ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী
আপডেট: ২২:৫৭, ২৪ মে ২০২১
জন্ডিস হলে কিভাবে বুঝবেন আর সুস্থ হতে কী করণীয়
বছরের এই সময়ে অনেকে জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। জন্ডিস হচ্ছে যকৃতের প্রদাহ বা হেপাটাইটিস। এটি লিভারের রোগের লক্ষণ বা উপসর্গ মাত্র।
বিশেষ করে খুব সাবধান থাকতে হবে পানির ক্ষেত্রে। জন্ডিস থাক বা না থাক, না ফুটিয়ে পানি পান করা যাবে না। বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে বাহিতের ফুচকা, চটপটি, বোরহানির ব্যাপারে।
জন্ডিসের কারণ
জন্ডিসের কারণগুলোকে দুইভাগে ভাগ করতে পারি। ভাইরাসজনিত কারণগুলোকে বৈজ্ঞানিকভাবে হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি, ই এভাবে নামকরণ করা হয়েছে। আর ভাইরাসের বাহিরের কারণগুলো হতে পারে ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে পিত্তনালীতে পাথরজনিত কারণে হতে পারে অথবা টিউমার বা লিভার ক্যান্সারের কারণে হতে পারে।
আমাদের দেশে সাধারণত হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস ই এই দুটি ভাইরাস বাহিরের /বাসি খাবার এবং অবিশুদ্ধ বা দূষিত পানির মাধ্যমে ছড়াতে পারে।
আর হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি রক্ত বা ব্যবহৃত ইঞ্জেকশন এর সূচের মাধ্যমে ছড়ায়।
অবিশুদ্ধ বা দূষিত পানি পান জন্ডিসের অন্যতম কারণ
জন্ডিসের লক্ষণ
লিভারের যেকোনো জটিলতার কারণে চোখ হলুদ হওয়া, প্রস্রাব হলুদ হওয়া, মুখগহ্বর হলুদ হওয়া, শরীরের চামড়া হলুদ হয়ে চুলকানি দেখা দেয়। প্রথমে যে লক্ষণ দেখা যায় যথাক্রমে খাবারে অরুচি, অতিরিক্ত দূর্বলতা এরপরে তার চোখ এবং প্রস্রাব হলুদ হওয়া। একই সাথে অনেকের বমি বা বমি বমি ভাব হতে পারে। এটাকে আমরা জন্ডিসের লক্ষণ হিসেবেও বলে থাকি। তবে জন্ডিস হওয়া মানে আমরা ধরে নেই শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংগ লিভার ক্ষতিগ্রস্ত বা আক্রান্ত হয়েছে ।
খাবার কেমন হবে?
খাবারের ব্যাপারে তেমন কোনো বিধিনিষেধ নেই। তবে ভাইরাল হেপাটাইটিসে যকৃতের কার্যকারিতা কিছুটা হলেও ব্যাহত হয়। তাই যকৃৎ ও পিত্তথলির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি না হয় এমন কিছু খাবার এড়িয়ে চলাই উচিত। যেমন: মশলাযুক্ত বা চর্বিজাতীয় খাবার (ঘি, মাখন, যেকোনো ভাজা খাবার বা ফাস্টফুড, খাসির মাংস ইত্যাদি) এইসময় অবশ্যম্ভব পরিহার করে চলতে হবে। জন্ডিসের রোগীদের ক্যালরির উৎস হিসেবে তাই সহজে হজমযোগ্য সরল শর্করা, যেমন: বাসায় তৈরী শরবত, ভাত, জাউভাত, সুজি, রুটি ইত্যাদি বেশি খাওয়া উচিত।
বিশ্রাম কেমন হবে?
পূর্ণ বিশ্রাম মানে এই সময়ে ভারি কোনো কাজ বা পরিশ্রমের কোনো কাজ না করা। কারণ, ভাইরাল হেপাটাইটিস লিভারে প্রদাহ সৃষ্টি করে। ফলে পূর্ণ বিশ্রাম না নিলে বা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের ফলে জন্ডিসের মাত্রা বেড়ে গিয়ে জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
চিকিৎসা
সাত থেকে ২৮ দিনের মধ্যে রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে গেলে জন্ডিস এমনিতেই সেরে যায়। জন্ডিসের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই, চিকিৎসা হবে উপসর্গ অনুযায়ী। এই সময়ে পর্যাপ্ত বিশ্রামই চিকিৎসা। এ সময় ব্যথার ওষুধ যেমন: প্যারাসিটামল, অ্যাসপিরিন, ঘুমের ওষুধসহ অন্য কোনো অপ্রয়োজনীয় ও কবিরাজি ওষুধ খাওয়া একদম উচিত নয়। এককথায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধই বাস্তবে সেবন করা ঠিক না। এতে হিতে বিপরীত হওয়ার ঝুঁকিটাই বেশি থাকে।
সাবধাণতা
রোগীকে বাইরের খাবার সব সময় পরিহার করতে হবে। বিশেষ করে খুব সাবধান থাকতে হবে পানির ক্ষেত্রে। জন্ডিস থাক বা না থাক, না ফুটিয়ে পানি পান করা যাবে না। বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে বাহিতের ফুচকা, চটপটি, বোরহানির ব্যাপারে।
ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী, এম.বি.বি.এস; বিসিএস (স্বাস্থ্য), বিএসএমএমইউ (প্রেষণে), ঢাকা ||এক্স সহকারী রেজিস্ট্রার,সিওমেক হাসপাতাল।
- জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কোনটি ভালো?
- দামী নাকি কমদামী কোন সিগারেটে ক্ষতি বেশি?
- ডিম ভাজি না সেদ্ধ, কোনটা বেশি উপকারী?
- প্রোটিন জাতীয় খাবার কোন খাদ্যে বেশি-কোন খাদ্যে কম?
- হার্টের ব্লক খোলার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় রিং বা স্ট্যান্ট
- বডিবিল্ডিং: সাপ্লিমেন্টের গুরুত্ব এবং যেভাবে শুরু করবেন
- কানের ভেতর হঠাৎ পোকা বা কিছু ঢুকে গেলে
- ওসিডি কী? জেনে নিন লক্ষণ
- বাচ্চাদের গুড়াকৃমি প্রতিরোধে কী খাওয়াবেন?
- ফার্মেসি রাত ১২টায় বন্ধের সিদ্ধান্তে বিস্ময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর