নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট: ০৯:৪২, ২৮ মে ২০২০
আজ বৃহস্পতিবার ২৮ মে আন্তর্জাতিক নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস
আজ বৃহস্পতিবার ২৮ মে আন্তর্জাতিক নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস।
মাতৃস্বাস্থ্য, নিরাপদ প্রসব, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবার গুণগত মান বৃদ্ধি সম্পর্কে মা, পরিবার ও সমাজের সকল স্তরের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সকলের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করাই আন্তর্জাতিক নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসের মূল উদ্দেশ্য।মা ও শিশুমৃত্যু রোধ এবং তাদের অসুস্থতার বিষয়ে সবাইকে সচেতন করার পাশাপাশি এসব সমস্যা প্রতিরোধ করার প্রত্যয়ে ১৯৮৭ সাল থেকে সারা বিশ্বে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালন করা হচ্ছে।
কিন্তু আজও দেশে নিশ্চিন্ত হয়নি নিরাপদ মাতৃত্ব।সরকারের সদিচ্ছা যথেষ্ট থাকলেও সমন্বিত প্রচেষ্টার অভাবে নারীরা আজও অবহেলিত। একজন গর্ভবতী নারী গর্ভকালীন সেবা, নিরাপদ প্রসবের জন্য যাবতীয় সেবা, প্রসব পরবর্তী সেবা পাওয়ার সব অধিকার রাখেন।কিন্তু বাংলাদেশের অধিকাংশ নারী এসব সুযোগসুবিধা থেকে কোন না কোন কারণে বঞ্চিত হয়।
মূলত গর্ভকালীন জটিলতা,দক্ষ স্বাস্থ্যসেবা দানকারীর অনুপস্থিতি, প্রয়োজনীয় যত্নের অভাব এ বিষয়ে পরিবারের অসচেতনতা, অবহেলা, প্রসব পরবর্তী সেবার অদূরদর্শিতায় একজন মা তার প্রাপ্ত নূন্যতম এ অধিকার বঞ্চিত।অসংখ্য পরিবার আছে যাদের কাছে এসব সেবা পৌঁছায় না।
আবার অসংখ্য পরিবারকে দেখা যায়,যারা অজ্ঞতা,বিভ্রান্তির কারণে চিকিৎসার সেবা নিতে আগ্রহী হয় না।এ দুই বিপরীত প্রথায় শিকার হচ্ছে গর্ভবতী নারীরা।নিরাপদ মাতৃত্বের বিষয়টি কর্মজীবী মায়েদের ক্ষেত্রে আরও ঝুকিপূর্ণ।
তাছাড়া দেশে বেড়েছে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে সন্তান নেয়ার প্রবণতা,যা অনেকাংশেই মাতৃস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি।৫৮ শতাংশ গর্ভবতীর ডেলিভারি অপ্রশিক্ষিত ধাত্রী বা আত্মীয়-স্বজনের হাতে হয়ে থাকে।আর মাত্র ৩৭ শতাংশ গর্ভবতীর ক্লিনিক বা হাসপাতালে প্রসব হয়ে থাকে।মা ও শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ বাড়িতে অপ্রশিক্ষিত ধাত্রী বা আত্মীয়স্বজনের দ্বারা প্রসব করানো।
বর্তমানে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে করা ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ সিজারিয়ান অপারেশন নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য উদ্বেগজনক।অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সিজার হওয়া উচিত সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ।বর্তমানে দেশে সরকারি হাসপাতালগুলোতে এ হার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ।
ওদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) করোনা ভাইরাসকে একটি আন্তর্জাতিক জরুরী জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে ঘোষনা করেছে।কোভিড-১৯- প্রাদুর্ভাবের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ইউএনএফপিএ এবং জাতিসংঘের অন্যান্য অঙ্গসংস্থাগুলোর সাথে এ বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং প্রতিকারের জন্যে কাজ করছে।
ইউএনএফপিএর নির্বাহী পরিচালক ডাঃ নাটালিয়া কানেম বলেন,"যদিও স্বাভাবিকভাবেই করোনভাইরাসটির প্রতি ভয় এবং অনিশ্চয়তা রয়েছে, তবুও আমাদের অবশ্যই সঠিক তথ্য-উপাত্ত দিয়ে এ বিষয়টির মোকাবেলা করতে হবে।” তিনি আরও বলেন "আমাদের অবশ্যই একাত্মভাবে যে কোন কুসস্কার ও বৈষম্য দূর করতে হবে, এবং জনগণ তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য এবং সেবা, বিশেষকরে গর্ভবতী এবং দুগ্ধদানকারী নারীরা যেন তাদের সেবা পেতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।"
যে কোন মহামারীর সময় যৌন এবং প্রজনন স্বাস্থ্য ব্যাবস্থাপনা বিশেষ ঝুঁকির মধ্যে থাকে। একটি সক্রিয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও যথাযথ ভাবে সংক্রমণ প্রতিরোধ সতর্কতা মেনে চলার উপর নিরাপদ গর্ভবস্থা এবং প্রসবকালীন স্বাস্থ্য নির্ভর করে।
যেহেতু কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব গর্ভবতী নারীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলতে পারে, তাই ইউএনএফপিএ এই মায়েদের ঝুঁকিগুলির ক্ষেত্রে কিছু সীমিত প্রমানসহ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এবং প্রস্তাবিত সহায়ক চিকিৎসার বিষয়ে সুপারিশ করছে।
গর্ভবতী মহিলাদের কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় এ বিষয়ে আজ অবধি কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। তবে গর্ভাবস্থায় নারীদের বেশকিছু শারীরিক পরিবর্তন হয় যার ফলে গর্ভবতী নারীর শ্বাস প্রশ্বাসের সংক্রমণ হওয়ার আশংকা থাকে। তাই এই প্রতিকূল আবস্থা থেকে ঝুঁকিমুক্ত রাখার জন্য গর্ভবতী নারীদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা হলে তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের সাথে চিকিৎসা করা উচিত।
অন্যান্য প্রাপ্তবয়স্কদের মতই গর্ভবতী নারীদের জন্যেও সংক্রমন এড়াতে একই প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, যেমন যদি হাঁচি-কাশি হয় এমন কারও সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়ানো, বার বার সাবান এবং পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া, হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় মুখ এবং নাককে টিস্যু দিয়ে ঢেকে রাখা বা কনুই ব্যাবহার করা এবং মাছ, মাংস এবং ডিম ইত্যাদি পুরোপুরি সিদ্ধ করে রান্না করে খাওয়া। এ সকল তথ্যসমূহ ডব্লিউএইচও ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে (WHO website)।
এই মুহূর্তে, ভাইরাস প্রতিরোধ বা নিরাময়ের জন্য এখন অবধি কোন ভ্যাকসিন বা চিকিৎসা পদ্ধতি নেই তবে লক্ষণগুলো দেখা গেলে কিছু চিকিৎসা সেবা প্রস্তাব করা হচ্ছে। সন্দেহজনক বা নিশ্চিত কোভিড-১৯-এ সংক্রমণযুক্ত গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসা তাদের প্রসুতী ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শক্রমে প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের জন্য ডব্লিউএইচও এর দ্বারা সুপারিশকৃত চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরন করার মাধ্যমে সেবা প্রদান করা।
ইউনিসেফের মতে, যেহেতু মায়ের দুধের মাধ্যমে শ্বাসকষ্টের ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে এমন কোনও প্রমান নেই, তাই স্তন্যপান করানো মায়েদেরকে তাদের নবজাতকের থেকে পৃথক করা উচিত নয়। মায়েরা নিম্ন উল্লেখিত সতর্কতা অবলম্বন করে যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ স্তন্যদান করানো চালিয়ে যেতে পারেন:
-
করোনার পর্যাপ্ত লক্ষণসম্বলিত মায়েদের বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য একটি মাস্ক পরানো উচিত যখন কোন সন্তান কাছে থাকে (খাওয়ানোর সময় সহ) শিশুর সংস্পর্শে আসার পূর্বে এবং পরে (খাওয়ানো সহ) হাত ধোয়া উচিত এবং পরিষ্কার / জীবাণুমুক্ত করা উচিত।
-
কোনও মা যদি বুকের দুধ পান করানোর ক্ষেত্রে খুব অসুস্থ হন তবে তাকে একটি পরিষ্কার কাপে দুধ বের করে এবং / বা চামচ দিয়ে শিশুকে দেওয়া যেতে পারে, তবে সে সময় – মাস্ক পরা, শিশুর সংস্পর্শে আসার পূর্বে এবং পরে (খাওয়ানো সহ) হাত ধোয়া এবং স্তনের উপরিভাগ ও চারিপাশ পরিষ্কার / জীবাণুমুক্ত করা এসব ব্যাপারে উৎসাহিত করা উচিত ।
- জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কোনটি ভালো?
- দামী নাকি কমদামী কোন সিগারেটে ক্ষতি বেশি?
- ডিম ভাজি না সেদ্ধ, কোনটা বেশি উপকারী?
- প্রোটিন জাতীয় খাবার কোন খাদ্যে বেশি-কোন খাদ্যে কম?
- হার্টের ব্লক খোলার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় রিং বা স্ট্যান্ট
- বডিবিল্ডিং: সাপ্লিমেন্টের গুরুত্ব এবং যেভাবে শুরু করবেন
- কানের ভেতর হঠাৎ পোকা বা কিছু ঢুকে গেলে
- ওসিডি কী? জেনে নিন লক্ষণ
- বাচ্চাদের গুড়াকৃমি প্রতিরোধে কী খাওয়াবেন?
- ফার্মেসি রাত ১২টায় বন্ধের সিদ্ধান্তে বিস্ময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর