Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, শনিবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৬ ১৪৩২

স্বাস্থ্য ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:৫৯, ১০ মে ২০২১
আপডেট: ১৮:০১, ১০ মে ২০২১

করোনা পরবর্তী ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ইনফেকশন’, লক্ষণ ও করণীয়

সংগৃহীত

সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত হওয়ার পরেও স্বস্তি নেই। নতুন অনেক রোগ ও জটিলতায় ভুগতে হচ্ছে রোগীদের। যার মধ্যে একটি ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ইনফেকশন বা কালো ছত্রাকের সংক্রমণ। সম্প্রতি ভারতে এই ফাঙ্গাসের সংক্রমণ বাড়ছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়ার পর অনেকে মারাত্মক এই ছত্রাকে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন এবং দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ইনফেকশন অবহেলা করলে মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস এতটাই ভয়ঙ্কর যে, ত্বক থেকে ফুসফুস এবং মস্তিষ্কেও ছড়িয়ে পড়তে পারে‌। এমনকি এই ধরনের রোগীদের অনেকে তাদের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। মারাও গেছেন অনেকে।

ভারতের জাতীয় গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) এ নিয়ে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কী?

এটি ফাঙ্গাস বা ছত্রাকসৃষ্ট রোগ। এক ধরনের বিশেষ ছত্রাক পরিবার থেকে মানুষের শরীরে রোগটি বাসা বাঁধে। মিউকোর ছত্রাকসৃষ্ট এ রোগের নাম 'মিউকোর-মাইকোসিস'। এতে আক্রান্ত স্থানে কালো দাগ তৈরি হয়। আক্রান্তদের নাক থেকে শ্লেষ্মা মিশ্রিত কালো শক্ত পদার্থ বের হয়। এ কারণেই একে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা কালো ছত্রাক রোগ বলা হয়।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বায়ুবাহিত রোগ। ছত্রাকের বীজগুটি বা স্পোর বাতাসে ভেসে বেড়ায়। শ্বাসগ্রহণের সময় নাসারন্ধ্র দিয়ে সাইনাস ও ফুসফুসে প্রবেশ করে। এ কারণে এ দুটি স্থান বেশি আক্রান্ত হয়।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের লক্ষণ

১. ফুসফুসের লক্ষণ- জ্বর, কাশি, বুকব্যথা ও শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি।

২. নাক ও মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত লক্ষণ- মুখের একপাশ ফুলে যাওয়া, মাথাব্যথা, একদিকের নাক বন্ধ, নাকের ভেতর কালো ক্ষত ও জ্বর।

৩. ত্বকের লক্ষণ- চামড়ায় ফুসকুড়ি বা ক্ষত। আক্রান্ত স্থান কালো হয়ে যাওয়া ও জায়গাটিতে ব্যথা হবে এবং গরম থাকবে। ক্ষতের চারপাশ ফুলে যাবে।

৪. আন্ত্রিক লক্ষণ- পরিপাকতন্ত্রে সংক্রমণ হলে পেটব্যথা, বমিভাব ও বমি হয়। পরিপাকপ্রণলীতে রক্তক্ষরণ হতে পারে। যার কারণে কালো পায়খানা ও কফি রঙের বমি হতে পারে।

৫. শরীরে বিস্তৃতির লক্ষণ- করোনায় আক্রান্ত, ডায়াবেটিক রোগী বা যাদের রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা কম তাদের‌কে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আক্রমণ করলে ঝুঁকি বেড়ে যায়। তখন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের লক্ষণ বোঝার উপায় থাকে না। এই ছত্রাক দ্বারা মস্তিষ্ক আক্রান্ত হয়ে রোগী কোমায় পর্যন্ত চলে যেতে পারে ও শেষতক মৃত্যু ঘটতে পারে।

করণীয়

১. হাইপারগ্লাইসেমিয়া নিয়ন্ত্রণ করা।

নাক থেকে পুঁজ বের হলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা মাপা। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রেও তাই।

২. সঠিক পরিমাণে এবং ঠিক সময় স্টেরয়েড নেয়া।

৩.  অক্সিজেন থেরাপির সময় পরিষ্কার, স্টেরিলাইজ করা জল ব্যবহার করা (হিউমিডিফায়ারে)।

৪.  প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টি ফাঙ্গাল ওষুধ খাওয়া।

কী করবেন না?

১.  অবহেলা করবেন না। কোনো লক্ষণ পেলেই প্রস্তুতি নিন।

২.  নাকে কালচে দাগ দেখলেই আতঙ্কিত না হওয়া।

৩. ফাঙ্গাসের উপস্থিতি বুঝতে প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা করতে ভয় না পাওয়া (কেওএইচ স্ট্রেনিং, মাইক্রোস্কোপি, কালচার ইত্যাদি)।

৪. চিকিৎসা শুরু করতে দেরি না করা।

তবে এ বিষয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। সর্তক থাকতে হবে সবাইকে। ফাঙ্গাস ইনফেকশন দ্রুত চিহ্নিত করে ঔষধ প্রয়োগ করার মাধ্যমে ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব। সাধারণভাবে কালো ছত্রাকের চিকিৎসার জন্য মলম, খাওয়ার ওষুধ ও ইনজেকশন আছে।

আইনিউজ/এসডিপি

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়