মো. রওশান উজ্জামান রনি
উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন সম্পর্কে অজানা তথ্য
কিম জং উন । ছবি লিখক
আমরা তো অনেক বিলিয়নের ব্যক্তির জীবনযাপন দেখে এসেছি। আজকে চলুন আমরা কিম জং উনের বিলাসবহুল জীবন দেখে আসি। আপনারা জানলে অবাক হবেন যে এই কিম জং উন তার দেশের প্রায় অর্ধেক সম্পত্তি একাই ভোগ করে। যদিও তার দেশের অনেক মানুষ অর্ধাহারেই থাকে। কিন্তু তার তো তাতে কিছু যায় আসে না। কারণ তার কাছে রয়েছে দেশের প্রায় অর্ধেক সম্পদ যা সে তার মত করে জীবন যাপন করে। একবার কল্পনা করুন একজন মানুষ যদি কোন দেশের অর্ধেক সম্পত্তি একাই ভোগ করে তাহলে তার জীবন যাপন কেমন হতে পারে। কেমন হতে পারে তা আই নিউজের আজকের প্রতিবেদনটি জানতে পারবেন।
নর্থ কোরিয়ার প্রায় অর্ধেক সম্পত্তি কিভাবে কিম জং উন বিলাসবহুলভাবে জীবন যাপন করে উড়িয়ে দিচ্ছে যা জানলে আপনার মনে হবে যে কিম জং হয়তো অন্য কোন গ্রহের প্রাণী।
সিকিউরিটি ; যদি উত্তর কোরিয়ার কিম জং উনের সিকিউরিটির কথা আসে তবে বলতেই হয় পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম সিকিউরিটি সিস্টেম রয়েছে কিম জং উনের কাছে। কিম জং উনের সিকিউরিটি সিস্টেম আরো মজবুত করা হয়েছে যখন কিম জং উন জানতে পেরেছিল যে আমেরিকার সিআইএ এবং সাউথ কোরিয়ার কিছু সংগঠন মিলিয়ে রাশিয়াতে ট্রেনিং প্রাপ্ত একজন সন্ত্রাসীকে হায়ার করেছিল তাকে মারার জন্য। ঠিক তখন থেকে কিম জং উন তার সিকিউরিটির পরিধি আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমানেকিম জং উনের সিকিউরিটির সংখ্যা ১০ জন। আর এই ১০ জন সিকিউরিটি তার গাড়ির পেছনে সবসময় দৌড়াতে থাকে চারদিক দিয়ে ঘিরে। কিম জং উনের সিকিউরিটি হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো কেউ তার চাইতে এক ইঞ্চিও বেশি লম্বা হতে পারবেনা। আপনারা জানলে অবাক হবেন যে কিম জং উন যখন বিমানে ভ্রমণ করে তখন একসাথে দুইটা বিমান চলাচল করে থাকে। কারণ কেউ যাতে বুঝতে না পারে যে কিম জং উন কোন বিমানের মধ্যে রয়েছে। নর্থ কোরিয়ার সমস্ত সেনাবাহিনীর সদস্য সব সময় থাকে সুরক্ষিত রাখতে তৎপর থাকে।
লাক্সেরিয়াস গাড়ি ; উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন তার সুরক্ষার জন্য সবচাইতে বেশি সতর্ক থাকে। আর তাই সে বিভিন্ন বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে থাকে। আর এসব কারগুলোর মধ্যে রয়েছে mercedes-বেঞ্চ এর মেয়েবেক এস৬০০ এবং ৬২ এস। কিম জং উনের যে গাড়ির দৈর্ঘ্য ২১ ফিট। কিম জং যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ব্লাদিমির পুতিন এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে দেখা করেছিল তখন তাকে এই গাড়িতে দেখা গিয়েছিল। আর এটা দেখে সবাই অবাক হয়ে গিয়েছিল। কারণ কারণ কিম জং উন ইউরোপিয়ান স্টাইলের গাড়ি কোথা থেকে পেল। নর্থ কোরিয়ার সাথে বলা চলে পৃথিবীর সমস্ত দেশের কোন রকম সম্পর্কই নেই। তাহলে এটা নর্থ কোরিয়াতে কিভাবে এলো। নর্থ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন এভাবে বিভিন্ন পোর্ট ঘুরে সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে সিক্রেট ভাবে এই ধরনের বিভিন্ন গাড়ি নিয়ে আসে তার বিলাসবহুল জীবন কাটানোর জন্য। আর আপনারা জানলে অবাক হবেন যে এই ধরনের
গাড়ি কিম জনের কাছে প্রায় 200 টাকা রয়েছে।
লাক্সেরিয়াস ইয়েটা ; যদিও উত্তর কোরিয়াতে লাক্সেরিয়াস সবকিছু নিষিদ্ধ করলেও ভুল হবে না। কিন্তু কিং উনের জন্য লাক্সেরিয়াস কোন কিছুই নিষিদ্ধ নয়। তার কাছে কয়েকটি ইয়েটাও রয়েছে যার প্রতিটার মূল্য প্রায় ৮.২ মিলিয়ন ডলার। আর এটা নিয়ে কিম জং উন এবং তার সেনা সদস্যদের উচ্চপদস্থ কর্মচারীরা মাঝেমধ্যেই ঘুরে বেড়ায়। তবে এই ইয়েটা গুলো গোপন একটি দ্বীপে সংরক্ষিত করে রাখা হয় ।
পছন্দের ড্রিংকস ; উত্তর কোরিয়ার কিম জং উনের সবচাইতে পছন্দের ড্রিংকস হল হুইস্কি এবং কণাক। আর প্রতিবছর এগুলোর পেছনে কিম জং উনের খরচ হয় প্রায় 200 কোটি টাকা। আর এগুলো তিনি নিয়ে আসেন বিভিন্ন দেশ থেকে। আর কিম জং উনের আরেকটি পছন্দের পানীয় হলো শ্যাম্পেইন। যা তিনি একবার খেতে শুরু করলে একবারে দুই বোতল খেয়ে শেষ করে ফেলেন। তার আরেকটি পছন্দের পানীয় হল ক্রিস্টাল আর তার এই সমস্ত পানির জন্য প্রতিবছর প্রায় খরচ হয় ৩০০ কোটি ডলার। যদিও শুনতে আপনাদের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে কিন্তু এটাই সত্যি।
সিগারেট ; উত্তর কোরিয়ার কিম জং উনের পছন্দের সিগারেট হলো ফ্রেন্ডস। আর তিনি সেন্ট লরেন্ট ব্র্যান্ডের বিভিন্ন রকম সিগারেট খেয়ে থাকেন। যার এক প্যাকেটের মূল্য প্রায় ৪৪ ডলার। আর এই সিগারেটের লেদারের কভার সহ এক প্যাকেটের দাম ১৬৫ ডলার। আর কিম জং উন প্রতিদিন প্রায় এক প্যাকেট করে সিগারেট খেয়ে থাকে।
ফ্লোটিং রেস্টুরেন্ট ; সাত তলা বিশিষ্ট ভাসমান যে জিনিসটি দেখতে পাচ্ছেন এটি একটি ফ্লোটিং রেস্টুরেন্ট। যদিও এটার নাম দেয়া হয়েছে রেস্টুরেন্ট কিন্তু তারপরও এটা ক্রসসিপ এর চাইতে কম কিছু নয়। কারণ ক্রসসিপে আমদ প্রমদের জন্য যা থাকে এই ফ্লোটিং রেস্টুরেন্ট তার সবকিছুই রয়েছে। খেলার মাঠ থেকে শুরু করে বার পর্যন্ত একেবারে সবকিছু। আর এই ফ্লোটিং রেস্টুরেন্ট উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন নিজেই প্রাইভেট ভাবে ব্যবহার করে থাকে। প্রথমে এই ফ্লোটিং রেস্টুরেন্ট ১৯৮৮ সালে অস্ট্রেলিয়া থেকে তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে কিম জং উন ক্ষমতায় আসার পরে এই বিলাস বহুল ফ্লোটিং রেস্টুরেন্ট কে সে নিজে কিনে নেয়। আর এটা এখন তার বিলাসবহুল জীবন কাটানোর জন্য একটি অনেক বড় উপাদান।
প্রাইভেট আইল্যান্ড ; কল্পনা করা যায় একজন মানুষের জন্য পুরো একটি দ্বীপকে বিলাসবহুল ভাবে সাজানো হয়েছে আর এটাই উত্তর কোরিয়ার কিম জং উনের প্রাইভেট আইল্যান্ড। এই দ্বীপে বিলাসবহুল সব জিনিস রয়েছে। ৭ মিলিয়ন ডলারের ইয়েটা, পার্ক এমনকি বিশাল বিশাল সাইজের ফুটবল মাঠে রয়েছে। এখানে তিনি তার বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অতিথিদের নিয়ে এসে আড্ডা দেন। এমনকি আমেরিকার অনেক জনপ্রিয় স্টারকে নিয়ে কিম জং উন এখানে আড্ডা দেয়। এই আইল্যান্ডের সব কিছুই পাওয়া যায়। কিম জং উনের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো তিনি বেশ খাদ্য রসিক এবং ভ্রমণ পিপাসু মানুষ। আর তার এই চাহিদা এই দ্বীপটি পূরণ করে থাকে।
প্রাইভেট জেট ; বিলাসবহুল জীবনযাপন করার জন্য যার এত কিছু রয়েছে তার প্রাইভেট জেট থাকবে না তা কি করে হয়। উত্তর কোরিয়ার কিম জং উনের একটি না বেশ কয়েকটি প্রাইভেট জেট রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো জামাই ওয়ান এবং বসাক ওয়ান। এই প্রাইভেট জেড গুলোর মূল্য প্রায় দশ মিলিয়ন ডলার। কিম জননের সাথে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাতের সময় কিম জং উনকে নতুন এই প্রাইভেট যেতে দেখা গিয়েছিল। আর এই প্রাইভেট জেট গুলোকে চলমান ফাইভেট ফাইভ স্টার হোটেল বললেও কোন অংশে ভুল হবে না। কারণ এ প্রাইভেট জেটে কিম জং উনের বিলাসবহুল ভাবে থাকার জন্য সব সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
প্রাইভেট ট্রেন ; এটাও কি ভাবা যায় যে কোন ব্যক্তির প্রাইভেট ট্রেন থাকতে পারে। তবে উত্তর কোরিয়ার কিম জং উনের জন্য এগুলোই স্বাভাবিক। কারণ তার নিজের একটি প্রাইভেট ট্রেনে রয়েছে। যেটা সে ব্যবহার করে নিজের দেশের অভ্যন্তরে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলাচল করার জন্য। আর এই ট্রেনের ২১টি বগী রয়েছে। যার প্রতিটি বগির কালার একই রকম। আর এটার ভেতরে ফাইভ স্টার হোটেলের মত সব রকমের সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
আই নিউজ/আর
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ