স্বাস্থ্য ডেস্ক
বিশ্ব এইডস দিবস
এইডস নিয়ে সচেতন তো আপনি?
সচেতনতাই পারে এইডস থেকে বাঁচাতে
আজ বিশ্ব এইডস দিবস। ১৯৮৮ সাল থেকে প্রতি বছর ১ লা ডিসেম্বর এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এ বছর করোনা মহামারীর কারণে অনেকটাই চুপচাপ।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৮১ সালে সর্বপ্রথম এই মারণ রোগের সন্ধান পাওয়া যায়। তারপর দাবানলের মতো সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলিতে বেশি দেখা দেয় এই রোগের প্রকোপ। ২০১৮ সালে ডব্লিউএইচও এর রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বে এইচআইভি আক্রান্ত লোকের সংখ্যা ৩৭.৯ মিলিয়ন। মারা যায় প্রায় ৭৭০,০০০ মানুষ এবং ১.৭ মিলিয়ন মানুষ নতুনভাবে সংক্রামিত হয়েছিল।
বিশ্ব এইডস দিবস পালনের উদ্দেশ্য হলো এই রোগটি প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি। তাই আজকের এই দিনটাকে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন - এর পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য প্রচারের দিন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।
মারণ রোগ এইডস কে প্রতিহত করার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের সহায়তায় ১৯৯৪ সালে 'ইউএন এইডস' সংস্থাটি তৈরি হয়। এইডস রোগীদের চিকিৎসা ও তাদের সুরক্ষার উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে যায় এই সংস্থা। এর পরেই এইচআইভি এবং এইডস সংক্রমণ নিয়ে মানুষের মধ্যে কিছুটা সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। ভারতবর্ষে এইডস নিয়ন্ত্রণের আলাদা সংস্থা তৈরি হয়। ন্যাশনাল এইডস কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন। এই সমস্ত সংস্থার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী প্রচার এর কিছুটা সুফল হলেও বর্তমানে তা কোথাও যেন আবার থেমে গেছে।
এইডস বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন-
♦এই আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যৌন মিলনে লিপ্ত হলে শরীরে এইচআইভি জীবাণু প্রবেশ করে।
♦এই রোগে আক্রান্ত মায়ের থেকে গর্ভস্থ শিশু বা বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে শিশুর দেহে এই ভাইরাস প্রবেশ করে।
♦এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত যদি কোনো সুস্থ মানুষের দেহে প্রবেশ করে তবে আক্রান্ত হতে পারেন।
♦এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করা ইনজেকশনের সিরিঞ্জ , অস্ত্রোপচারের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সুস্থ ব্যক্তির দেহে ভুলবশত ব্যবহার হলে তা থেকে রোগ ছড়ায়।
রোগের লক্ষণ
♦ জ্বর, ১০ দিন বা তারও বেশি সময় ধরে জ্বর চলতে থাকে।
♦ জিভে,ঠোঁটে,গলায় ও যৌনাঙ্গে ঘা হয়ে যাওয়া।
♦ শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়া।
♦ কোনো কিছু খাওয়ার সময় মুখে ও গলায় ব্যথা অনুভূত হওয়া।
♦ শুকনো কাশি চলতেই থাকে।
♦ সারা শরীরে রাত্রিকালীন ঘাম দেখা দেয়া।
♦ শরীরের লিম্ফ নোড বা লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া।
♦ লাগাতার ডায়রিয়া চলতেই থাকে।
♦ শরীরের ওজন কমে যাওয়া।
♦ ধীরে ধীরে শরীরের অঙ্গ অকেজো হওয়া।
রোগ নির্ণয়
লক্ষণগুলোর উপর ভিত্তি করে এবং এইচআইভি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগনির্ণয় করা হয়। এরপর বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে অঙ্গে সংক্রমণের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
চিকিৎসা
সাধারণত এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু অনিবার্য। কারণ এর কোনো সঠিক চিকিৎসা নেই। তবে, কিছু কিছু ঔষধ আছে যা আক্রান্ত ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে ভালো করে তুলতে সাহায্য করে।
♦ ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং সঠিক চিকিৎসা করান।
♦ উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি এআরটি-র সাহায্য নিন।
♦ আক্রান্ত রোগিকে এক ঘরে না করে দিয়ে পাশে থাকুন এবং মনের জোর বাড়ান।
♦ সময় মাফিক ঔষধ, জল ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
♦ এইচআইভি অক্রান্তদের দৈনন্দিন কাজকর্ম থেকে বঞ্চিত না করে কাজ করায় উৎসাহিত করতে হবে।
প্রতিরোধের উপায়
♦ সাধারণ মানুষের মধ্যে এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
♦ শারীরিক মিলনের সময় কন্ডোম ব্যবহার করতে হবে।
♦ যৌন রোগের যথাযথ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা খুবই জরুরি। যেকোনো যৌনরোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
♦ রক্ত দেয়া বা নেয়ার সময় অথবা ইনজেকশনের সময়ে একটি সিরিঞ্জ একবারই ব্যবহার করুন।
♦ বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করান।
♦ গর্ভের প্রথম অবস্থায়ই মায়ের এইচআইভি পরীক্ষা করানো উচিত।
এইচআইভি আক্রান্ত মানে যে মৃত্যু তা কিন্তু কখনোই নয়। কারণ এইচআইভি, এইডসের নানান চিকিৎসা ও নতুন পরীক্ষা রয়েছে বর্তমান দিনে। নিজেকে সমাজের থেকে লুকিয়ে না রেখে সাহায্য নিন বিশেষজ্ঞের। তবেই সফল হবে আজকের এই এইডস দিবস পালন।
আইনিউজ/এসডিপি
- জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কোনটি ভালো?
- দামী নাকি কমদামী কোন সিগারেটে ক্ষতি বেশি?
- ডিম ভাজি না সেদ্ধ, কোনটা বেশি উপকারী?
- প্রোটিন জাতীয় খাবার কোন খাদ্যে বেশি-কোন খাদ্যে কম?
- হার্টের ব্লক খোলার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় রিং বা স্ট্যান্ট
- বডিবিল্ডিং: সাপ্লিমেন্টের গুরুত্ব এবং যেভাবে শুরু করবেন
- কানের ভেতর হঠাৎ পোকা বা কিছু ঢুকে গেলে
- ওসিডি কী? জেনে নিন লক্ষণ
- বাচ্চাদের গুড়াকৃমি প্রতিরোধে কী খাওয়াবেন?
- ফার্মেসি রাত ১২টায় বন্ধের সিদ্ধান্তে বিস্ময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর