ডা. মো. আব্দুল হাফিজ (শাফী)
শিশুর নাকের পিছনে মাংস বাড়া এবং শ্বাসকষ্টে করণীয়
শিশুর প্রতীকী ছবি ও লেখক ডা. মো. আব্দুল হাফিজ (শাফী)।
শীতের সময়ে শিশুদের বিভিন্ন অসুখ দেখা দেয়। এ সময় সর্দি-জ্বর খুব সাধারণ সমস্যা। দীর্ঘ ঠাণ্ডা-কাশিসহ অন্যান্য কারণে শিশুর নাকের পেছনে মাংস বেড়ে যেতে পারে। এমনটি হলে শিশুর শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট হয়। শিশু হা-করে ঘুমোয়, শব্দ হয় এবং এমনকি হঠাৎ দম বন্ধ হয়ে ঘুম থেকে উঠে যেতে পারে।
চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, সর্দি লাগার কারণে নাকের পেছনে এডিনয়েড নামক লসিকাগ্রন্থি বড় হয়ে যায়। ফলে নাকে মাংস বাড়ে।
এডিনয়েড গ্রন্থি কী?
নাকের পেছনে এডিনয়েড গ্রন্থি থাকে। এটি গঠনগত দিক থেকে টনসিলের মতো। এডিনয়েড বাইরে থেকে দেখা যায় না। কারণ আমাদের তালুর ওপরে এডিনয়েড থাকে। কাজেই এটা খালি চোখে দেখার কোনো উপায় নেই। তবে টনসিল হাঁ করলে দেখা যায়। এডিনয়েড দেখতে হলে এক্স-রে করতে হবে বা বিশেষ ধরনের অ্যান্ড্রোস্কোপ আছে, সেগুলো দিয়ে দেখা যেতে পারে।
শিশুর ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগার কারণে নাকের পেছনে এডিনয়েড গ্রন্থি বড় হয়ে যায়। যার কারণে নাকের মাংস বাড়ে।
ঠাণ্ডার কারণে বাচ্চাদের আরও যেসব রোগ হয়
ঘন ঘন ঊর্ধ্ব শ্বাসনালির সংক্রমণ, সর্দি-কাশি-নাক বন্ধ, প্রায়ই অ্যালার্জিজনিত নাকের প্রদাহ বা অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, ক্রনিক টনসিলের ইনফেকশন, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা ও ফুসফুসে সংক্রমণ হতে পারে।
এডিনয়েড গ্রন্থি বড় হলে যেসব সমস্যা হয়
১. শিশু মুখ হ্যাঁ করে ঘুমায়। রাতে ঘুমের মধ্যে শব্দ হয় বা নাক ডাকে। এ সমস্যা বেশিমাত্রায় হলে ঘুমের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসতে পারে। যাকে চকিং বলে। ঘুমের মধ্যে কিছু সময়ের জন্য দম বন্ধ থাকতে পারে। যাকে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ এপনিয়া বলে।
২. বাচ্চা ঘন ঘন সর্দি-কাশিতে ভোগে। একবার সদি-কাশি হলে তা সহজে সারতে চায় না।
৩. সমস্যা গলার পেছন থেকে ইউস্টেশিয়ান টিউবের মাধ্যমে কানে চলে যায়। ফলে ঘন ঘন কানে ব্যথা, কানে ইনফেকশন, কানের পর্দা ফেটে যাওয়া, কানের ভেতর পানি জমা, কানে কম শোনা বা গ্লুইয়ার সমস্যা হতে পারে।
৪. এডিনয়েডের কারণে ঘন ঘন গলার ইনফেকশন, খুসখুসে কাশি, গলার স্বর বসে যাওয়া হতে পারে।
৫. শরীরের ভেতর অক্সিজেনের স্বল্পতার জন্য ঘুম ঘুম ভাব, পড়ালেখা ও স্কুলে অমনোযোগী হওয়া, বুদ্ধিমত্তা কমে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়। রাতে বিছানায় প্রস্রাবও করতে পারে।
কী করবেন
বাচ্চাদের এই সমস্যার ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। এমন হলে বয়সভেদে এন্টি-হিস্টামিন, নাকের স্প্রে/ড্রপ এবং এন্টিবায়োটিক দিয়ে মেডিকেল চিকিৎসা করা হয়। সাথে কানে শোনার পরীক্ষাও করে নিতে হয়। অনেক সময় শিশুর বয়স ১২-১৪ বছর হলেও এডিনয়েড স্বাভাবিক হয় না।ঔষধের মাধ্যমে নিরাময় না হলে শিশুর কষ্ট হলে বিভিন্ন পরীক্ষার পর ছোট অপারেশনের মাধ্যমে এডিনয়েড ফেলে দিতে হয় ।
ডা. মো. আব্দুল হাফিজ (শাফী), এফসিপিএস (ইএনটি); বিসিএস (স্বাস্থ্য);
নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ, সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল।
আইনিউজে স্বাস্থ্যবিষয়ক কিছু ভিডিও
চিনির কারণে প্রতিবছর সাড়ে তিন কোটি মানুষের মৃত্যু ঘটে
মানসিক চাপ কমাবেন যেভাবে
বয়স পঞ্চাশের আগেই বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা
সহবাসে পুরুষের অক্ষমতা, সেক্স এডুকেশনের অভাব?
- জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কোনটি ভালো?
- দামী নাকি কমদামী কোন সিগারেটে ক্ষতি বেশি?
- ডিম ভাজি না সেদ্ধ, কোনটা বেশি উপকারী?
- প্রোটিন জাতীয় খাবার কোন খাদ্যে বেশি-কোন খাদ্যে কম?
- হার্টের ব্লক খোলার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় রিং বা স্ট্যান্ট
- বডিবিল্ডিং: সাপ্লিমেন্টের গুরুত্ব এবং যেভাবে শুরু করবেন
- কানের ভেতর হঠাৎ পোকা বা কিছু ঢুকে গেলে
- ওসিডি কী? জেনে নিন লক্ষণ
- বাচ্চাদের গুড়াকৃমি প্রতিরোধে কী খাওয়াবেন?
- ফার্মেসি রাত ১২টায় বন্ধের সিদ্ধান্তে বিস্ময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর