সাগর জাহান
পবিত্র রমজানের মহিমা
পবিত্র রমজান বা মাহে রমজান প্রত্যেক মুমিন-মুসলমানদের জন্য তাকওয়া অর্জনের মাস। এ মাসকে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি বিশেষ মাস হিসেবে ঘোষণা করেছেন আল্লাহ। নবী মুহাম্মদ (স.) নিজেও এই রমজানের মহিমা একাধিকবার সাহাবী এবং অনুসারীদের মধ্যে বর্ণনা করেছেন। সেইসঙ্গে এই রমজানের ফজিলত জেনেশুনে এ মাসে সাওয়াম পালনের কথাও তিনি বলে গেছেন। তবে সময়ের সাথে সাথে যতোই নতুন দিন আসছে মুসলিম সম্প্রদায় যেন ভুলতে বসেছে রমজানের সেসব গুরত্বপূর্ণ মাহাত্ম্য আর ফজিলত সমুহ।
পবিত্র মাসের রয়েছে বিশাল মর্যাদা ও ফজিলত। রয়েছে বিশেষ বিশেষ আমল। এ মাসকে কেন্দ্র করে মহান আল্লাহ প্রতিটি ঈমানদারের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক উন্নতি ও কল্যাণ সাধনের সুযোগ অবারিত করে দিয়েছেন। প্রতিটি মুসলমান যাতে এ মাসের মহা মূল্যবান প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগিয়ে প্রতিশ্রুত প্রতিদান অর্জনে উদ্যোগী হয়, চেষ্টা-শ্রমের সবটুকু নিংড়ে দেয়।
শুরুতেই এটি আমাদের জানা দরকার একজন মুসলমানের ওপর কখন রোজা পালন ফরজ হয়ে যায়? এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন মাজিদে বলা হয়েছে- হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করতে পার। (সূরা বাকারা:১৮৩)
এ আয়াতসহ কোরআনের পরবর্তী কয়েকটি আয়াতে আল্লাহ তাআলা রোজা প্রসংগে বলছেন যে, রোজা এ উম্মতের ওপর ফরজ করা হয়েছে। তবে ফরজের এ ধারা নতুন কোনো বিষয় নয়, পূর্ব হতেই এটি চলে আসছে। পূর্ববর্তী উম্মতের ওপরও রোজা ফরজ করা হয়েছিল। সুতরাং রোজা আমরা ও পূর্ববর্তী উম্মত উভয়ের ওপরই ফরজ।
আয়াতের তাফসিরে কতিপয় আলেম মন্তব্য করেছেন, রোজা নামের মহান ইবাদতটি আদম আ. থেকে নিয়ে সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ পর্যন্ত সকল নবী ও উম্মতের ওপরই ফরজ করা হয়েছে। বিষয়টি পবিত্র কোরআনে আলোচনা করা হয়েছে। এর তাৎপর্য হচ্ছে, কঠিন একটি বিষয় যদি ব্যাপকতা লাভ করে তাহলে তার বাস্তবায়ন সহজ হয়ে যায়। সকলে সহজভাবে গ্রহণ করে। এবং মানসিক প্রশান্তিও লাভ হয় অধিক। সুতরাং রোজা সকল উম্মতের বিধান। সকলের ওপরই তা ফরজ করা হয়েছে। যদিও সময় ও ধরনে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।
ইহুদি-খ্রিস্টানদের জন্য রোজা ফরজ?
ইমাম হাসান (রহ.) বলেন, রমজানের রোজা ইহুদীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা অমান্য করেছে। এবং বছরে কেবল এক দিনের রোজা পালন করেছে। এ ক্ষেত্রে তাদের বিশ্বাস হচ্ছে, এ দিনটিতে ফেরাউনের সলিল সমাধি ঘটেছে। তবে তারা এ ব্যাপারে মিথ্যা বলেছে। কারণ সে দিনটি ছিল, আশুরার দিন।
রোজা খ্রিস্টানদের ওপরও ফরজ ছিল। দীর্ঘ একটা সময় পর্যন্ত তারা তা নিয়মিত পালনও করে। কিন্তু কিছুকাল পর রোজার নির্ধারিত সময়টি প্রচন্ড গরমের মৌসুমে এসে পড়ে। তীব্র গরম তাই রোজা পালন তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়ে। বিভিন্ন দিকে সফর ও রোজগার কঠিন হয়ে যায়।
এ নিয়ে তারা পরামর্শ সভার আয়োজন করে। ধর্মযাজক ও নেতৃবর্গের সম্মতিতে শীত ও গরমের মাঝামাঝি মৌসুম-বসন্তকালে রোজা পালন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আরো সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে রোজার এ সময়টি অপরিবর্তিত থাকবে। আর কখনো পরিবর্তন করা হবে না।
শরিয়ত প্রবর্তিত সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনার কাফফারা স্বরূপ, নির্ধারিত ত্রিশ দিনের রোজার সাথে আরো দশ দিন বাড়িয়ে চল্লিশ দিন করা হয়।
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, রমজান আসলে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় আর শয়তানদের বন্দি করে নেওয়া হয়। (বোখারী ১৮৯৮ ও মুসলিম ১০৭৯)।
হাদিসটি বরকতময় এ মহান মাসের অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করছে এভাবে- এ মাসে জান্নাতের সবগুলো দরজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। কারণ, নেক আমল যা জান্নাতে প্রবেশের উপলক্ষ্য হিসাবে বিবেচিত, এ মাসেই তা অধিক পরিমাণে সম্পাদন করা হয়।
তোমরা যে আমল করতে তার বিনিময়ে জান্নাতে প্রবেশ কর (সুরা নাহল:৩২)। এ মাসে জাহান্নামের সবগুলো দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কারণ, জাহান্নামে প্রবেশের কারণ গুনাহ ও অবাধ্যতার কাজ এ মাসে হ্রাস পায়।
আই নিউজ/এইচএ
আই নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও দেখুন
জলময়ূর পাখির সাথে একদিনের দারুণ গল্প | A story with Water Peacock
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ