জৈবিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে করোনাভাইরাস আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে বলে আশঙ্কা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের একদল বিজ্ঞানী। ক্ষতিকণার জীবকণাটির এমন বিবর্তন একে মানুষের দেহে আরও সহজেই সংক্রমণ ছড়াতে সাহায্য করবে বলেই তাদের বিশ্বাস।
ভাইরাসের জৈবিক বৈশিষ্ট্যে এ ধরনের পরিবর্তন চলমান বৈশ্বিক মহামারিতে নতুন গতি যুক্ত করছে কিনা তা প্রমাণ করতে আরও বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন আছে, বলেও জানান বিজ্ঞানীরা।
তবে শুধু গবেষণায় জড়িতরাই নন, এর বাইরেও অনেক গবেষকের ধারণা করোনাভাইরাসের জিনগত বৈশিষ্ট্যের বিবর্তন হচ্ছে।
এমনই এক গবেষক জানান, সম্ভবত এ পরিবর্তনের কারণেই যুক্তরাষ্ট্র এবং লাতিন আমেরিকায় করোনার সংক্রমণ এত মারাত্মক আকার ধারণ করে। পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই উদ্বিগ্ন বিশ্বের নানা দেশের জীবাণু বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনের আলোচিত গবেষণাটি করছে ফ্লোরিডার স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউড। সেখানকার বিজ্ঞানীরা জানান, গোলাকৃতির করোনাভাইরাসের গায়ের স্পাইক বা কাঁটাগুলোর আমিষ পরিবর্তনের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। ভাইরাসটির মূল গঠনের বাইরে অবস্থিত এই স্পাইকের মাধ্যমেই সেটি অন্য প্রাণীর দেহে সংক্রমণ ছড়ায়। গবেষণার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেলে এই প্রথমবারের মতো ভাইরাসের জৈবিক পরিবর্তনের কারণে যে চলমান বৈশ্বিক মহামারি অন্যরূপ ধারণ করবে তা প্রমাণ করা সম্ভব হবে।
স্ক্রিপসের গবেষক দল প্রধান হায়েরুন চো এক বিবৃতিতে জানান, 'গবেষণাগারে আমরা সেল কালচারের মাধ্যমে জীবাণুর দেহে যেসব পরিবর্তন ঘটাই, প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় পরিবর্তিত ভাইরাস তার থেকেও অনেক বেশি সংক্রামক।'
তিনি এমন সময় একথা বলেছেন যখন চলতি সপ্তাহেই জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- করোনাভাইরাসের জিনগত পরিব্যাপ্তি এর প্রতিষেধক আবিষ্কারের গবেষণায় কোনো প্রভাব ফেলবে না, বলে আশ্বস্ত করে।
গত সপ্তাহে বিশ্ব সংস্থাটি ভাইরাসের গঠনগত বিবর্তন হওয়ার ফলে এটি আরও বেশি সংক্রামক হয়ে ওঠেনি বলেও জানায়। কিন্তু, ফ্লোরিডার বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণাটি পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হলে তা ইতোমধ্যেই পর্যদুস্ত বৈশ্বিক স্বাস্থ্যখাতের জন্য নতুন হুমকি তৈরি করবে। বিলম্বিত হতে পারে প্রতিষেধক আবিষ্কারের প্রচেষ্টাও।