হাফিজ মাছুম আহমদ
আরাফার দিনে রোজা রাখার ফজিলত
ছবি- অনলাইন থেকে
আরবী মাসের সর্বশেষ মাস পবিত্র যুলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ হলো ইয়াওমে আরাফা তথা আরাফায় অবস্থানের দিন। এই দিনটি হজ্জ আদায়ের জন্য যারা পবিত্র খানায়ে কাবায় গমন করেছেন একইসাথে যারা গমন করেননি তেমন প্রত্যেক মুসলিমের জন্যই একটি মহা মর্যাদাপূর্ণ দিন। কারণ এই দিনে আল্লাহ তা’য়ালা তার বান্দাহদের প্রতি সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত হিসেবে দ্বীন আল ইসলামকে পরিপূর্ণতা ঘোষনা করেছেন।
মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনুল কারীমের সূরা আল মায়িদার ৩নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন,
الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا
অর্থাৎ আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের মনোনীত দ্বীনকে পূর্ণতা দান করলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জীবন বিধান হিসেবে মনোনীত করলাম। (সূরা আল মায়িদা আয়াত নং ৩)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফার দিনের রোজার ব্যাপারে বলেছেন: “আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী, এটি পূর্ববর্তী এক বছর ও পরবর্তী এক বছরের গুনাহের কাফফারা হবে। (মুসলিম, ১১৬২)
আরাফায় অবস্থানকারী হাজীদের জন্য রোযা মুস্তাহাব নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরাফায় অবস্থান করেছিলেন রোজা বিহীন অবস্থায়।
জিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখকে (ঈদুল আযহার আগের দিন) ‘ইওয়ামুল আরাফাহ’ বা ‘আরাফার দিন’ বলা হয়, কারণ এই দিনে হাজীরা আরাফাহ নামক একটা মাঠে জমায়েত হন। হজ্জের সবচেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ আহকাম হলো যিলহাজ্জ মাসের ৯ তারিখ ‘আরাফার ময়দানে’ অবস্থান করা। এই দিনের গুরুত্ত্ব সম্পর্ক রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “আরাফার ময়দানে অবস্থান করাই হলো হাজ্জ।”
যারা হজ্জে যাবেন না, তাদের আরাফার দিনে রোযা রাখার ফযীলত: ‘ইয়াওমে আরাফা’র রোযা সম্পর্কে প্রসিদ্ধ হাদীস
(صيام يوم عرفة أحتسب على الله أن يكفر السنة التي قبله والسنة التي بعده)
‘ইয়াওমে আরাফার রোযার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী, তিনি এর দ্বারা এর আগের এক বছরের ও পরের একবছরের গোনাহ মাফ করবেন।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১৬২
উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আরফার দিনের রোজার ছওয়াব এক হাজার দিন রোজা রাখার সমান। (তারগিব)
আরাফার দিন গুনাহ মাফ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের দিন
হাদিসে এসেছে—عَنِ ابْنِ الْمُسَيَّبِ، قَالَ قَالَتْ عَائِشَةُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَا مِنْ يَوْمٍ أَكْثَرَ مِنْ أَنْ يُعْتِقَ اللَّهُ فِيهِ عَبْدًا مِنَ النَّارِ مِنْ يَوْمِ عَرَفَةَ وَإِنَّهُ لَيَدْنُو ثُمَّ يُبَاهِي بِهِمُ الْمَلاَئِكَةَ فَيَقُولُ مَا أَرَادَ هَؤُلاَءِ ”( رواه مسلم، كتاب الحج)
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ স. বলেন : ‘আরাফার দিন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার বান্দাদের এত অধিক সংখ্যক জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন যা অন্য দিনে দেন না। তিনি এ দিনে বান্দাদের নিকটবর্তী হন ও তাদের নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করে বলেন : ‘তোমরা কি বলতে পার আমার এ বান্দাগণ আমার কাছে কি চায় ?’
পবিত্র হাদীস গ্রন্থের অনুমোদিত আরাফার দিবসের আরো কিছু আমল
- গুনাহ মাফ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের কামনা করা
- অধিক পরিমাণে জিকির ও দোয়া করা
- জোরে কিংবা আস্তে তাকবীর পাঠ করা মোস্তাহাব:আত-তাকবীরুল মুতলাক : যে তাকবীর যিলহজ মাসের ১ থেকে ১৩ই যিলহজ পর্যন্ত দিন রাতের যে কোন সময় / সর্বদা পাঠ করা যেতে পারে।
- আত-তাকবীরুল মুকাইয়াদ : বা বিশেষ সময়ের তাকবীর। এ তাকবীর যিলহজ মাসের ৯ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত প্রতি ওয়াক্ত ফরজ সালাতের পরে তাকবীর পাঠ করতে হবে।
আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদেরকে এমন আমল করার তাওফীক দান করেন যাতে তিনি সন্তুষ্ট হবেন। তিনি যেন আমাদেরকে দীনের জ্ঞান দান করেন এবং ঐ সকল লোকদের অন্তর্ভুক্ত করেন যারা কেবল তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নেক আমল সম্পাদন করে।আমীন।
লেখক: হাফিজ মাছুম আহমদ, লেখক, সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট।
- কেএফসির মালিকের জীবন কাহিনী
- প্রজাপতি: আশ্চর্য এই প্রাণীর সবার ভাগ্যে মিলন জোটে না!
- মা-শাশুড়িকে হারিয়েও করোনার যুদ্ধে পিছিয়ে যাননি এই চিকিৎসক
- বিশ্বের অদ্ভুত কিছু গাছের ছবি
- সোনার দাম এত কেন : কোন দেশের সোনা ভালো?
- যেখানে এক কাপ চা পুরো একটি পত্রিকার সমান!
- তিন রঙের পদ্মফুলের দেখা মিলবে এই বিলে
- রহস্যময় গ্রামটি লাখো পাখির সুইসাইড স্পট
- ২০২৩ সালে পৃথিবীর শক্তিশালী ১০টি দেশ!
- বায়েজিদ বোস্তামি: মাতৃভক্তির এক অনন্য উদাহরণ