অনুপ রিংকু
প্রকাশিত: ১৯:৩৫, ২০ আগস্ট ২০২২
আপডেট: ১৯:৩৭, ২০ আগস্ট ২০২২
আপডেট: ১৯:৩৭, ২০ আগস্ট ২০২২
অনলাইন ইনকাম ২০২২ | অনলাইনে আয় | Eye News
অনলাইন ইনকাম- এই বিষয়টি বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কাছে সবচেয়ে পরিচিত দুটি শব্দ। আপনি যদি একটু খুঁজ খবর নিয়ে থাকেন তাহলে দেখবেন আপনার আশেপাশের এমন অনেকেই আছেন যারা অনলাইন থেকে টাকা আয় করছেন। হয়তো আপনারও অনলাইন থেকে ইনকাম করার ব্যাপারে কৌতুহল হচ্ছে।
আই নিউজ-এর আজকের এই আর্টিকেলে আমরা অনলাইনে কি কি উপায়ে আয় করতে পারবো সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
অনলাইন ইনকাম করার সেরা ৬টি উপায়
১) ব্লগিং করে আয়
অন্যান্য দেশের পাশাপাশি আমাদের দেশেও বর্তমানে ব্লগিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
একটা সময় ছিলো যখন বাংলায় কন্টেন্ট দেয়া হলে সেই ব্লগকে গুগল মনিটাইজেশনের জন্য এপ্রুভ করতো না। কিন্তু সেই বাধাও এখন নেই।
বর্তমান সময়ে আপনি বাংলাতে লিখেও আপনার ব্লগ থেকে আয় করতে পারবেন।
ব্লগ থেকে আয় করতে হলে আপনার ব্লগে কোয়ালিটি কন্টেন্ট থাকতে হবে। সেই সাথে থাকতে হবে ভিজিটর বা ট্রাফিক।
আপনার সাইটে যদি ভালো পরিমাণ ভিজিটর থাকে কেবল তখনই আপনি ভালো পরিমাণে আয় করতে পারবেন।
কেননা ব্লগের আয় নির্ভর করে ট্রাফিকের উপর।
প্রশ্ন হচ্ছে সাইটে ট্রাফিক আনবেন কিভাবে?
ওয়েল, সাইটে ট্রাফিক আনার মোক্ষম অস্ত্র হচ্ছে এসইও। এসইও এর মাধ্যমে আপনার আর্টিকেলকে সার্চ রেজাল্টে র্যাং ক করানো সম্ভব। যার ফলে আপনি পাবেন হিউজ পরিমাণ ট্রাফিক।
২) ফ্রিল্যান্সিং করে আয়
ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানে না এমন মানুষ হয়তো বর্তমানে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ফ্রিল্যান্সিং করে এখন অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। আপনার চাইলে ফ্রিল্যান্সিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারেন। তবে এখানে আপনাকে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
প্রথমত আপনার আশেপাশে যে/যারা যে সেক্টর নিয়ে কাজ করছে আপনাকেও যে সেই একই সেক্টর নিয়ে কাজ করতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
আপনাকে আগে খুঁজে বের করতে হবে আপনার আগ্রহ সবচেয়ে বেশি আছে কোন সেক্টরে। যেই সেক্টরে থাকবে সেটি নিয়ে ঘাটাঘাটি করুন। অনলাইনে হিউজ পরিমাণ রিসোর্স আছে। সেগুলো থেকে আইডিয়া নিন, জানুন, বুঝুন। ফ্রি কোর্সগুলোও চাইলে করে ফেলতে পারেন।
নিজেকে দক্ষ করে তবেই ফ্রিল্যান্সিং জগতে নামুন। ভাসা ভাসা শিখে নামলে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারবেন। ক্লায়েন্ট স্যাটিসফেকশনেরও একটা ব্যাপার আছে ফ্রিল্যান্সিং জগতে।
ক্লায়েন্টকে আপনার কাজের দক্ষতা দিয়ে খুশি করতে পারলে এমনও হতে পারে ঐ ক্লায়েন্টই আপনাকে তার সব কাজের জন্য হায়ার করতে পারে। কাজেই দক্ষতার কোনো বিকল্প নেই।
বর্তমান সময়ে জনপ্রিয় এবং প্রচুর চাহিদা রয়েছে এমন কয়েকটি সেক্টরের নাম দিচ্ছি -
-
ওয়েব ডিজাইন
-
ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টোমাইজেশন এন্ড ডেভেলপিং
-
এসইও
-
কন্টেন্ট রাইটিং
-
ভিডিও এডিটিং
-
ওয়েব প্রোগ্রামিং
-
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি।
৩) ইউটিউবিং করে আয়
ইউটিউব- একটি ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম।
আগে ইউটিউব স্বতন্ত্র থাকলেও পরবর্তীতে গুগল ইউটিউবকে কিনে নেয়। আমরা প্রতিদিন বেশকিছু সময় ইউটিউবে ব্যয় করে থাকি। সেটা যেকোনো সময়ই হতে পারে। কেউ গান শুনি, কেউবা নাটক কিংবা মুভি দেখে থাকি।
আমরা নাটক, গান কিংবা মুভি যাই দেখি না কেনো এগুলো চলাকালীন সময় প্রায়সময়ই বিজ্ঞাপন চলে আসে। আপনিও বিজ্ঞাপন দেখতে বাধ্য।
তো এই যে বিজ্ঞাপনটা দেখলেন তাতে লাভ কার হলো? এতে কি আয় হবে?
উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ। চ্যানেলের মালিক যিনি উনার ইনকাম হবে। অর্থাৎ সহজ কথায়, ভিডিওতে এড শো করানোর মাধ্যমে আপনিও ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন। তবে চাইলেই কিন্তু আপনি হুট করেই এগুলো করতে পারবেন না।
এজন্য আপনাকে আপনার চ্যানেলটি মনিটাইজেশন করতে হবে। ইউটিউব যখন দেখবে আপনি মনিটাইজেশনের জন্য উপযুক্ত কেবলমাত্র তখনই ইউটিউব আপনার চ্যানেলে এড দেখাবে।
একটি বিষয়ে অবশ্যই আপনাকে অবগত থাকতে হবে, সেটি হচ্ছে ট্রাফিক বা ভিজিটর। ব্লগের মতো এখানেও আপনাকে ভিজিটর আনতে হবে। তবেই আয় বাড়াতে পারবেন।
৪) ড্রপশিপিং করে আয়
অনলাইন থেকে আয় এর আরেকটি জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ড্রপশিপিং। ড্রপশিপিং করেও অনেকেই সফল হয়েছেন, মাসে প্রচুর টাকা আয় করছেন। আপনারা যারা নতুন কিংবা ড্রপশিপিং সম্পর্কে অবগত নন তাদের কাছে বিষয়টি নতুন। একটু খোলাসা করছি।
একদম সহজ কথায় যদি বলি তাহলে ড্রপশিপিং মানে হচ্ছে ব্যবসা করার একটি পদ্ধতি। ব্যবসা করার কথা শুনে ঘাবড়াবার কিছু নেই। এখানে আপনাকে ব্যবসা করার জন্য একটি ওয়েবসাইট আর আপনার মেধার প্রয়োজন।
একটা উদাহরণের সাহায্য বিষয়টি ক্লিয়ার কিরে দেই। ধরুন আপনার একটি ওয়েবসাইট আছে। সেখানে আপনি শার্ট,প্যান্টের ছবি ও দাম দিয়ে রাখলেন।
কাস্টমার যখন অর্ডার করবে তখন আপনি আপনার আশেপাশের দোকান থেকে অথবা নির্ধারিত দোকান থেকে উক্ত পণ্য কিনে কাস্টমারের ঠিকানায় পাঠিয়ে দিবেন।
এই পুরো প্রক্রিয়াটাই হচ্ছে ড্রপশিপিং। একটু লক্ষ্য করে দেখুন আপনাকে কিন্তু কোনো পণ্য স্টক করে রাখতে হচ্ছে না, আপনার কোনো ওয়্যারহাউজের প্রয়োজন হচ্ছে না, বাড়তি জনবলেরও দরকার পড়ছে না।
খরচের মধ্যে শুধু ওয়েবসাইট রিনিউ এর খরচটা আপনি ধরতে পারেন।
কেননা প্রতিটি ওয়েবসাইট নির্দিষ্ট সময় পর পর রিনিউ করতে হয়। রিনিউ ব্যতীত আপনি ওয়েবসাইটে বিজনেস কন্টিনিউ করতে পারবেন না।
তবে যাই বলি না কেনো, আপনি একটু কৌশল অবলম্বন করলে খুব সহজেই ড্রপশিপিং করে অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন। রিসোর্স এর প্রয়োজন হলে অনলাইন তো আছেই।
৫) এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
যারা নেট দুনিয়ায় বিচরণ করে থাকেন তারা এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে নিশ্চই অবগত আছেন। অনলাইন ইনকাম করার যে উপায়গুলো আছে তার মধ্যে একটি অন্যতম উপায় হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং কি?
বর্তমান এই ডিজিটাল দুনিয়ায় খুব কম সময়েই যেকোনো প্রোডাক্টকে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে পৌছিয়ে দেয়া যায়। এফিলিয়েট মার্কেটিং ঠিক এমনই একটি প্রসেস।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে আপনাকে ক্রেতা বিক্রেতার মধ্য মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকা পালন করতে হবে। ধরুন XYZ কোম্পানির প্রোডাক্ট আপনার ওয়েবসাইটে আপনি তুলে ধরলেন। কাস্টমার ঐ প্রোডাক্টটি যখন আপনার দেয়া লিংকে গিয়ে ক্লিক করে ক্রয় করবে তখন XYZ কোম্পানি আপনাকে ঐ প্রোডাক্ট বিক্রয়ের উপর কমিশন দেবে।
এই পুরো প্রসেসটাই হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং। এটি অনেকটা ড্রপশিপিং এর মতই। তবে দুটোর মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে আপনি কিন্তু আপনার ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট ক্রয় করার জন্য লিংক শেয়ার করে থাকেন যেটা ড্রপশিপিংয়ে হয় না।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনেকেই অনলাইন ইনকাম করছেন এবং বর্তমানে ভালো অবস্থানে রয়েছেন। আপনারাও চাইলে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। তবে শুরু করার আগে কোন নিশ নিয়ে কাজ করবেন সে ব্যাপারে ভালো করে স্টাডি করতে হবে।
তাহলে অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে সবকিছু। তাই রিসার্চ মাস্ট।
৬) ফেসবুক থেকে আয়
একটা সময় ছিলো যখন ফেসবুককে শুধু সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বা বিনোদনের একটি মাধ্যম হিসেবে দেখা যেতো। কিন্তু সময় বদলেছে।
বর্তমানে ফেসবুক এমন একটি অবস্থানে নিজেকে নিয়ে গিয়ছে যেখানে তাকে টক্কর দিতে প্রতিদ্বন্দ্বীদেরও বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।
হ্যা বলছি আমাদের জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক থেকে আয়ের কথা। আপনি ফেসবুক থেকে ব্যবসার পাশাপাশি এখন আয়ও করতে পারবেন। তবে আয় করতে হলে আপনাকে একটি ফেসবুক পেজ খুলতে হবে । আর সেটাকে ফেসবুকের নিয়ম মেনে মনিটাইজেশন করাতে হবে।
মনিটাইজেশন পাওয়ার পরে, ফেসবুক আপনার পেজের ভিডিওগুলোতে বিজ্ঞাপন দেখাবে। আর সেখান থেকেই আপনার আয় হবে। তবে একটা জিনিস মনে রাখবেন আপনার ইনকাম কিন্তু ফলোয়ারদের উপর নির্ভর করবে।
আপনার পেজে যদি কম সংখ্যক ফলোয়ার থাকে তাহলে স্বাভাবিকভাবেই কম সংখ্যক লোক সেই ভিডিওগুলা দেখবে। যার ফলে আয়ও হবে কম।
তাহলে কি করা উচিত? আপনাকে পেজের জন্য ফলোয়ার বাড়াতে হবে। পাশাপাশি কোয়ালিটি কন্টেন্ট বানিয়ে আপলোড দিতে হবে। কোয়ালিটি কন্টেন্ট হলে দেখবেন কোনো না কোনো ভিডিও আপনার ভাইরাল হবেই।
তবেই কেল্লাফতে। কাজেই কোয়ালিটি কন্টেন্ট এর বিকল্প নেই।
৭) ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আয়
অনলাইনে আমরা যখন কোনো ছবি খুজি তখন প্রায়শই কপিরাইটেড ছবি দেখতে পাই। আপনি কি জানেন যে এগুলো কেনো কপিরাইট করা হয়? এগুলো কপি করা হয় কারণ একটাই। এই ছবি বিক্রির উদ্দেশ্যে ঐ ওয়েবসাইটগুলোতে আপলোড করা হয়েছে।
আপনি ক্রয় না করা পর্যন্ত ঐছবিগুলোর অরিজিনাল ভার্সন পাবেন না। তাহলে বিষয়টা কি দাঁড়ালো? ছবি তো বিক্রি হচ্ছে। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন ছবি বিক্রির মাধ্যমেও আপনি অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
ছবির বিনিময়ে আপনাকে টাকা প্রদান করবে এরকম অনেক ভালো ভালো প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আপনার কাছে থাকা ভালো ভালো ছবি আপনি তাদের ওয়েবসাইটে বিক্রি করে সহজেই আয় করতে পারবেন।
৮) ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রির মাধ্যমে আয়
আরেকটি সেরা মাধ্যম সম্পর্কে আপনাদের সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি। এটি হচ্ছে ডিজিটাল প্রোডাক্ট । অনেকেই জিজ্ঞেস করতে পারেন যে ডিজিটাল প্রোডাক্ট কি। বলছি ।
ধরুন আপনি একজন রাইটার। আপনার লিখা বেশ কিছু গল্প/কবিতা আছে। এগুলো আপনি পিডিএফ আকারে আপনার কিংবা অনলাইনে অন্যদের কাছে বিক্রি করে দিলেন। যে প্রসেসে আপনি আয় করলেন এটিই হচ্ছে ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রির মাধ্যমে আয়।
অধিকাংশ তরুন-তরুণীই বর্তমানে এই সেক্টরে ঝুঁকছেন। আপনি চাইলে আপনার গানের নোটস, কোডিং বা প্রোগ্রামিং এর স্ক্রিপ্ট, আপনার বই এর পিডিএফ ভার্সন, আপনার এডিট করা পিএসডি ফাইল ইত্যাদি অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন।
শেষ কথা
অনলাইনে আয় করার অনেক মাধ্যম আপনি পেয়ে যাবেন গুগলে। কিন্তু আপনি যদি প্যাসিভ ইনকাম করতে চান তাহলে উপরোক্ত বিষয় আপনার কাজে আসবেই। লং টার্মের আয়ের ক্ষেত্রে এগুলো দারুণ কার্যকর। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আপনার অনলাইন ইনকাম এর ক্ষেত্রে আরো বড় হবে।
তবে সব কথার শেষ কথা আয় করতে হলে পরিশ্রম করতে হবে। আর যেহেতু এটি অনলাইন বেইজড তাই এখানে সর্বোপরি আপনাকে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হবে।
আই নিউজে আরো পড়ুন
এ বিষয়ে জানতে অন্যান্য বিশ্বস্ত নিউজ পোর্টালও পড়তে পারেন
আই নিউজ/এইচকে
তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
- আমেরিকান ডিভি লটারি ২০২৪ বাংলাদেশ
- ফেসবুক মনিটাইজেশন আপডেট ২০২৩
- বাংলাদেশে কম দামে ভালো মোবাইল ফোনের দাম
- অনলাইনে কানাডা ভিসা চেক করার নিয়ম ২০২৩
- মোবাইল নাম্বার দিয়ে লোকেশন বের করার নিয়ম
- অনলাইনে বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম ২০২৩
- পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম ২০২৪
- সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস ডেলিভারি চার্জ
- মৌলভীবাজারের যুবকের কৌশল উদ্ভাবন রেললাইন থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন
- দৈনিক ৫০০ টাকা ইনকাম করার উপায় ২০২৩
সর্বশেষ
জনপ্রিয়