ডা. আরিফা রহমান
আপডেট: ২৩:৪৬, ৮ আগস্ট ২০২১
করোনা টিকা নিয়ে যত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস রোধে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে দেশব্যাপী চলছে টিকাদান কর্মসূচী। এদিকে দেশের অধিক জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। শনিবার (৭ আগস্ট) সেই কার্যক্রমের উদ্বোধনও করা হয়েছে।
এদিকে বিভিন্ন ধরণের তথ্য ও নির্দেশনা থাকার কারণে অনেক সময়ই এগুলো বিভ্রান্তিকর মনে হতে পারে। ফলে অনেকেই টিকা নিতে অনীহা দেখাচ্ছেন। তবে টিকা সম্পর্কে কিছু প্রাথমিক তথ্য রয়েছে যা জানা থাকলে এ পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা সম্ভব।
ভ্যাকসিন বা টিকা কী?
টিকা মানুষের দেহকে নির্দিষ্ট কোনো একটি সংক্রমণ, ভাইরাস কিংবা রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত করে। টিকায় মূলত যে বস্তুটির কারণে ওই রোগটি হয় তার একটি নিষ্ক্রিয় বা দুর্বল অংশ থাকে যাকে "ব্লু-প্রিন্ট" বলা হয়।
এই অংশটি দেহে একই রকমের প্রতিক্রিয়া তৈরি করে যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে পরবর্তীতে ওই ভাইরাসের আক্রমণ শনাক্ত করতে সহায়তা করে এবং সেটির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।
টিকার কারণে খুব বেশি অসুস্থ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কম। তবে অনেকের মধ্যে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন, হাতে ব্যথা বা হালকা জ্বর। তবে এর পরের ধাপ হচ্ছে, আপনি ওই রোগটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা অর্জন করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র সিডিসি'র মতে ভ্যাকসিন বা টিকার সবচেয়ে শক্তিশালী বিষয়টি হচ্ছে, অন্য ওষুধগুলো যখন কোনো একটি রোগের প্রতিকার করে বা সারিয়ে তোলে, টিকা সেখানে ওই রোগটিকেই প্রতিরোধ করে।
করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে এমন কিছু প্রশ্ন রয়েছে যা অনেকেই জানতে চান বা খুঁজছেন। এমনই কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজের অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর ডা. আরিফা রহমান। আসুন জেনে নেয়া যাক সে সম্পর্কে-
• আমার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এলার্জি বা হাপানী আছে। ভ্যাকসিন দিতে পারব?
উত্তর: অবশ্যই পারবেন। এসব রোগ যাদের আছে, তারা সবার আগেই ভ্যাকসিন নেয়া উচিত। কারণ এরা রিস্ক জোনে আছে।
• আমার কোভিড পজিটিভ ছিল বা লক্ষ্মণ ছিল তবে পরীক্ষা করাইনি। ভ্যাকসিন দিতে পারব?
উত্তর: অবশ্যই পারবেন তবে পজিটিভ হওয়া বা জ্বর কাশি লক্ষ্মণ দেখা দেয়ার ২৮ দিন পর।
• গর্ভবতী মা এবং দুগ্ধ পান করাচ্ছেন এমন মায়েরা ভ্যাকসিন নিতে পারবে?
উত্তর: বাচ্চা দুধ খায় এমন মা রা যেকোন সময় ভ্যাকসিন নিতে পারবে। তবে গর্ভবতী মা রা গর্ভের ১৩ থেকে ৩৩ সপ্তাহের মধ্যে ভ্যাকসিন নিতে পারবে যা সম্পূর্ণ নিরাপদ।
• ভ্যাকসিন দিলে নাকি হার্টের সমস্যা হচ্ছে বা অনেকে মারা যাচ্ছে?
উত্তর: সামান্য জ্বর বা ব্যথা দেখা দেয়া যেকোন ভ্যাকসিনের কমন সাইড ইফেক্ট। মারা যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। খুবই অল্প সংখ্যক রোগীর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট একটি ভ্যাকসিন দেয়ার পর সামান্য হার্টের প্রদাহ দেখা দিয়েছিল, তবে দ্রুত সুস্থও হয়ে গিয়েছে। অতএব এসব অমূলক চিন্তা থেকে বিরত থাকাই মঙ্গল।
• আমি রক্তদাতা বা ডোনার। ভ্যাকসিন দেয়ার বা রক্ত দেয়ার নির্দেশনা কি?
উত্তর: ভ্যাকসিনও দিতে পারবেন, ব্লাডও ডোনেট করতে পারবেন। তবে ভ্যাকসিন দেয়ার ২৮ দিন পর রক্ত দান করতে পারবেন। ২৮ দিনের ভেতরে নয়।
• ভ্যাকসিন দেয়ার পরও আমার পুনরায় জ্বর, শরীর ব্যথা। এর কারণ?
উত্তর: ভ্যাকসিন দেয়ার পরও করোনা আক্রান্ত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে করোনার প্রভাব খুবই কম থাকে, অল্পতেই সুস্থ হয়ে যায়। তাছাড়া জ্বরের কারণ অন্যান্য রোগ যেমন ডেঙ্গু বা টাইফয়েডও হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ১০০ বছরে রোগ প্রতিষেধক টিকার কারণে কোটি কোটি মানুষের জীবনরক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। তাই করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে টিকার আওতায় আসতে হবে।
ডা. আরিফা রহমান, অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর, গাজী মেডিকেল কলেজ, খুলনা
আইনিউজ/এসডিপি
- জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কোনটি ভালো?
- দামী নাকি কমদামী কোন সিগারেটে ক্ষতি বেশি?
- ডিম ভাজি না সেদ্ধ, কোনটা বেশি উপকারী?
- প্রোটিন জাতীয় খাবার কোন খাদ্যে বেশি-কোন খাদ্যে কম?
- হার্টের ব্লক খোলার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় রিং বা স্ট্যান্ট
- বডিবিল্ডিং: সাপ্লিমেন্টের গুরুত্ব এবং যেভাবে শুরু করবেন
- কানের ভেতর হঠাৎ পোকা বা কিছু ঢুকে গেলে
- ওসিডি কী? জেনে নিন লক্ষণ
- বাচ্চাদের গুড়াকৃমি প্রতিরোধে কী খাওয়াবেন?
- ফার্মেসি রাত ১২টায় বন্ধের সিদ্ধান্তে বিস্ময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর