নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট: ১৪:৫১, ৮ এপ্রিল ২০২১
করোনাভাইরাসের লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়
ফাইল ছবি
বিশ্বের ২২১ টি দেশ ও অঞ্চলে আঘাত হেনেছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। প্রায় ২৯ লাখ মানুষ মারা গেছেন এই ভাইরাসটির কারণে। আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ কোটি ৩৩ লাখের বেশি মানুষ।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, বুধবার (৭ মার্চ) পর্যন্ত দেশে সংক্রমণের সংখ্যা ৬ লাখ ৫৯ হাজার ২৭৮ জনে দাঁড়িয়েছে। করোনা আক্রান্ত অয়ে মৃতের তালিকাও বড় হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দেশের ৯ হাজার ৪৪৭ জনের প্রাণ কেড়েছে এই ভাইরাসটি।
মরণব্যাধি এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন সচেতনতা। কিন্তু সচেতনতার আগে জানতে হবে করোনাভাইরাস সম্পর্কে। জানতে হবে এর লক্ষণ সম্পর্কে। কীভাবে এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে হবে। সকল প্রশ্নের উত্তর জানা থাকলে করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
করোনাভাইরাস কী?
করোনাভাইরাস এমন এক ভাইরাস, যা সাধারণ ফ্লু বা ঠাণ্ডা লাগার মতোই প্রথমে আক্রমণ করে ফুসফুসে। এই ভাইরাস থেকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দেয়। ধীরে ধীরে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। যার থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
করোনায় আক্রান্ত হলে বুঝবেন কীভাবে?
করোনাভাইরাসের কিছু প্রাথমিক লক্ষণ রয়েছে। তবে এই লক্ষণগুলো খুবই সাধারণ। সর্দি-কাশি, মাথাব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও জ্বর।
করোনাভাইরাস মূলত ফুসফুসে আক্রমণ করে। জ্বরের সঙ্গে শুকনা কাশি দিয়ে শুরু হয়। জ্বর ও কাশির এক সপ্তাহের মাথায় শ্বাসকষ্ট। এরকম লক্ষণ দেখা দিলে নিতে হয় হাসপাতালে।
তবে করোনার লক্ষণ প্রকাশ পেতে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। অনেকের ক্ষেত্রে লক্ষণ প্রকাশিত হয় না। কিন্তু রোগীর লক্ষণ প্রকাশের আগে এই ভাইরাস ব্যক্তির শরীরে সুপ্ত অবস্থায় থাকে। তাই উপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
করোনাভাইরাস কীভাবে ছড়ায়?
⇒ এই ভাইরাস একজনের থেকে আরেকজনের মধ্যে ছড়ায়।
⇒ শারীরিক ঘনিষ্ঠতা, করমর্দন থেকে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে।
⇒ রোগী জিনিস ধরার পর ভালো করে হাত না ধুয়ে চোখ, মুখ, ও নাকে হাত দিলে এই রোগ ছড়াতে পারে।
⇒ হাঁচি-কাশি থেকেও এই রোগ ছড়াতে পারে।
করোনাভাইরাস কীভাবে প্রতিরোধ করব?
⇒ রোগী কাছ থেকে এসে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে।
⇒ হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় টিস্যু বা রুমাল দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে ফেলতে হবে।
⇒ ডিম, মাংস ভালো করে রান্না করুন।
⇒ সাবান দিয়ে বারবার হাত ধুতে হবে।
⇒ হাঁচি-কাশি বা জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
⇒ নাক, মুখ ও চোখে হাতের স্পর্শ লাগানো যাবে না।
⇒ মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।
⇒ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
⇒ পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে
করোনাজয়ীরা ভুগতে পারেন মস্তিষ্কের সমস্যায়!
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের ৩৪ শতাংশ করোনাজয়ী মানুষ সংক্রমণের ছয় মাসের মধ্যে মানসিক অথবা নিউরোলজিক্যাল উপসর্গে ভুগেছেন। যাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে উত্তেজনা বিষয়ক সমস্যা (১৭ শতাংশ)। ১৪ শতাংশ মেজাজ নিয়ন্ত্রণহীনের সমস্যায়।
ল্যানসেট সাইকিয়াট্রিতে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্য ফ্লুতে আক্রান্তদের সঙ্গে তুলনা করে দেখা গেছে কোভিড-১৯ রোগীদের সমস্যাগুলো বেশি দেখা যাচ্ছে।
করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজন সচেতনতা
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলছে টিকাদান কার্যক্রম। তবে টিকা নিয়েই নিজেকে ঝুঁকিমুক্ত ভাবলে চলবে না। কেননা টিকা নিয়েও সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা রয়েছে। তাছাড়া দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ধরনের সংক্রমণ। এগুলোর ওপর বর্তমানে প্রাপ্ত টিকার কার্যকারিতা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
তাই সুস্থ থাকতে হলে সবাইকে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। বাইরে গেলেই ব্যবহার করতে হবে মাস্ক। রাস্তাঘাটে চলাচলে বজায় রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ব। মূলকথা হলো বাড়াতে হবে সচেতনতা। কেননা নিজের সুস্থতা নিজের হাতে।
আইনিউজ/এসডিপি
আরও পড়তে পারেন:
- জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কোনটি ভালো?
- দামী নাকি কমদামী কোন সিগারেটে ক্ষতি বেশি?
- ডিম ভাজি না সেদ্ধ, কোনটা বেশি উপকারী?
- প্রোটিন জাতীয় খাবার কোন খাদ্যে বেশি-কোন খাদ্যে কম?
- হার্টের ব্লক খোলার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় রিং বা স্ট্যান্ট
- বডিবিল্ডিং: সাপ্লিমেন্টের গুরুত্ব এবং যেভাবে শুরু করবেন
- কানের ভেতর হঠাৎ পোকা বা কিছু ঢুকে গেলে
- ওসিডি কী? জেনে নিন লক্ষণ
- বাচ্চাদের গুড়াকৃমি প্রতিরোধে কী খাওয়াবেন?
- ফার্মেসি রাত ১২টায় বন্ধের সিদ্ধান্তে বিস্ময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর