মহাদেশের ঠিক কোথায় কলম্বাস জাহাজ থেকে নেমেছিলেন তা নিয়ে শত শত বছর ধরে বিতর্ক চলেছে।
অন্তত ১০টি স্থানের বাসিন্দারা দাবি করেন, কলম্বাস তাদের সেই জায়গাগুলোতেই প্রথম পদধূলি দেন। তবে আমেরিকায় নামার পর কলম্বাস ভেবেছিলেন তিনি ভারতে পৌঁছেছেন। তবে কলম্বাস হয়তো জানতে পারেননি যে তিনি ভারতের দিশা পাননি কোনোদিনও।
যাই হোক, ১৪৯২ সালের ১২ অক্টোবর। ক্রিস্টোফার কলম্বাসের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী তিনটি জাহাজে চড়ে আমেরিকার বাহামাস দ্বীপে পৌঁছান। সরলমনা স্থানীয় আদিবাসীরা তাদেরকে অতিথি হিসেবে স্বাগত জানান। কলম্বাসের একটি ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজও মেরামত করে দেন তারা।
অভ্যর্থনা জানাতে আসা আদিবাসীদের দেহে স্বর্ণের অলঙ্কার দেখে কলম্বাস অনুমান করেন আশেপাশের কোথাও স্বর্ণের খনি রয়েছে। আদিবাসীদের সরলতা কলম্বাসকে মুগ্ধ করে। চতুর কলম্বাস মুহূর্তেই কষে নেন অংক। তিনি ধারণা করেন, খুবই কম পরিশ্রমে ওই ভূখণ্ডের সব কিছু নিজের দখলে নিতে পারবেন। তিনি আমেরিকার মূল মালিক আদিবাসীদের নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা পাকাপোক্ত করেন এবং স্পেনে গিয়ে আরো ১২০০ ইউরোপীয়কে সঙ্গে নিয়ে আসেন।
কলাম্বাসের চালানো নৃশংস গণহত্যা ও নির্যাতন
শুরু হয় নির্মমতা, চলে গণহত্যা। কলম্বাস বাহিনী হিস্পানিওলা দ্বীপের একটি প্রদেশে এক নির্দেশ দেন। ১৪ বছরের উপরের সব আদিবাসীকে তিন মাস পরপর একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ স্বর্ণ জমা দিতে হবে তাদের। এই নির্দেশ মানতে যারাই ব্যর্থ হত তাদেরই দুই হাত কেটে ফেলা হত। হাত কাটার ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই মারা যেত তারা।
অনেকে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছে। তবে তাদের পরিণতি হয়েছে আরো ভয়াবহ। হিংস্র কুকুর দিয়ে খুঁজে বের করে নির্মম অত্যাচার করে মেরে ফেলা হত। অনেক আদিবাসীকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।
হিস্পানিওলা দ্বীপে বসবাসকারীরা ছিল আরাওয়াক গোত্রের। অনেক ঐতিহাসিকের মতে, কলম্বাসের নেতৃত্বাধীন ইউরোপীয় বাহিনীর নির্মমতা সইতে না পেরে ৫০ হাজার আদিবাসী বিষ খেয়ে গণ-আত্মহত্যা করেছিলেন। মায়েরা তাদের ছোট ছোট বাচ্চাদের বিষ খাইয়ে মেরে ফেলতেন যাতে ইউরোপীয়রা ওই বাচ্চাদেরকে কুকুরের খাবারে পরিণত করতে না পারে। এরপরও যারা বেঁচে ছিলেন তাদেরকে দাসে পরিণত করেন কলম্বাস।
কলাম্বাসের নৃশংসতার ঐতিহাসিক প্রমাণ
কলম্বাসের সময়ের কিছু নির্মমতার ইতিহাস উঠে এসেছে তার নিজস্ব জার্নাল ও চিঠিতে। আরো তথ্য পাওয়া যায় স্পেনের ঐতিহাসিক বার্তোলমে দা লাস কাসাস এর লেখা ‘হিস্টোরি অব দ্য ইন্ডিজ’গ্রন্থে।
তিনি লিখেছেন, কলম্বাস বাহিনী তাদের ছুরি ও তলোয়ারের ধার পরীক্ষা করার জন্যও আদিবাসীদের টুকরো টুকরো করে কাটতো। নিষ্পাপ শিশুদের শিরচ্ছেদ করতো। কলম্বাস যাদেরকে রেড ইন্ডিয়ান বলে নামকরণ করেছিলেন সেই আদিবাসীদের একটা বড় অংশকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়।
ধীরে ধীরে তার অত্যাচার নির্যাতনের নির্মমতায় কলম্বাসের সহযোগীরাও ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। সম্রাটের কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয় তারা। কলম্বাস স্বাধীন রাজ্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এই অভিযোগ শুনে রাজা ফার্দিনান্দ, ফ্রান্সিসক্যে দ্য বোবদিলা নামে একজন রাজকর্মচারীকে সৈন্য সামন্ত দিয়ে পাঠালেন কলম্বাসের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য। ফ্রান্সিস্ক্যে কয়েকেদিন ধরে অনুসন্ধান করলো কলম্বাসের আবিষ্কৃত নতুন মহাদেশ ঠিকই আছে। তবে রাজ্য স্থাপনের কোন অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলো না।
বন্দী হলেন কলাম্বাস
তবে কলম্বাসের বিরুদ্ধে নির্বুদ্ধিতার অভিযোগ আনা হয় ফ্রান্সিস্ক্যের মাধ্যমে। কারণ তারা কলম্বাস কোনো সম্পদশালী দেশ আবিষ্কার করার বদলে সম্পদহীন দেশ আবিষ্কার করেছে। যার জন্য সম্রাটের লাভ হওয়ার বদলে বিরাট পরিমাণ অর্থ অপচয় হয়। এই অভিযোগে কলম্বাসের পুত্র , ভাই ও কলম্বাসকে স্পেনে ফিরিয়ে এনে বন্দি করা হয়।
কিন্তু এতো সহজে ছাড়ার পাত্র নয় কলম্বাস। সে নির্জন বন্দিশালায় বসে রানি ইসাবেলাকে চিঠি লেখেন। সেই চিঠি পড়ে রানির মনে দয়া হয়, রানি তার জন্য সুপারিশ করেন। মুক্ত হন কলম্বাস। তখন তার বয়স প্রায় পঞ্চাশ। শরীরে তেমন জোর নেই কিন্তু মনের অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাকে আবার প্রণোদনা দেয়। তাই শুনে চতুর্থ বারের জন্য সমুদ্রে যাত্রার আবেদন করলেন কলম্বাস পঞ্চাশোর্ধ বয়সে। রাজাও মেনে নিলেন।
কলাম্বাসের মৃত্যু
এদিকে বার্ধক্য না ছুলেও বাত এবং গাউট রোগে ভুগছিলেন তিনি। ১৫০৬ সালের ২০ মে ভাসাভেলিড শহরে মত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় তিনি বেশি ভালো অবস্থায় ছিলেন না। তবে এই বিতর্কিত মানুষটিকে আমেরিকার আবিষ্কারক হিসেবেই ইতালিয়রা বিশ্বাস করেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল ৫৪ বছর।
লেখক- সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা ও প্রগতিশীল লেখক
আইনিউজে আরও পড়ুন-
- ২০ হাজার গানের জনক গাজী মাজহারুল আনোয়ার ও তার কীর্তি
- প্রেম-ভালোবাসার ১০ উপকারিতা : শ্রেষ্ঠ কিছু প্রেমের গল্প
- কোমরে বাশি, হাতে তালি — গানই মদিনা ভাই’র জীবন-মরণ
দেখুন আইনিউজের ভিডিও গ্যালারি
সবচেয়ে সুন্দরী নারীদের দেশ ।। Most beautiful woman in the world ।। Eye News
যে গ্রামে পুরুষ ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা হচ্ছেন নারীরা | Women are pregnant without men | Kenyan Girls | Eye News
চুল বেঁধে ঘুমিয়ে নিজের যে ক্ষতি করছেন ।। Hair loss problems
পায়খানা ও প্রস্রাব দীর্ঘক্ষণ চেপে রাখলে যে ক্ষতি হয়??
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ