Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৯ ১৪৩২

ইমরান আল মামুন

প্রকাশিত: ১৬:৩৯, ১৩ মার্চ ২০২৩
আপডেট: ১৬:৪৮, ১৩ মার্চ ২০২৩

ড্রোন কি এবং ড্রোন কিভাবে কাজ করে

আই নিউজ পত্রিকায় আপনাদের স্বাগতম। আজকের আর্টিকেলে আপনারা জানতে পারবেন ড্রোন কি এবং কিভাবে কাজ করে। এ সকল বিষয় নিয়েই আজকের আলোচনা। ‌কেননা বর্তমানে ড্রোন এর ব্যবহার প্রায় সকল জায়গায় ছড়িয়ে গেছে। ‌ভবিষ্যতে ব্যবহারের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে। ‌কারণ ড্রোন ব্যবহারে মানুষের জীবনযাত্রা অনেক সহজ হয়ে গেছে। এমনকি কর্ম জীবনের লম্বা সময়কে সংক্ষিপ্ত করে দিয়েছে। 

বিংশ শতাব্দীতে ড্রোন শব্দটি মোটামুটি সবার পরিচিত। কারণ প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এখন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে। ‌প্রযুক্তির এক মহা আবিষ্কার হচ্ছে ড্রোন।‌ তাই আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে যে বিষয়গুলো জানবো:

  • ড্রোন কি
  • ড্রোনের ব্যবহার
  • ড্রোন কিভাবে কাজ করে

ড্রোন কি
ড্রোন হচ্ছে একটি ইংরেজি শব্দ। ‌এর বাংলা অর্থ হচ্ছে পুরুষ মৌমাছি। গেজেটটিও মৌমাছির মত কাজ করে থাকে। অর্থাৎ ড্রোন হচ্ছে একটি উড়ন্ত রোবট। নির্দিষ্ট দূরে থেকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ‌ কিন্তু বর্তমানে কিছু ড্রোন বাজারে এসেছে যেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে উড়তে পারে এবং কমান্ড অনুযায়ী কাজ করতে সক্ষম। বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য ড্রোনগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যদিও পূর্বে শুধুমাত্র সামরিক কাজের জন্য ব্যবহার করা হতো। ‌ভিডিও শুট থেকে শুরু করে খাবার ডেলিভারি পর্যন্ত ড্রোনের মাধ্যমে করা হয়‌।‌

ড্রোন কিভাবে কাজ করে
ড্রোন হচ্ছে একটি ইলেকট্রনিক্স গেজেট। এটি চালনার জন্য ইলেকট্রিক ইন্সট্রুমেন্টের প্রয়োজন হয়। ‌ড্রোন একটি জয়স্টিক এবং জিপিএস এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। অনেকটা গেমের মতো করে। ‌ইউজার ফ্রেন্ডলি ব্যবহার করার জন্য এর মধ্যে বেশ কিছু ইন্টারফেস যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু আরো অন্যান্য গেজেট রয়েছে। ‌যেমন ক্যামেরা, পাখা, ব্যাটারি, রোটর্স ইত্যাদি। ড্রোন চালানোর জন্য প্রথমে ব্যাটারিকে চার্জ দিতে হয়। এরপর জয়স্টিকের সাথে ড্রোন কানেক্ট করে তারপর নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। ‌ এসকল উপাদানের সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নরূপ দেয়া হলো:

কানেক্টিভিটি
দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ওয়ারলেস কানেক্টিভিটির প্রয়োজন হয়। ‌অর্থাৎ তার বিহীন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। ‌জয়স্টিক এবং ড্রোনের সাথে প্রথমেই কানেক্টিভিটি সংযুক্ত করতে হয়। এরপর ড্রোন উড়িয়ে দিয়ে কন্ট্রোল করা লাগে। ‌অনেকে মোবাইল কিংবা কম্পিউটার ডিভাইসের সাথে যুক্ত করে চালনা করে থাকে।‌ ব্যবহারকারীর সুবিধা অনুসারে যেকোন ডিভাইসে যুক্ত করতে পারবে। ‌

রোটর্স
ড্রোনকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি রোটর্স লাগানো থাকে।‌ এই রোটর্স থাকে মোটরের সাথে যুক্ত হয়ে। ‌মূলত দিক পরিবর্তনের জন্য রোটর্সকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় ওয়ারলেস কানেকশনের মাধ্যমে। ‌ মোটরের সাথে ঘড়ির কাটার মত চারটি অথবা তার অধিক পাখা সংযুক্ত থাকে। ‌মূলত এই পাখাগুলোই ড্রোনকে শূন্যে ভাসিয়ে রাখে।

অ্যাক্সলোমিটার
এই ফিচারটির মাধ্যমে ড্রোম তার গতি সম্পর্কিত তথ্য এবং কতটুকু উচ্চতায় অবস্থান করছে তার ধারণা দেয়। একই সঙ্গে ব্যাটারির চার্জ কি পরিমান রয়েছে তার সংকেত প্রদান করে। এমনকি অভ্যন্তরীণ যন্ত্রগুলোসহ নিরাপদে মাটিতে অবতরণ করতে সহায়তা করে। 

ক্যামেরা
ড্রোনে কোনো পাইলট থাকে না। একজন ব্যবহারকারী ওয়ারলেস কানেকশনের মাধ্যমে চালনা করে। ড্রোনে থাকা যুক্ত ক্যামেরা দিয়ে ব্যবহারকারী চারদিক অবস্থা দেখে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। 

ড্রোনের ব্যবহার
সর্বপ্রথম ড্রোন ব্যবহার করা হয় সামরিক কাজে। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে এখন কর্মক্ষেত্র থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত কাজেও ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। ড্রোনের ব্যবহার সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

বোমা সনাক্তকরণ: প্রথম থেকেই সামরিক বিভিন্ন কাজের জন্য ড্রোন ব্যবহার হয়ে আসছে। ড্রোনের সাহায্যে শতভাগ নিরাপদে শনাক্তকরণ করা সম্ভব হয়। ‌একজন মানুষের যেখানে প্রবেশ করতে অক্ষম। সেখানে ড্রোন প্রবেশ করে বোমা বের করে আনতে সক্ষম হয়।

নজরদারি: সামরিক কাজে এবং গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে নজরদারি করতে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। ‌এতে করে সামরিক কায়িক শ্রম কমে যাচ্ছে। ‌একই সঙ্গে মৃত্যুর ঝুঁকির পরিমাণ কমে গেছে।‌ কারণ বিপদজনক এলাকায় শারীরিকভাবে নজরদারি করতে গেলে প্রাণ সংশয়ের সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু ড্রোনের মাধ্যমে দূরবর্তী স্থান থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পর্যবেক্ষণ করা যায়। ‌

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহার: আমরা মুভিতে মাঝেমধ্যে দেখি অনেক উপর থেকে ভিডিও শুট করা হয়েছে। হেলিকপ্টার এর মাধ্যমে করা এগুলো করা হতো। কিন্তু এখন ড্রোনের মাধ্যমেই ভিডিও করা সম্ভব হচ্ছে। বেশিরভাগ লাইভ খেলাগুলোতেও এখন ড্রোন ব্যবহার করা হয়। ড্রোন ব্যবহার করার কারণে ফিল্ম তৈরিতে অনেক ব্যয় কমে গেছে।

ডেলিভারির কাজে: ড্রোন এখন হোম ডেলিভারির কাজেও ব্যবহার হচ্ছে। বিশেষ করে খাবার ডেলিভারিতে এটি বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া ই-কমার্স বিজনেসগুলোতেও প্রোডাক্ট শিপিং এর কাজ করানো হয় ড্রোনের মাধ্যমে। এতে করে দ্রুত শিপিং করা যায় এবং খরচও কম হয়। 

উদ্ধার কাজ এবং স্বাস্থ্যসেবা: অনেক সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা কৃত্রিম দুর্যোগের কারণে মানুষজন দুর্গম স্থানে আটকে যায়। সেখানে মানুষের তুলনায় ড্রোন দ্রুত পৌঁছাতে সক্ষম হয়। সেই সকল এলাকায় ড্রোনের মাধ্যমে খাবার এবং ঔষধ পাঠানো সম্ভব হয়। ফলে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার অনেকটা কমে গেছে। ‌

এগুলো ব্যতীত অনুসারের ড্রোন আরও বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে কায়িক পরিশ্রম কমে যাওয়ার কারনে, বেকারত্বের হার কিছুটা বৃদ্ধি পাবে। তবে যাই হোক না কেন সব সময় ড্রোনকে ভালো কাজে ব্যবহার করা উচিত।

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়